অনলাইন ডেস্ক
কয়েক বছর ধরে গোপনে বিটকয়েন মাইনিং প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে হিমালয়ের কোলঘেঁষে থাকা ভুটান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ঠিক কতটা বিনিয়োগ করেছে, তা নিয়ে ধোয়াঁশা থাকলেও প্রকল্প নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আগাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন চললেও সম্প্রতি তা প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ভুটানিজকে ভুটান সরকারের এক প্রতিনিধি বলেছেন, কয়েক বছর আগে বিটকয়েনের দাম যখন ৫ হাজার ডলার ছিল, তখন সংগ্রহ শুরু করেছিল সরকার। ঠিক কবে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। ওই সূত্রের তথ্য ঠিক হলে ২০১৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়, কারণ ওই বছর বিটকয়েনের এই দাম ছিল।
বিটকয়েন মাইনিং নতুন বিটকয়েন সৃষ্টির প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রাটির বিনিময়কে যাচাই করে এমন মারাত্মক জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা হয়। এই ধাঁধার যিনি সমাধান করেন, তাঁকে মাইনার বলা হয়। মাইনারদের মধ্যে যিনি সবার আগে সমাধান করবেন, তাঁকে পুরস্কার হিসেবে বিটকয়েন ও ফি দেওয়া হবে।
বিটকয়েন মাইনিংয়ের এই প্রকল্পে সাবেক চীনা কোটিপতি উ জিহান প্রতিষ্ঠিত সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিশ্বের বৃহত্তম মাইনিং কোম্পানি বিটডিয়ারের সঙ্গেও কাজ করছে ভুটান। এ বছর এপ্রিলের এই কোম্পানি ১১০ কোটি ডলার জমা দিয়ে নিউইয়র্কভিত্তিক স্টক মার্কেট নাসডাকের তালিকাভুক্ত হয়।
গত ১৯ এপ্রিল বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, তারা ভুটানে বিটকয়েন মাইনিং ডেটা সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা বাস্তবায়ন করতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। চলতি অর্থবছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ডেটা সেন্টারটির নির্মাণ শুরু হবে এবং শেষ হবে ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটির মালিক কে হবে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে, বিটডিয়ার ও ভুটান সরকার কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ভুটানের সরকারি তথ্য থেকেও বিটকয়েন মাইনিং কার্যক্রমের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। স্থলবেষ্টিত এ দেশের বাণিজ্যে সাধারণত প্রভাব ফেলে পেট্রোল, ইস্পাত এবং চালের বাজার। কিন্তু শুল্ক বিভাগের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে কোটি কোটি ডলার খরচ করে দেশটি সবচেয়ে বেশি আমদানি করেছে কম্পিউটার চিপ। এর মধ্যে ২০২২ সালে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের কম্পিউটার চিপ আমদানি করা হয়, যা দেশটির বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ। এর আগের দুই বছরে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ১১ লাখ ডলার।
বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এমন আকাশছোঁয়া দামে শুধু ২০২১ সালে যে পরিমাণ কম্পিউটার চিপ আমদানি করেছে দেশটি, তাতে কয়েকটি ফুটবল মাঠের সমান ডেটাসেন্টার নির্মাণ করা সম্ভব। কম্পিউটার চিপের এমন আকাশচুম্বী অমদানির কারণে দেশটিতে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয় এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতেও টান পড়ে। এসব ঘটনা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল, দেশটি গোপনে কোনো বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
বেশ কয়েক বছর আগে ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও তৈরি করতে কোটি কোটি ডলার গোপনে বিনিয়োগ করেছিল ড্রাক হোল্ডিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট নামে ভুটানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ব্লকফাই এবং সেলসিয়াসের অসাবধানতার কারণে বিষয়টি তখন জানাজানি হয়ে যায়। তবে ‘গোপনীয়তার’ কথা বলে এ নিয়ে মুখ খোলেনি ড্রাক। বার্ষিক প্রতিবেদনও একই অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সম্পদ, ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও বা বিটকয়েন মাইনিং নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ২০২১ সালে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হতে পারে ভেবে ব্লকচেইনে আগ্রহী হয়ে উঠে ভুটান। তখন ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার অন্যতম শীর্ষ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রিপলের সঙ্গে বিনিময়ের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ‘ডিজিটাল মুদ্রার’ প্রচলন করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এসব উদ্যোগের কথা সব সময় গোপন রাখা হয়েছে।
