নাজমুল হাসান সাগর, সিলেট থেকে
গোয়াইনঘাট সালুটিকর সড়কে দাঁড়িয়ে দুপাশে তাকালে যত দূর চোখ যায় শুধু ধানখেত। কয়েক দিন আগেও দিগন্ত জোড়া এসব খেতে আধা পাকা ধান দেখে কৃষক আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সে আশা ধূলিসাৎ হয়েছে অতর্কিত বন্যায়। আধো ডোবা না কাটা এসব ধানের ওপরের অংশ কাদামাটি জড়িয়ে শুকিয়ে ধূসর হয়ে গেছে। পচে গেছে অর্ধেকের বেশি ধান। সেগুলোই কেটে এনে সালুটিকর সড়কে মাড়াই করছিলেন কৃষক সাইদুল ইসলাম।
তিন কানি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলেন সাইদুল। খুব কম করে হলেও এবার ৭৫ মণ ধান পাবেন বলে আশা ছিল। অথচ বন্যার কারণে এখন ১৫ মণ ধানও হবে না বলে তাঁর ধারণা। কথা বলতে বলতেই এক মুঠ ধান নিয়ে দেখালেন তাতে ধানের চেয়ে পাতানই (চিটা) বেশি। ‘এই ধান দিয়ে কী হবে’–এ প্রশ্ন করেই তাকিয়ে রইলেন। আরও হাজারো সাইদুলের একই প্রশ্ন।
নদীঘেঁষা হওয়ায় গোয়াইনঘাট উপজেলা সিলেটে এবারের বন্যায় সব থেকে বেশি প্লাবিত হওয়া এলাকার একটি। বন্যার পানিতে উপজেলার অবকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টরের মতো সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। একই কারণে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা জৈন্তাসহ কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ। গোয়াইনঘাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এই উপজেলায় ৮৩২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে এবং সবজি নষ্ট হয়েছে অন্তত ৫০ হেক্টর জমির।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধানের বীজতলা। প্রথম বন্যার পরেই আউশ ধানের বীজ বোনা হয়েছিল এই উপজেলায়। তাই এখন আর কোনো বীজ অবশিষ্ট নেই কৃষকের কাছে কিংবা কৃষি অফিসে। গোয়াইনঘাটে প্রায় সাড়ে সাত হাজার একরের বেশি জমিতে আউশ আবাদ হয়। যার মধ্যে শুধু সাড়ে তিন হাজার একর আউশ আবাদ হয় আলীরগাঁও ইউনিয়নেই।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘আউশ ধানের বীজতলা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা পূরণ করা খুবই কঠিন হয়ে যাবে। এই ক্ষতি পূরণের চেষ্টা করছি। তবে কৃষক কিংবা আমাদের হাতে কোনো আউশের বীজ নেই। এদিকে হাতে আর সময়ও নেই যে আবার বীজ রোপণ করা যাবে।’
জৈন্তা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বন্যায় ৩০০ হেক্টর বোরো ধান, ১০০ হেক্টর আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলাতেই নষ্ট হয়েছে ৩৮০ হেক্টর আউশের বীজ। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির সবজি নষ্ট হয়েছে ৬৫০ হেক্টর জমির। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৭১ হেক্টর ফসলি জমি এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এর মধ্যে বোরো ধান ৫২ হেক্টর, আউশ ধানের বীজতলা ৮৪ হেক্টর, শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসল ৩৫ হেক্টর।
তবে এই হিসাব মানতে নারাজ স্থানীয় কৃষকেরা। তাঁদের দাবি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন জীবনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মিয়া বলেন, গত বছর তিনি ১১০ মণ ধান ঘরে তুলেছিলেন। আশা ছিল, এবার আরও বেশি পাবেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বন্যায় তাঁর খেতের ধান পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ধানগাছে পচন ধরেছে। ফলে এবার ফসল ঘরে তোলার কোনো আশাই নেই। সরকারি হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই বলেও মনে করেন তিনি।
তবে এই ক্ষতিতে খাদ্যসংকট হবে বলে মনে করেন না সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যায় সিলেট জেলায় ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এখনো কিছুদিন আউশ ধান বোনার সময় রয়েছে। এই কয়েক দিনেও আউশ ধানের ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারব।
এদিকে সিলেট নগরীর উপশহর ও তালতলা পয়েন্টের পানি নেমে গেছে। এর মাধ্যমে সিলেট নগরীর মধ্যে ছড়ার পাড়সহ কয়েকটি ছোটখাটো এলাকা বাদে অন্য প্লাবিত এলাকা নেই বললেই চলে। পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেলেও এখনো খাবার পানি ও গ্যাসের সংকট রয়েছে। সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে ছিল। যদিও পানি অব্যাহতভাবে কমতে শুরু করেছে। সব পয়েন্টেই লুবা, সারি ও ধলা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। পাউবো সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, যে হারে পানি কমছে, এটা অব্যাহত থাকলে খুব তাড়াতাড়ি সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে চলে যাবে।
গোয়াইনঘাট সালুটিকর সড়কে দাঁড়িয়ে দুপাশে তাকালে যত দূর চোখ যায় শুধু ধানখেত। কয়েক দিন আগেও দিগন্ত জোড়া এসব খেতে আধা পাকা ধান দেখে কৃষক আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সে আশা ধূলিসাৎ হয়েছে অতর্কিত বন্যায়। আধো ডোবা না কাটা এসব ধানের ওপরের অংশ কাদামাটি জড়িয়ে শুকিয়ে ধূসর হয়ে গেছে। পচে গেছে অর্ধেকের বেশি ধান। সেগুলোই কেটে এনে সালুটিকর সড়কে মাড়াই করছিলেন কৃষক সাইদুল ইসলাম।
