আবেদনের যোগ্যতা না থাকা সেই প্রার্থী এখন শাবিপ্রবির শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ২১: ৫৮

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) প্রভাষক নিয়োগে আবেদনের যোগ্যতা না থাকলেও ভাইভায় অংশ নেওয়া সেই প্রার্থী এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। শাবিপ্রবির জ্বালানি ও খনিজ প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগে এই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষক নিয়োগে এই অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে গত ১১ জুন আজকের পত্রিকায় ‘কম যোগ্য প্রার্থীকেও ডাকা হলো শাবিপ্রবির ভাইভায়’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে পিএমই বিভাগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অ্যালামনাইদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রভাষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফরহাদ হাওলাদার পদত্যাগ করেছেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. তাজবিউল ইসলাম। তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, শিবপুর (আইআইইএসটি) থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। স্নাতকে তাঁর সিজিপিএ ৭.৩৫ পয়েন্ট। ভারতের ওই প্রতিষ্ঠানে সিজিপিএ মোট ১০ পয়েন্টে হিসাব করা হলেও শাবিপ্রবিসহ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও ইউজিসি তা ৪ পয়েন্টে হিসাব করে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি পিএমই বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্যতায় স্নাতকে সর্বনিম্ন ৩.৫০ সিজিপিএ এর শর্ত দেওয়া থাকলেও নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক তাজবিউলের প্রাপ্ত সিজিপিএ এই শর্ত পূরণ করে না। শর্ত পূরণ না করলেও এই প্রার্থীকে নিয়োগ বোর্ডে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ভাইভা কার্ড দেওয়া হয়েছিল এবং গত ৬ জুন অনুষ্ঠিত ভাইভা বোর্ডে তিনি ভাইভা দেন। ভাইভায় সম-মূল্যায়নের সার্টিফিকেট দেখানোর নিয়ম থাকলেও তিনি তা দেখাননি বলে বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এরপরও ভাইভা বোর্ড তাজবিউলকে নিয়োগের জন্য সিন্ডিকেটে সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে অনলাইনে সিন্ডিকেট সভায় তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হয়।

অন্যদিকে এই ঘটনা আজকের পত্রিকার মাধ্যমে সামনে এলে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। এ নিয়ে গত ১৮ আগস্ট পিএমই অ্যাসোসিয়েশন থেকে এই নিয়োগে ঘটনায় তদন্ত, প্রভাষক তাজবিউলকে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত রাখা এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দাবি জানায়। এ ছাড়া এ নিয়োগ নিয়ে পিএমই বিভাগের ১৬তম, ১৭তম, ১৮তম ও ১৯তম ব্যাচের বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এদিকে একই দাবিতে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে ওই বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

এ বিষয়ে পিএমই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের তথ্য-উপাত্ত দেখেছি। কোনোভাবেই এটা ৩.৫০ এর শর্ত পূরণ করে না। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছে, আমরা তাদের সঙ্গে একমত। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর পেছনের কারণগুলো বের করা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি যখন বিভাগে প্রধানের দায়িত্বে ছিলাম। তখন দেখেছি, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে পছন্দমতো এক্সপার্ট নিয়ে এসে নিয়োগ বোর্ডে প্যানেল করে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ নিয়েও শুনেছি বিভাগের যোগ্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন এবং একজন ভিসিবিরোধী আন্দোলনে ফেসবুকে অভিযোগ এনেছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ–পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

অধিকৃত অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের সার্বভৌম মালিকানা ফিলিস্তিনিদের, জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

গাজীপুরে বেতন পেলেন ৫ কারখানার সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক, কাজে যোগ দেবে কাল

বিসিএস নিয়োগ: নিজেই রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার তথ্য দিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন অনেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত