নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের দুটি কিডনিই খেয়ে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আজ শনিবার রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে ‘পলিসি ডায়ালগ অন ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সৈয়দ ফরহাত আনোয়ারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের দুটো কিডনি। একটি ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর, আরেকটি এনার্জি সেক্টর। দুটোই খেয়ে ফেলেছে বিগত সরকার। যারা এনার্জি সেক্টর খেয়েছে, তারাই আবার ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর খেয়েছে।’
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, মাসোহারা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে লোক রাখা হয়েছিল। তারা টাকা ছাপিয়েছে, ভুয়া রিজার্ভ দেখিয়েছে। ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এমন ব্যক্তিকে ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়ে আছি। রাষ্ট্রের মেরামত যদি না হয়, দুই পয়সার সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা না গেলে, সংস্কারের পথে এগোনো সম্ভব নয়।’
দেবপ্রিয় বলেন, বিগত সরকারের আমলে প্রবৃদ্ধির তথ্য ও উপাত্তে মারাত্মক সমস্যা ছিল। তথ্যে রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে, যেখানে ট্যাক্স জিডিপি বাড়েনি। ট্যাক্স নাই, বিনিয়োগ নাই আর দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতে গিয়ে সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য শিক্ষায় গুরুতর অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিগত আওয়ামী সরকার ব্যাংকগুলোকে নিঃশেষ করে দিয়ে গেছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অনেক প্রকল্প করা হয়েছে, সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি টেস্ট) করা হয়নি।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্থিক খাতে এত বড় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, সেটা বাইরে থেকে কল্পনাও করা যাবে না। এত অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি পৃথিবীর আর কোথাও হয়নি।
সাধারণ মানুষকে আশাহত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক খাতে যেভাবে লুটপাট হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে কাজ করা হচ্ছে। ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। আপাতত আমরা স্বল্পমেয়াদি কিছু সংস্কারে জোর দিয়েছি। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার করতে হবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারকে।’
এ ছাড়া অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ঋণ দিতে বেশ আগ্রহী বলে জানান তিনি।
আদানির বিদ্যুৎ ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আদানিকে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কর নেওয়া হয়নি। এটি কোনো চুক্তি হলো? আপনারা শুনে আরও আশ্চর্য হবেন, সারের ১৩৫ মিলিয়ন ডলার বিগত সরকার পরিশোধ করেনি। আমরা এসে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছি, রিজার্ভে হাত না দিয়ে।’
অর্থ পাচার বন্ধের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে জানিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা একটা রাস্তা তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, পাবলিক সাইড হোক, প্রাইভেট সাইড হোক; টাকা-পয়সা আর পাচার করতে পারবে না। আমরা যে সংস্কার করছি, সেটার মাধ্যমে আমরা ফুটপ্রিন্ট রেখে যাব। অ্যাটলিস্ট আমাদের পদাঙ্ক যেন পরবর্তী সরকার অনুসরণ করে যেতে পারে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নরের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান রাত ৯টা পর্যন্ত একটা অনুমোদন দেওয়ার জন্য বসে থাকে, সেই প্রতিষ্ঠান কেমন চলতে পারে ভাবুন। এখন রিজার্ভ থেকে এক টাকাও বিক্রি না করে বাংলাদেশ ব্যাংক আগের বকেয়া পরিশোধ করছে। অথচ আগের গভর্নর ৪২ বিলিয়ন থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে দিলেন। এভাবে রিজার্ভ নিঃশেষ করে এখন মহা আনন্দে কোথায় আছেন, জানি না।’
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রায়ই বলি আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতা না। এই দায়িত্বের প্রথম দেশটা যেভাবে চলছিল, সেটা ঠিক করা। এটা মেরামত করতে সময় লাগবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা অনেকেই বলেছেন। আমি তিন সরকারের সময়ে গভর্নরের দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ছেড়েছি। তখন সবাই ফেরেশতা ছিল না। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। এখন তা আড়াই লাখ কোটি টাকা। এই খেলাপি কেন, কাদের জন্য বেড়েছে সেটা সবার জানা।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কৌশলটা ভুল ছিল। শুধু প্রবৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে রিজার্ভ বাড়ছে, রপ্তানি বাড়ছে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি কম রয়েছে। তবে এসব চুইয়ে পড়ছে কি না তা দেখা হয়নি। এটা দেখার দায়িত্ব ছিল নীতি প্রণেতাদের। প্রবৃদ্ধিটা সবাইকে নিয়ে হয়েছে কি না দেখা হয়নি। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা অস্থির হয়ে যাচ্ছি। আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটি আছে। বগুড়া থেকে কারওয়ান বাজার আসতে ১৭ জায়গায় টাকা দিতে হয়। কিছু জায়গায় মধ্যস্বত্বভোগী দরকার আছে। তবে কেউ কেউ আছে, কিছু না করেই কেবল ফুটপাথে দাঁড়িয়ে চাঁদাবাজি করছে। যে কারণে আমি চেয়েছিলাম কিছু ডিলার পরিবর্তন করতে। তবে পরিবর্তন করলে আরেক গ্রুপ এসে না কি চাঁদাবাজি শুরু করবে। এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?’
সালেহউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক খাত, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, শেয়ারবাজারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। তবে শেয়ারের দর কেন কমল এ নিয়ে অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন। তাঁরা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চান, আমাকে নিয়েও বলছেন। তবে সংস্কার করতে গেলে কিছু ব্যথা সইতে হবে।’
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যারা কারসাজি করছে, তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে আছে। আর তাদের থেকে আমাদের সার্ভিল্যান্স, ইন্টেলিজেন্স অনেক পিছিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক ক্ষেত্রে এসব দুষ্টু লোকদের জরিমানা করছি, কিন্তু প্রশ্ন হলো এই কাজগুলো যে সময় করা দরকার, সে সময় করার জন্য আমরা প্রস্তুত কি না? পুঁজিবাজারের এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের প্রধান কাজ হবে—বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা। আমরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এই আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই।’
অর্থনৈতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ডিজিটালাইজড করতে হবে উল্লেখ করে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সরাসরি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থনৈতিক সেক্টরে লুটপাট হয়েছে। যেখানে ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদরা জড়িত ছিলেন।
আয়োজকেরা জানান, দেশের আর্থিক খাতের বর্তমান নীতি ও কার্যপ্রণালির দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা, আর্থিক খাতের উন্নয়নের জন্য সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া এবং সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান—এই তিনটি লক্ষ্যে এই ডায়ালগের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশের দুটি কিডনিই খেয়ে ফেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
আজ শনিবার রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে ‘পলিসি ডায়ালগ অন ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সৈয়দ ফরহাত আনোয়ারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের দুটো কিডনি। একটি ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর, আরেকটি এনার্জি সেক্টর। দুটোই খেয়ে ফেলেছে বিগত সরকার। যারা এনার্জি সেক্টর খেয়েছে, তারাই আবার ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর খেয়েছে।’
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, মাসোহারা দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরে লোক রাখা হয়েছিল। তারা টাকা ছাপিয়েছে, ভুয়া রিজার্ভ দেখিয়েছে। ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও এমন ব্যক্তিকে ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়ে আছি। রাষ্ট্রের মেরামত যদি না হয়, দুই পয়সার সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা না গেলে, সংস্কারের পথে এগোনো সম্ভব নয়।’
দেবপ্রিয় বলেন, বিগত সরকারের আমলে প্রবৃদ্ধির তথ্য ও উপাত্তে মারাত্মক সমস্যা ছিল। তথ্যে রাজনীতিকীকরণ করা হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে, যেখানে ট্যাক্স জিডিপি বাড়েনি। ট্যাক্স নাই, বিনিয়োগ নাই আর দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতে গিয়ে সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য শিক্ষায় গুরুতর অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিগত আওয়ামী সরকার ব্যাংকগুলোকে নিঃশেষ করে দিয়ে গেছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অনেক প্রকল্প করা হয়েছে, সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি টেস্ট) করা হয়নি।’
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্থিক খাতে এত বড় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, সেটা বাইরে থেকে কল্পনাও করা যাবে না। এত অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি পৃথিবীর আর কোথাও হয়নি।
সাধারণ মানুষকে আশাহত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক খাতে যেভাবে লুটপাট হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে কাজ করা হচ্ছে। ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। আপাতত আমরা স্বল্পমেয়াদি কিছু সংস্কারে জোর দিয়েছি। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার করতে হবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারকে।’
এ ছাড়া অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ঋণ দিতে বেশ আগ্রহী বলে জানান তিনি।
আদানির বিদ্যুৎ ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আদানিকে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কর নেওয়া হয়নি। এটি কোনো চুক্তি হলো? আপনারা শুনে আরও আশ্চর্য হবেন, সারের ১৩৫ মিলিয়ন ডলার বিগত সরকার পরিশোধ করেনি। আমরা এসে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করেছি, রিজার্ভে হাত না দিয়ে।’