তিন কানি জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলেন সাইদুল। খুব কম করে হলেও এবার ৭৫ মণ ধান পাবেন বলে আশা ছিল। অথচ বন্যার কারণে এখন ১৫ মণ ধানও হবে না বলে তাঁর ধারণা। কথা বলতে বলতেই এক মুঠ ধান নিয়ে দেখালেন তাতে ধানের চেয়ে পাতানই (চিটা) বেশি। ‘এই ধান দিয়ে কী হবে’–এ প্রশ্ন করেই তাকিয়ে রইলেন। আরও হাজারো সাইদুলের একই প্রশ্ন।
নদীঘেঁষা হওয়ায় গোয়াইনঘাট উপজেলা সিলেটে এবারের বন্যায় সব থেকে বেশি প্লাবিত হওয়া এলাকার একটি। বন্যার পানিতে উপজেলার অবকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টরের মতো সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। একই কারণে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা জৈন্তাসহ কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ। গোয়াইনঘাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এই উপজেলায় ৮৩২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে এবং সবজি নষ্ট হয়েছে অন্তত ৫০ হেক্টর জমির।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধানের বীজতলা। প্রথম বন্যার পরেই আউশ ধানের বীজ বোনা হয়েছিল এই উপজেলায়। তাই এখন আর কোনো বীজ অবশিষ্ট নেই কৃষকের কাছে কিংবা কৃষি অফিসে। গোয়াইনঘাটে প্রায় সাড়ে সাত হাজার একরের বেশি জমিতে আউশ আবাদ হয়। যার মধ্যে শুধু সাড়ে তিন হাজার একর আউশ আবাদ হয় আলীরগাঁও ইউনিয়নেই।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘আউশ ধানের বীজতলা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা পূরণ করা খুবই কঠিন হয়ে যাবে। এই ক্ষতি পূরণের চেষ্টা করছি। তবে কৃষক কিংবা আমাদের হাতে কোনো আউশের বীজ নেই। এদিকে হাতে আর সময়ও নেই যে আবার বীজ রোপণ করা যাবে।’
জৈন্তা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বন্যায় ৩০০ হেক্টর বোরো ধান, ১০০ হেক্টর আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলাতেই নষ্ট হয়েছে ৩৮০ হেক্টর আউশের বীজ। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির সবজি নষ্ট হয়েছে ৬৫০ হেক্টর জমির। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৭১ হেক্টর ফসলি জমি এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এর মধ্যে বোরো ধান ৫২ হেক্টর, আউশ ধানের বীজতলা ৮৪ হেক্টর, শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসল ৩৫ হেক্টর।
তবে এই হিসাব মানতে নারাজ স্থানীয় কৃষকেরা। তাঁদের দাবি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের নতুন জীবনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মিয়া বলেন, গত বছর তিনি ১১০ মণ ধান ঘরে তুলেছিলেন। আশা ছিল, এবার আরও বেশি পাবেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বন্যায় তাঁর খেতের ধান পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ধানগাছে পচন ধরেছে। ফলে এবার ফসল ঘরে তোলার কোনো আশাই নেই। সরকারি হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই বলেও মনে করেন তিনি।
তবে এই ক্ষতিতে খাদ্যসংকট হবে বলে মনে করেন না সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যায় সিলেট জেলায় ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এখনো কিছুদিন আউশ ধান বোনার সময় রয়েছে। এই কয়েক দিনেও আউশ ধানের ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারব।
এদিকে সিলেট নগরীর উপশহর ও তালতলা পয়েন্টের পানি নেমে গেছে। এর মাধ্যমে সিলেট নগরীর মধ্যে ছড়ার পাড়সহ কয়েকটি ছোটখাটো এলাকা বাদে অন্য প্লাবিত এলাকা নেই বললেই চলে। পানিবন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেলেও এখনো খাবার পানি ও গ্যাসের সংকট রয়েছে। সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে ছিল। যদিও পানি অব্যাহতভাবে কমতে শুরু করেছে। সব পয়েন্টেই লুবা, সারি ও ধলা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে। পাউবো সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, যে হারে পানি কমছে, এটা অব্যাহত থাকলে খুব তাড়াতাড়ি সব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে চলে যাবে।
রাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
১৪ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার জগতি রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেন থামানো, স্টেশন আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
১৬ মিনিট আগেরংপুরের মিঠাপুকুরে জামাই-শ্বশুরের বিবাদ থামাতে গিয়ে সোহান আহমেদ (২৬) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার পাইকান গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সোহান ওই গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।
১৬ মিনিট আগেশেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন দিয়ে এরশাদুল হক নামে এক যুবকের লাশ হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। আজ শুক্রবার দুপুরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও দুই দেশের পুলিশের উপস্থিতিতে ওই লাশ হস্তান্তর করা হয়।
১৮ মিনিট আগে