নাজমুল হাসান সাগর, ঢাকা
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
দোতলায় উঠে টোকা দিতেই দরজা খুললেন এক ভদ্রমহিলা। অপরিচিত মানুষ দেখে তাঁর মুখ কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। ‘বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই’ বলে দরজা বন্ধ করতে চাইলেন। তখনই ভেতর থেকে এলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা। এতে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জিত হলেন ভদ্রমহিলা। যিনি এলেন, তিনি নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া। তাঁর কাছেই যাওয়া। শীর্ষ এক সন্ত্রাসী সম্পর্কে জানতে।
উদ্দেশ্য জেনে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন নুরুল ইসলাম। পরে ঘরে গিয়ে বসতে বলে শার্ট পরতে গেলেন। ঘরে যেতে যেতে শোনা গেল ভদ্রমহিলার কণ্ঠ, ‘আর কত দিন যে বইয়া বেরাইতে হইব। এত বছর পরেও পিছ ছাড়ল না।’
যাকে নিয়ে এই কথা বলা, তিনি শহীদুল ইসলাম শহীদ, পুলিশের খাতায় যাঁর নাম ডাকাত শহীদ। রাজধানীর ভয়ংকর এক সন্ত্রাসী। মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে যিনি পুরান ঢাকায় গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। বাসে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, খুন–সব অপরাধের সঙ্গেই জড়িয়ে পড়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন একটি অপরাধী দল। শীর্ষসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান জোরদার হলে একসময় পরিবারসহ পালিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখান থেকেই ফোনে নিয়ন্ত্রণ করতেন অপরাধজগৎ। ২০১২ সালে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন ২৫টি হত্যা মামলার আসামি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী।
ওই ঘটনার ১০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও শহীদের কর্মকাণ্ডের কারণে যন্ত্রণা পোহাতে হয় ভাই ও নিকটাত্মীয়দের। ওই ভদ্রমহিলা তাঁর ভাবি। নুরুল ইসলাম বড় ভাই। তিনি বললেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁর স্ত্রীর বিয়ের স্বর্ণালংকার চুরি করে প্রথম বাড়িছাড়া হয়েছিল শহীদ। এর পর থেকেই একমাত্র ছোট ভাইয়ের কারণে যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। এই শেষ বয়সে ভাইয়ের কারণে আর কোনো যন্ত্রণা কিংবা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে চান না।
শহীদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নে। বাবা আবদুর রহমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানার কর্মচারী। জানা যায়, গ্রাম থেকে পালিয়ে চলে এসেছিলেন ঢাকায়।
১৪-১৫ বছর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন লঞ্চ ও ট্রলারে ডাকাতিতে। অপরাধীর তালিকায় নাম ওঠে ১৯৮৮ সালে। একপর্যায়ে পরিচিতি হয় ডাকাত শহীদ নামে। ১৯৯০ সালে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের বাস শ্রমিক কমিটির যুগ্ম--সম্পাদক হন। একটি ডাকাতি মামলায় তিন মাস মুন্সিগঞ্জ কারাগারে ছিলেন। বের হয়ে ১৯৯১ সালে কুয়েতে চলে যান। ১৯৯৪ সালে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। জুরাইনে আবুল গ্রুপের সঙ্গে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকতের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওয়ারীতে টেন্ডারবাজি শুরু করেন। জুরাইনে প্রতিষ্ঠা করেন একক আধিপত্য। ওই সময় আলিম কমিশনারসহ দুজন, তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে তাঁর নাম।
পুরান ঢাকায় এই নামেই তাঁকে চেনে মানুষ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেক আগেই মারা গেছেন আবদুর রহমান। শহীদ নিহত হওয়ার আট মাস পর মারা যান মা। তাঁদের পৈতৃক বাড়ি এখন শূন্য। বড় ভাই শ্রীনগর উপজেলারই অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার আগে পর্যন্ত ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন কলকাতার এক ভাড়া বাড়িতে। কলকাতায় পালানোর আগে বড় মেয়েকে ঢাকাতেই বিয়ে দিয়েছিলেন। দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চলছিল কলকাতায়। একমাত্র ছেলে ১৭ বছর বয়সে ২০০৮ সালে কলকাতার বাসায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। শহীদের মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে পড়েন তাঁর স্ত্রী। একপর্যায়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রথমে বড় মেয়ের স্বামীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। এখন ঢাকার কমলাপুরে শহীদের নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন।
তবে শহীদের স্ত্রী ও দুই মেয়ের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই নুরুল ইসলামের বা তাঁর পরিবারের ৷ নুরুল ইসলাম জানান, শহীদ মারা যাওয়ার পরদিন সর্বশেষ তাঁর (শহীদ) স্ত্রী সালেহার সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে সময় সালেহা তাঁকে বলেছিলেন, শহীদের ব্যাপারে র্যাবকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন জুরাইনের সন্ত্রাসী রিপন। পরিবারসহ নাগরিকত্ব নিয়ে সেই সময় মালয়েশিয়ায় পলাতক ছিলেন এই সন্ত্রাসী। ভারতে পলাতক অবস্থায় রিপনের দাওয়াতে স্ত্রী-সন্তানসহ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপালে ঘুরতে গিয়েছিলেন শহীদ। কলকাতায় থাকলেও দেশ থেকে বিপুল টাকা যেত শহীদের কাছে। ওই টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিলেন রিপন। একবার তিনি নেপালে শহীদকে মেরে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিলেন।
নুরুলের ধারণা, শুরু থেকেই শহীদকে তাঁর স্ত্রী ভাইয়ের পরিবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতেন। এর পেছনে সম্পত্তি একটা বড় কারণ। তাই বেঁচে থাকতে শহীদ মায়ের খোঁজখবর নিলেও ভাইয়ের সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল না। নুরুলের চার ছেলে, এক মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসী। বাকি দুজন দেশেই থাকেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।
এলাকার কয়েকজন জানান, শহীদের এক ভাতিজা তাঁর নামের সঙ্গে স্টার জুড়ে দিয়ে চাচার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন। এখনো তিনি চেষ্টা করলেও মানুষ আর ভয় পায় না৷
নুরুল বললেন, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর পর শহীদের লাশ পড়ে ছিল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে। অনেকেই দল বেঁধে লাশ দেখতে গিয়েছিল। তবে লাশ নিতে কেউ যায়নি। পরে র্যাব তাঁকে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করে। রাতে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি বললেন, ‘শহীদের লাশ কবরে নামানোর পর মাথা তুইলা দেখি কবরস্থানের তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ নাই।’
ভাইকে নিয়ে এতক্ষণ বিস্তর অভিযোগ করলেও এবার ভ্রাতৃত্বসুলভ আবেগ ফুটে ওঠে তার চোখে-মুখে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতে শুরু করলেন, ‘ভাইয়ের মতো শত্রু নাই, ভাইয়ের মতো মিত্র নাই। সবকিছুর উপরে হে আমার ভাই।’ কথা শেষ, বিদায় দেওয়ার জন্য দরজা পর্যন্ত এলেন নুরুল ইসলাম। দরজার হুড়কো এঁটে দেওয়ার শব্দ এলো কানে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীর বিমানবন্দরে শরীরে বিশেষ কৌশলে গাঁজা নিয়ে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিনজন কিশোর। তাঁরা বর্তমানে কিশোর সংশোধনাগারের রয়েছে।
৮ দিন আগেপরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সিঙ্গাপুরে যান দুই ভাই উজ্জ্বল মিয়া ও মো. ঝন্টু। সেখানে থাকা অবস্থায় মুঠোফোনে ভাবির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান ছোট ভাই মো. ঝন্টু। পরে দেশে ফিরে ভাবিকে বিয়ে করার জন্য আপন বড় ভাই উজ্জ্বল মিয়াকে খুন করে ছোট ভাই।
৮ দিন আগেরাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গত দুই মাসে দুই অটোরিকশা চালককে হত্যা করে রিকশা ছিনিয়ে নেওয়া ঘটনা ঘটেছে। পৃথক এই দুই ঘটনায় তদন্তে নেমে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
৮ দিন আগেপাবনার পদ্মা নদী থেকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১২ বছরের এক কিশোর এবং ২২ বছরের এক তরুণীর অর্ধগলিত দুইটি মরদেহ উদ্ধার করেছে নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি। উদ্ধারের দুইদিনেও কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাজিরগঞ্জ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান।
১২ দিন আগে