ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
জাল-জালিয়াতির একটি মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. রফিক মিয়া (৬৯)। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে গত বছরের ১৬ আগস্ট তাঁকে কারাগারে পাঠান সিলেটের একটি আদালত। ২১ দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিন পান।
কিন্তু জামিনে মুক্তির পর বাদীপক্ষের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি আসল রফিক মিয়া নন। অর্থাৎ ‘আয়নাবাজি’ করেছেন রফিক মিয়া। ইমিগ্রেশন বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই মামলায় আদালতে যাঁর যুক্তরাজ্যের পাসপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তিনি ১৬ আগস্টের আগে বিমানবন্দর দিয়ে দেশে আসেননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রফিক মিয়ার পরিবর্তে আদালতে ও কারাগারে যাওয়া ব্যক্তি মো. আমিন উদ্দিন (৫৭) পেশায় ট্রাকচালক। কারাগারে থাকা ছবিটিও তাঁর। বিষয়টি তিনি স্বীকারও করেছেন। তবে রফিক মিয়ার আইনজীবীর দাবি, ওই ব্যক্তি রফিক মিয়া।
সিলেট নগরের কাজীটুলায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে ১১ কোটি ৭৯ লাখ ২ হাজার ১৬৯ টাকা তুলে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলার ২ নম্বর আসামি রফিক মিয়ার ক্ষেত্রে আসল-নকলের এই প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করা এই মামলায় মোট আসামি আটজন।
রফিক মিয়া সিলেটের ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। আদালত ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিক মিয়া গত বছরের ১৬ আগস্ট সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। পরে তৃতীয় দফায় ৫ সেপ্টেম্বর জামিন মঞ্জুর হলে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাঁর আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির (আইডি নং-১৬৬২)। জামিনদার হন আইনজীবীর সহকারী মো. জাকারিয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পর্কিত সকল খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে ৯ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য তারিখে বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী আদালতে এক আবেদনে বলেন, জামিন পাওয়া ব্যক্তি এই মামলার আসামি রফিক মিয়া নন। ২৯ আগস্ট আদালতে কথিত রফিক মিয়ার সঙ্গে দেখা হওয়া ৭ নম্বর আসামি শেখ আজাদ বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। আইনজীবী রফিকের ২০ বছরের পাসপোর্টের মূল কপি ও কারাগারে সংগৃহীত ছবি তলব করে আসামি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আবেদন জানান। সেদিন রফিক ও তাঁর আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে ৩১ অক্টোবর সর্বশেষ পাসপোর্টসহ আসামিকে আদালতে হাজির করতে তাঁর আইনজীবী ও জামিনদারকে নির্দেশ দেন।
৩১ অক্টোবর আইনজীবী হুমায়ুন কবির আদালতে জানান, রফিক অসুস্থ থাকায় আগের তারিখে হাজির হতে পারেননি। তিনি সুচিকিৎসার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর লন্ডন গেছেন। সুস্থ হলে দেশে ফিরে আদালতে হাজির হবেন। জামিনদারও ওই দিন আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাওয়ায় আদালত রফিকের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁর হাজতি পরোয়ানার কপি ৭ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে পাঠাতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। ওই তারিখে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৬ মে রফিকের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও বাদীপক্ষের সাক্ষী না আসায় ১১ জুলাই (আগামীকাল) পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগাযোগ করে ‘রফিক মিয়ার’ ছবি এবং আদালতে দাখিল করা পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি সংগ্রহ করে শনাক্তের জন্য এই প্রতিবেদক যান ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামে রফিকের বাড়িতে। সেখানে রফিকের বড় ভাই হারিছ মিয়াকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি তাঁর ভাই রফিক নন। তবে পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তাঁকে রফিক বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, রফিক দীর্ঘদিন দেশে আসেননি। তাঁর ছবিও নেই। তিনি বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করার অনুরোধ করেন। তাঁর (হারিছ) ছেলে রুয়েদ ওরফে রুনু মিয়াও লন্ডনে থাকেন।
ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি রফিকের চাচাশ্বশুর বিশ্বনাথের রশিদপুরের (ধর্মদা) শেখ আজাদকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে তিনি রফিক কি না জানতে চাইলে তিনি সরাসরি জবাব দেননি। বলেন, আদালতে ওই ব্যক্তির চোখে কালো চশমা, মুখে বড় মাস্ক ছিল। তাই কে ছিল, বলতে পারবেন না।
তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক বলেন, রফিকের পরিবর্তে অন্যজন কারাগারে গেছেন বলে শুনেছেন।
যোগাযোগ করা হলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বন্দী রফিক মিয়া আদালত থেকে কারাগারে আসার পর নিবন্ধন করে ছবি তোলা হয়। অনেক সময় সার্ভারের জটিলতা বা জ্যামের কারণে শতভাগ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে বন্দীর মৌখিক দেওয়া তথ্য ইনপুট করা হয়।
কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দীর যথার্থতা নির্ধারণের দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে পুলিশের ও পরে আদালতের। সরবরাহ করা তথ্য ও ছবির বন্দীই রফিক মিয়া হিসেবে হাজতের পরোয়ানামূলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে এসেছেন।