হিমালয়ের হিমবাহ থেকে সৃষ্ট নদীগুলো থেকে প্রচুর জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে দেশটি। অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিও বিদ্যুৎ খাত। ৮ লাখ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনেরও (জিডিপি) প্রায় ৩০ শতাংশ এখাত থেকে অর্জন করে দেশটি। এখন বিটকয়েন মাইনিংয়ের জন্য জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগিয়ে ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চাইছে তারা। এটি হলে এল সালভাদরের পর ভুটান হবে বিটকয়েন স্বীকৃতিদাতা দ্বিতীয় দেশ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির দিকে ঝুঁকছে ভুটান। সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তর, মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দার পরে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ। স্বল্প জনসংখ্যা ও টেকসই জলবিদ্যুৎ ক্ষমতাও বিটকয়েন মাইনিং কোম্পানিগুলোর কাছে দেশটিকে আকর্ষণীয় করে তুলছে। কারণ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে চীনের নিষেধাজ্ঞা আছে; কাজাখস্তান ও সুইডেনও বিট কয়েন মাইনিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারপর থেকেই সস্তা বিদ্যুতের অনুসন্ধানে রয়েছে বিটকয়েন মাইনিং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো। তবে বিটকয়েনের দাম কমায় এবং গত বছর বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোর সায়েন্টিফিক এবং কম্পিউট নর্থের মতো মাইনিং কোম্পানি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদনও করেছে।
আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লুক্সরের বিটকয়েন মাইনিং বিশ্লেষক জারান মেলেরুড বলেন, ‘ভুটানে বিটকয়েন মাইনিং হবে, এতে অবাক হওয়া কিছু নেই। কারণ দেশটিতে রয়েছে টেকসই জলবিদ্যুৎ। তা ছাড়া জনসংখ্যা যেহেতু কম, তাই দেশটিতে জনপ্রতি বিদ্যুতের চাহিদা আমেরিকার মতো উন্নত দেশের সমান। তাই এমন সস্তা ও আটকে থাকা জলবিদ্যুৎ নিঃসন্দেহে বিটকয়েন মাইনারদের কাছে খুবই লোভনীয়। কারণ তাঁদের কাজই হলো অবমূল্যায়িত বিদ্যুৎকে বিটকয়েনে পরিণত করা।’
ভুটানের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি পর্যটন খাত করোনার কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ মহমারি ঠেকাতে প্রায় দুই বছর সীমান্ত পুরো বন্ধ রেখেছিল ভুটান। এমন পরিস্থিতিতে চীন, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও ভুটানের রাজপরিবারের এক সদস্য নিয়ে গঠিত ক্লাব ‘সিঙ্গাপুর-ভুটান অ্যাসোসিয়েশন’ বিটকয়েন মাইনিং প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়ে আসে। সেই প্রস্তাবে ৭০০ কিলোওয়াট মাইনিং রিগ দিয়ে তৈরি শিপিং কনটেইনারগুলোতে ৮ লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের রাজকীয় সহায়তা এবং সস্তায় বিদ্যুৎ সরবাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
তবে ভুটানের বর্তমান রাজার চাচা দাশো উগেন সেচুপ দরজি ফোর্বসকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বর্তমানে আটকে আছে। সরকার এ ধরনের ব্যবসার জন্য বেসরকারি খাতকে অনুমোদন দেয়নি।’
সিঙ্গাপুর ভুটান অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড সদস্য হামফেরি চ্যান বলেছেন, ‘এফটিএক্সের পতন এবং স্থলবেষ্টিত দেশটিতে খনির পরিবহন ও পরিচালনার সঙ্গে লজিস্টিক সমস্যাগুলো বিনিয়োগকারীদের আগ্রহকে কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে।’
আমস্টারডামের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির গবেষক অ্যালেক্স ডি ভ্রিস বলছেন, ‘ভুটান প্রতিবছর ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ রপ্তানি করে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে যখন নদীগুলো শুকিয়ে যায়, তখন দেশটিকে উলটো ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয়। এরকম পরিস্থিতে মাইনিং যদি দীর্ঘ সময়ের বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে লগ্নি করা অর্থ তুলে আনাটাও ঝুঁকির মুখে পড়ে। মনে রাখতে হবে, মাইনিং বন্ধ মানে কিন্তু আয়ও বন্ধ থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ফোর্বস থেকে অনুবাদ করেছেন তুষার পাল
কয়েক বছর ধরে গোপনে বিটকয়েন মাইনিং প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে হিমালয়ের কোলঘেঁষে থাকা ভুটান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ঠিক কতটা বিনিয়োগ করেছে, তা নিয়ে ধোয়াঁশা থাকলেও প্রকল্প নিয়ে কয়েক বছর ধরেই আগাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২০ সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন চললেও সম্প্রতি তা প্রকাশ পেয়েছে।
সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ভুটানিজকে ভুটান সরকারের এক প্রতিনিধি বলেছেন, কয়েক বছর আগে বিটকয়েনের দাম যখন ৫ হাজার ডলার ছিল, তখন সংগ্রহ শুরু করেছিল সরকার। ঠিক কবে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। ওই সূত্রের তথ্য ঠিক হলে ২০১৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়, কারণ ওই বছর বিটকয়েনের এই দাম ছিল।
বিটকয়েন মাইনিং নতুন বিটকয়েন সৃষ্টির প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রাটির বিনিময়কে যাচাই করে এমন মারাত্মক জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা হয়। এই ধাঁধার যিনি সমাধান করেন, তাঁকে মাইনার বলা হয়। মাইনারদের মধ্যে যিনি সবার আগে সমাধান করবেন, তাঁকে পুরস্কার হিসেবে বিটকয়েন ও ফি দেওয়া হবে।
বিটকয়েন মাইনিংয়ের এই প্রকল্পে সাবেক চীনা কোটিপতি উ জিহান প্রতিষ্ঠিত সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিশ্বের বৃহত্তম মাইনিং কোম্পানি বিটডিয়ারের সঙ্গেও কাজ করছে ভুটান। এ বছর এপ্রিলের এই কোম্পানি ১১০ কোটি ডলার জমা দিয়ে নিউইয়র্কভিত্তিক স্টক মার্কেট নাসডাকের তালিকাভুক্ত হয়।
গত ১৯ এপ্রিল বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, তারা ভুটানে বিটকয়েন মাইনিং ডেটা সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা করছে, যা বাস্তবায়ন করতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। চলতি অর্থবছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ডেটা সেন্টারটির নির্মাণ শুরু হবে এবং শেষ হবে ২০২৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটির মালিক কে হবে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে, বিটডিয়ার ও ভুটান সরকার কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
ভুটানের সরকারি তথ্য থেকেও বিটকয়েন মাইনিং কার্যক্রমের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। স্থলবেষ্টিত এ দেশের বাণিজ্যে সাধারণত প্রভাব ফেলে পেট্রোল, ইস্পাত এবং চালের বাজার। কিন্তু শুল্ক বিভাগের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ ও ২০২২ সালে কোটি কোটি ডলার খরচ করে দেশটি সবচেয়ে বেশি আমদানি করেছে কম্পিউটার চিপ। এর মধ্যে ২০২২ সালে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের কম্পিউটার চিপ আমদানি করা হয়, যা দেশটির বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ। এর আগের দুই বছরে এই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ১১ লাখ ডলার।
বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এমন আকাশছোঁয়া দামে শুধু ২০২১ সালে যে পরিমাণ কম্পিউটার চিপ আমদানি করেছে দেশটি, তাতে কয়েকটি ফুটবল মাঠের সমান ডেটাসেন্টার নির্মাণ করা সম্ভব। কম্পিউটার চিপের এমন আকাশচুম্বী অমদানির কারণে দেশটিতে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয় এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতেও টান পড়ে। এসব ঘটনা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল, দেশটি গোপনে কোনো বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
বেশ কয়েক বছর আগে ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও তৈরি করতে কোটি কোটি ডলার গোপনে বিনিয়োগ করেছিল ড্রাক হোল্ডিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট নামে ভুটানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ব্লকফাই এবং সেলসিয়াসের অসাবধানতার কারণে বিষয়টি তখন জানাজানি হয়ে যায়। তবে ‘গোপনীয়তার’ কথা বলে এ নিয়ে মুখ খোলেনি ড্রাক। বার্ষিক প্রতিবেদনও একই অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সম্পদ, ক্রিপ্টো পোর্টফোলিও বা বিটকয়েন মাইনিং নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ২০২১ সালে অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হতে পারে ভেবে ব্লকচেইনে আগ্রহী হয়ে উঠে ভুটান। তখন ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার অন্যতম শীর্ষ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রিপলের সঙ্গে বিনিময়ের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ‘ডিজিটাল মুদ্রার’ প্রচলন করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এসব উদ্যোগের কথা সব সময় গোপন রাখা হয়েছে।
