বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের টাওয়ার অবকাঠামো শিল্পের নেতৃত্ব দেওয়া প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশ সম্প্রতি এই দেশে কোম্পানির ১০ বছরের মাইলফলক উদ্‌যাপন করেছে। এক দশকে কোম্পানিটি বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে, বিশেষ করে সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলগুলোতে টেলিযোগাযোগ সংযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। 

 ১০ বছরের এই সংক্ষিপ্ত যাত্রায়-মালয়েশিয়াভিত্তিক ইডটকো গ্রুপের অঙ্গ/সহযোগী প্রতিষ্ঠান, ইডটকো বাংলাদেশ এ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে কার্যকরী ও তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। কোম্পানিটি প্রাথমিকভাবে ২১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এবং মোট ৬১ বিলিয়ন ডলারের ক্যাপেক্স ইনভেস্টমেন্ট বিনিয়োগ করেছে বিগত ১০ বছরে। বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর এই ১০ বছর পর প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল এবং অভিনব নেটওয়ার্ক অবকাঠামো সেবা দেওয়ার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থান বজায় রেখে চলেছে এবং বর্তমানে দেশজুড়ে ৩৫টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন ও মোট ১৮ হাজার টাওয়ারের (মালিকানাধীন ও পরিচালিত) সমন্বয়ে কোটি কোটি মানুষের কাছে নির্বিঘ্ন টেলিযোগাযোগ সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। 

ঢাকায় সেন্টার অব ডিজাইন এক্সিলেন্সের (সিওডিই) প্রতিষ্ঠা টেকসই ডিজাইন সল্যুশনে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিশ্রুতিরই স্বাক্ষর। ইডটকোর দূরদর্শী প্রচেষ্টার অন্যতম এক নিদর্শন হল, হাতিয়া দ্বীপে ৭৫ মিটার উঁচু বাংলাদেশের প্রথম হাইব্রিড সোলার-উইন্ড টাওয়ার উদ্বোধন এবং উদ্ভাবন ও টেকসইতায় গুরুত্ব দিয়ে টেলিযোগাযোগ টাওয়ার নির্মাণে ব্যাম্বু বা বাঁশের ব্যবহার। অধিকন্তু, এ দেশে স্প্যান প্রেস্ট্রেসড কংক্রিট (এসপিসি) টাওয়ারের প্রবর্তন ধারাবাহিক ও টেকসই উন্নয়নে কোম্পানির অঙ্গীকারের-ই প্রতিফলন। 

প্রযুক্তিগত এসব উদ্ভাবনের পাশাপাশি টাওয়ার শেয়ারিংয়ের মতো অভিনব উদ্যোগ ইডটকো বাংলাদেশের ইতিবাচক প্রভাবকে আরও বেশি অনুরণিত করে। এতে প্রতিষ্ঠানটির কার্বন ফুটপ্রিন্ট প্রশমন ও বিভিন্ন টেকসই উৎস থেকে প্রাপ্ত বাড়তি বিদ্যুৎ দিয়ে ৮ হাজারের বেশি পরিবারকে সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে। 
 
আবার সাতক্ষীরা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির মাধ্যমে ইডটকো স্থানীয় কমিউনিটির সেবায় নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনের অঙ্গীকার পূরণে সচেষ্ট থেকেছে। ‘গ্লোবাল বেস্ট এমপ্লয়ার অ্যাওয়ার্ডস ২০২২’ এর সম্মাননা প্রাপ্তি এবং মর্যাদাপূর্ণ ‘আইএসও ৯০০১: ২০১৫’ সনদ অর্জন মানসম্পন্ন সেবা প্রদানে কোম্পানির আন্তরিক প্রচেষ্টাকেই প্রতিফলিত করে। ১৮ হাজারের বেশি টাওয়ারের আওতায়, ২৫ হাজার টেনেন্সির এই কার্যক্রম স্মার্ট ও আরও সংযুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইডটকো বাংলাদেশের নিরলস প্রচেষ্টা ও প্রতিশ্রুতি-ই নির্দেশ করছে। 

এক দশক পূর্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারসহ বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে দায়িত্বরত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার সিক হাজনাহ এমডি হাশিম, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, ইডটকো বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং ইডটকো গ্রুপের জিসিইও আদলান তাজুদিন, ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল আইজ্যাক। তাঁদের এই সহৃদয় উপস্থিতিই বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতের ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত চাহিদা মেটাতে ইডটকোর তাৎপর্যপূর্ণ অবদান নির্দেশ করে। 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ইডটকো বাংলাদেশের অসাধারণ ১০ বছরের যাত্রায় আমি তাঁদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিতে উদ্ভাবনের পাশাপাশি জাতিকে সংযুক্ত করার অনন্য মাইলফলক অর্জনে তারা অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, স্মার্ট বাংলাদেশের মেরুদণ্ড হতে যাচ্ছে কানেকটিভিটি বা সংযুক্তি। ২০২৪ সালের মধ্যে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে দেশে ৫জি বাস্তবায়ন করা। কেননা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির জন্য এটিই হবে একটি প্রধান অনুঘটক। ইডটকো বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনের অনেক আগেই সবার কাছে ডিজিটাল সংযোগের সমাধান প্রদান করা আমাদের লক্ষ্য। এ ছাড়া সব অবস্থাতে টাওয়ার অবকাঠামো পরিচালনা করার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে যেসব প্রতিভাবান বাংলাদেশি ইডটকোতে কর্মরত আছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’