অর্থ পাচার বন্ধের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে জানিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা একটা রাস্তা তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, পাবলিক সাইড হোক, প্রাইভেট সাইড হোক; টাকা-পয়সা আর পাচার করতে পারবে না। আমরা যে সংস্কার করছি, সেটার মাধ্যমে আমরা ফুটপ্রিন্ট রেখে যাব। অ্যাটলিস্ট আমাদের পদাঙ্ক যেন পরবর্তী সরকার অনুসরণ করে যেতে পারে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নরের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান রাত ৯টা পর্যন্ত একটা অনুমোদন দেওয়ার জন্য বসে থাকে, সেই প্রতিষ্ঠান কেমন চলতে পারে ভাবুন। এখন রিজার্ভ থেকে এক টাকাও বিক্রি না করে বাংলাদেশ ব্যাংক আগের বকেয়া পরিশোধ করছে। অথচ আগের গভর্নর ৪২ বিলিয়ন থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে দিলেন। এভাবে রিজার্ভ নিঃশেষ করে এখন মহা আনন্দে কোথায় আছেন, জানি না।’
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রায়ই বলি আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতা না। এই দায়িত্বের প্রথম দেশটা যেভাবে চলছিল, সেটা ঠিক করা। এটা মেরামত করতে সময় লাগবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা অনেকেই বলেছেন। আমি তিন সরকারের সময়ে গভর্নরের দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ছেড়েছি। তখন সবাই ফেরেশতা ছিল না। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। এখন তা আড়াই লাখ কোটি টাকা। এই খেলাপি কেন, কাদের জন্য বেড়েছে সেটা সবার জানা।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কৌশলটা ভুল ছিল। শুধু প্রবৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে রিজার্ভ বাড়ছে, রপ্তানি বাড়ছে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি কম রয়েছে। তবে এসব চুইয়ে পড়ছে কি না তা দেখা হয়নি। এটা দেখার দায়িত্ব ছিল নীতি প্রণেতাদের। প্রবৃদ্ধিটা সবাইকে নিয়ে হয়েছে কি না দেখা হয়নি। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা অস্থির হয়ে যাচ্ছি। আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটি আছে। বগুড়া থেকে কারওয়ান বাজার আসতে ১৭ জায়গায় টাকা দিতে হয়। কিছু জায়গায় মধ্যস্বত্বভোগী দরকার আছে। তবে কেউ কেউ আছে, কিছু না করেই কেবল ফুটপাথে দাঁড়িয়ে চাঁদাবাজি করছে। যে কারণে আমি চেয়েছিলাম কিছু ডিলার পরিবর্তন করতে। তবে পরিবর্তন করলে আরেক গ্রুপ এসে না কি চাঁদাবাজি শুরু করবে। এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?’
সালেহউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক খাত, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, শেয়ারবাজারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। তবে শেয়ারের দর কেন কমল এ নিয়ে অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন। তাঁরা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চান, আমাকে নিয়েও বলছেন। তবে সংস্কার করতে গেলে কিছু ব্যথা সইতে হবে।’
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যারা কারসাজি করছে, তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে আছে। আর তাদের থেকে আমাদের সার্ভিল্যান্স, ইন্টেলিজেন্স অনেক পিছিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক ক্ষেত্রে এসব দুষ্টু লোকদের জরিমানা করছি, কিন্তু প্রশ্ন হলো এই কাজগুলো যে সময় করা দরকার, সে সময় করার জন্য আমরা প্রস্তুত কি না? পুঁজিবাজারের এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের প্রধান কাজ হবে—বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনা। আমরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এই আস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই।’
অর্থনৈতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ডিজিটালাইজড করতে হবে উল্লেখ করে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সরাসরি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থনৈতিক সেক্টরে লুটপাট হয়েছে। যেখানে ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদরা জড়িত ছিলেন।
আয়োজকেরা জানান, দেশের আর্থিক খাতের বর্তমান নীতি ও কার্যপ্রণালির দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা, আর্থিক খাতের উন্নয়নের জন্য সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া এবং সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান—এই তিনটি লক্ষ্যে এই ডায়ালগের আয়োজন করা হয়।
অক্টোবরে ভারতের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ, আর টেক্সটাইল রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরুর পর ভারতে পোশাক রপ্তানির অর্ডার বেড়েছে বলে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
৬ ঘণ্টা আগেনেপাল প্রথমবারের মতো ভারতের বিদ্যুৎ সংযোগ অবকাঠামোর মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে। এটিকে উপ–আঞ্চলিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই ঘটনা তৃতীয় কোনো দেশের সঙ্গে নেপালের বিদ্যুৎ বাণিজ্যের প্রথম দৃষ্টান্ত।
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নজিরবিহীন বন্যার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি হার দুই অঙ্কের ঘর ছাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোসহ কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি “হরলিক্স ব্রেইন গেমস অলিম্পিয়াড”-এর আঞ্চলিক রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জয়ী হয়েছেন ঢাকা অঞ্চলের শীর্ষ ২২ প্রতিভাবান ক্ষুদে শিক্ষার্থী। এ জয়ী শিক্ষার্থীরা ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় রাউন্ডে অংশগ্রহণ করতে যাবে
১ দিন আগে