হিমালয়ের হিমবাহ থেকে সৃষ্ট নদীগুলো থেকে প্রচুর জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে দেশটি। অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিও বিদ্যুৎ খাত। ৮ লাখ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনেরও (জিডিপি) প্রায় ৩০ শতাংশ এখাত থেকে অর্জন করে দেশটি। এখন বিটকয়েন মাইনিংয়ের জন্য জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগিয়ে ডেটা সেন্টার তৈরি করতে চাইছে তারা। এটি হলে এল সালভাদরের পর ভুটান হবে বিটকয়েন স্বীকৃতিদাতা দ্বিতীয় দেশ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির দিকে ঝুঁকছে ভুটান। সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তর, মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দার পরে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ। স্বল্প জনসংখ্যা ও টেকসই জলবিদ্যুৎ ক্ষমতাও বিটকয়েন মাইনিং কোম্পানিগুলোর কাছে দেশটিকে আকর্ষণীয় করে তুলছে। কারণ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে চীনের নিষেধাজ্ঞা আছে; কাজাখস্তান ও সুইডেনও বিট কয়েন মাইনিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারপর থেকেই সস্তা বিদ্যুতের অনুসন্ধানে রয়েছে বিটকয়েন মাইনিং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো। তবে বিটকয়েনের দাম কমায় এবং গত বছর বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোর সায়েন্টিফিক এবং কম্পিউট নর্থের মতো মাইনিং কোম্পানি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদনও করেছে।
আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লুক্সরের বিটকয়েন মাইনিং বিশ্লেষক জারান মেলেরুড বলেন, ‘ভুটানে বিটকয়েন মাইনিং হবে, এতে অবাক হওয়া কিছু নেই। কারণ দেশটিতে রয়েছে টেকসই জলবিদ্যুৎ। তা ছাড়া জনসংখ্যা যেহেতু কম, তাই দেশটিতে জনপ্রতি বিদ্যুতের চাহিদা আমেরিকার মতো উন্নত দেশের সমান। তাই এমন সস্তা ও আটকে থাকা জলবিদ্যুৎ নিঃসন্দেহে বিটকয়েন মাইনারদের কাছে খুবই লোভনীয়। কারণ তাঁদের কাজই হলো অবমূল্যায়িত বিদ্যুৎকে বিটকয়েনে পরিণত করা।’
ভুটানের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি পর্যটন খাত করোনার কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ মহমারি ঠেকাতে প্রায় দুই বছর সীমান্ত পুরো বন্ধ রেখেছিল ভুটান। এমন পরিস্থিতিতে চীন, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও ভুটানের রাজপরিবারের এক সদস্য নিয়ে গঠিত ক্লাব ‘সিঙ্গাপুর-ভুটান অ্যাসোসিয়েশন’ বিটকয়েন মাইনিং প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়ে আসে। সেই প্রস্তাবে ৭০০ কিলোওয়াট মাইনিং রিগ দিয়ে তৈরি শিপিং কনটেইনারগুলোতে ৮ লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীদের রাজকীয় সহায়তা এবং সস্তায় বিদ্যুৎ সরবাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
তবে ভুটানের বর্তমান রাজার চাচা দাশো উগেন সেচুপ দরজি ফোর্বসকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বর্তমানে আটকে আছে। সরকার এ ধরনের ব্যবসার জন্য বেসরকারি খাতকে অনুমোদন দেয়নি।’
সিঙ্গাপুর ভুটান অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড সদস্য হামফেরি চ্যান বলেছেন, ‘এফটিএক্সের পতন এবং স্থলবেষ্টিত দেশটিতে খনির পরিবহন ও পরিচালনার সঙ্গে লজিস্টিক সমস্যাগুলো বিনিয়োগকারীদের আগ্রহকে কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে।’
আমস্টারডামের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির গবেষক অ্যালেক্স ডি ভ্রিস বলছেন, ‘ভুটান প্রতিবছর ৭৫ শতাংশ বিদ্যুৎ রপ্তানি করে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে যখন নদীগুলো শুকিয়ে যায়, তখন দেশটিকে উলটো ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয়। এরকম পরিস্থিতে মাইনিং যদি দীর্ঘ সময়ের বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে লগ্নি করা অর্থ তুলে আনাটাও ঝুঁকির মুখে পড়ে। মনে রাখতে হবে, মাইনিং বন্ধ মানে কিন্তু আয়ও বন্ধ থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ফোর্বস থেকে অনুবাদ করেছেন তুষার পাল
মূল্যস্ফীতির প্রভাব মধ্য ও নিম্ন আয়ের শ্রেণির মধ্যে প্রধানত ভোগের ওপর পড়ছে, কিন্তু উচ্চ আয়ের মানুষদের ওপর এর তেমন প্রভাব নেই। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতে বিলাসদ্রব্যে মানুষের ব্যয় বাড়ছে। জার্মান বিলাসবহুল গাড়ি প্রস্তুতকারক মার্সিডিজ–বেঞ্জের গাড়ি বিক্রি এ বছরের প্রথম নয় মাসে ভারতে ১৩ শতাংশ বেড়েছে, যা
১ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিন ধরেই ডলারের অস্থিরতা ও সংকটে ভুগছিল দেশ। সেটি এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি। তবে, প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় পর এখন বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেসোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ৫২১ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গত ১৪ নভেম্বর এই সভার আয়োজন করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগেএসিআই পাওয়ার সলিউশন ২৬ তম পাওয়ার বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেছে। এটি ১৪-১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায়। এসিআই পাওয়ার সলিউশনের এক্সপোতে অংশগ্রহণের মূল লক্ষ্য সব নতুন পণ্য সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানো। যার মধ্যে রেইকেম কেবল এক্সেসরিজ, স্নেইডার সার্কিট ব্র
৪ ঘণ্টা আগে