চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ (সিডিডব্লিউএসপি) প্রকল্পের বিপরীতে চতুর্থ বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক ইস্যুর নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান হয়। 

নিলামে ১ হাজার কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ইজারা সুকুক ইস্যুর বিপরীতে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্রাঞ্চ-উইন্ডোজসহ ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রভিডেন্ট ফান্ড মোট ৪ হাজার ৯৬৪ দশমিক ৩৫ কোটি টাকার বিড দাখিল করেছে। নিলামে ঘোষিত পরিমাণ অপেক্ষা দাখিলকৃত বিডের পরিমাণ পাঁচ গুণ বেশি হওয়ায় নির্ধারিত আনুপাতিক হারে বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে সুকুক বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগকারীর সুদযুক্ত টি-বিল, বন্ড, বিভিন্ন সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে অনাগ্রহ এবং শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রচলিত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ না থাকায় তাদের অধিকাংশ তারল্য অব্যবহৃত থেকে যেত। এই পরিস্থিতিতে সরকার ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ‘বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক গাইডলাইন’ জারি করে। ইতিমধ্যে গত কয়েক বছরে সরকার তিনটি সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে ১৮ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। সুকুক ইস্যুর মাধ্যমে সরকার শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারছে। পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের বিকল্প ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। 

ক্রয়কৃত সুকুক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্ট্যাচুটরি লিকুইডিটি রিজার্ভ (এসএলআর) হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে। এ ছাড়া, শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক এবং কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্রাঞ্চ ও উইন্ডোজ তাদের ধারণকৃত সুকুক জামানত রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি (আইবিএলএফ) গ্রহণ করছে। প্রাইমারি অকশনে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্রাঞ্চ-উইন্ডোজসহ ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সুকুক বরাদ্দ করা হলেও সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে এই সুকুক কিনতে পারবেন। 

সরকারের এই সুকুক ইস্যু কার্যক্রম চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কগুলো প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে এই জনপদ তথা দেশের জীবনযাত্রার সার্বিক মান উন্নয়নে (যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য ইত্যাদি সুবিধা গ্রহণ সহজীকরণ) ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।