কারাগারে থাকা ছবির ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায় জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের দিগলবাক (দিগলবাদ) গ্রামে। শেওলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. জহুর উদ্দিন ও সদস্য মাহমুদুল হাসান এরশাদকে ওই ছবি দেখানো হলে তাঁরা জানান, ছবিটি ট্রাকচালক আমিন উদ্দিনের। তিনি মো. মঈন উদ্দিনের ছেলে। এরশাদ এই প্রতিবেদককে নিয়ে যান আমিন উদ্দিনের বাড়িতে। বাড়ির লোক ছবিটি রাহেলা বেগমের স্বামী ও আমিনা বেগমের বাবা আমিন উদ্দিনের। এরশাদের সহযোগিতায় মোবাইলে যোগাযোগ করলে আমিন উদ্দিন ২১ দিন কারাগারে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রফিকের ভাতিজা রুনুর ট্রিপ দিতাম। ঘটনার দিন কোর্টের সামনে তিনি বলেন, তাঁর একজন আসামি আসেননি। বদলা হাজিরা দিতে হবে। আমি রাজি হই। কিন্তু কোর্ট আমাকে কারাগারে পাঠান।
রুনু পরিবারকে ১০-১৫ হাজার টাকা দেন। আমাকে কারাগার থেকে বের করেন। কারাগারে ঢোকার সময় নিজের নাম আমিন উদ্দিন বললেও তারা বলে, আমি রফিক মিয়া।’
রফিক মিয়া ও তাঁর ভাতিজা রুনু মিয়া যুক্তরাজ্যে থাকায় এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রফিকের ভাই হারিছ মিয়াও যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেননি।
জানতে চাইলে রফিকের জামিনদার মো. জাকারিয়া আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘জামিন হলে স্যার (আইনজীবী হুমায়ুন) আসামির ভাতিজা রুনু ভাইকে ফোন দিতে বলেছিলেন। ফোন করে জামিনদার নিয়ে আসতে বললেও তিনি আসতে পারছেন না জানিয়ে আমাকে জামিনদার হতে অনুরোধ করেন। রুনু ও আসামিকে চিনতাম না।’
তবে আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিই প্রকৃত রফিক মিয়া। কারাগার থেকেও আদালতে এমন প্রতিবেদন এসেছে। তিনি বলেন, ‘আসামিকে আইনজীবীর চেনার কথা নয়। যাঁরা হাজির করেন, তাঁরা চেনেন। জামিনদার বলতে পারবেন। জামিনদার আমার সঙ্গে কাজ করেন না।’
সিলেটের বিশিষ্ট আইনজীবী এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, যদি কোনো ব্যক্তিকে আদালতে কোনো আইনজীবী শনাক্ত করেন, তার দায়দায়িত্ব ওই আইনজীবীর। তবে সেই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠবে, তখন অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরিচয় উদ্ঘাটনের দায়দায়িত্ব আদালতের।
আরও খবর পড়ুন:
জাল-জালিয়াতির একটি মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. রফিক মিয়া (৬৯)। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে গত বছরের ১৬ আগস্ট তাঁকে কারাগারে পাঠান সিলেটের একটি আদালত। ২১ দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিন পান।
কিন্তু জামিনে মুক্তির পর বাদীপক্ষের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি আসল রফিক মিয়া নন। অর্থাৎ ‘আয়নাবাজি’ করেছেন রফিক মিয়া। ইমিগ্রেশন বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই মামলায় আদালতে যাঁর যুক্তরাজ্যের পাসপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তিনি ১৬ আগস্টের আগে বিমানবন্দর দিয়ে দেশে আসেননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রফিক মিয়ার পরিবর্তে আদালতে ও কারাগারে যাওয়া ব্যক্তি মো. আমিন উদ্দিন (৫৭) পেশায় ট্রাকচালক। কারাগারে থাকা ছবিটিও তাঁর। বিষয়টি তিনি স্বীকারও করেছেন। তবে রফিক মিয়ার আইনজীবীর দাবি, ওই ব্যক্তি রফিক মিয়া।
সিলেট নগরের কাজীটুলায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে ১১ কোটি ৭৯ লাখ ২ হাজার ১৬৯ টাকা তুলে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলার ২ নম্বর আসামি রফিক মিয়ার ক্ষেত্রে আসল-নকলের এই প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করা এই মামলায় মোট আসামি আটজন।
রফিক মিয়া সিলেটের ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। আদালত ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিক মিয়া গত বছরের ১৬ আগস্ট সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। পরে তৃতীয় দফায় ৫ সেপ্টেম্বর জামিন মঞ্জুর হলে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাঁর আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির (আইডি নং-১৬৬২)। জামিনদার হন আইনজীবীর সহকারী মো. জাকারিয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পর্কিত সকল খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে ৯ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য তারিখে বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী আদালতে এক আবেদনে বলেন, জামিন পাওয়া ব্যক্তি এই মামলার আসামি রফিক মিয়া নন। ২৯ আগস্ট আদালতে কথিত রফিক মিয়ার সঙ্গে দেখা হওয়া ৭ নম্বর আসামি শেখ আজাদ বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। আইনজীবী রফিকের ২০ বছরের পাসপোর্টের মূল কপি ও কারাগারে সংগৃহীত ছবি তলব করে আসামি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আবেদন জানান। সেদিন রফিক ও তাঁর আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে ৩১ অক্টোবর সর্বশেষ পাসপোর্টসহ আসামিকে আদালতে হাজির করতে তাঁর আইনজীবী ও জামিনদারকে নির্দেশ দেন।
৩১ অক্টোবর আইনজীবী হুমায়ুন কবির আদালতে জানান, রফিক অসুস্থ থাকায় আগের তারিখে হাজির হতে পারেননি। তিনি সুচিকিৎসার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর লন্ডন গেছেন। সুস্থ হলে দেশে ফিরে আদালতে হাজির হবেন। জামিনদারও ওই দিন আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাওয়ায় আদালত রফিকের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁর হাজতি পরোয়ানার কপি ৭ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে পাঠাতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। ওই তারিখে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৬ মে রফিকের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও বাদীপক্ষের সাক্ষী না আসায় ১১ জুলাই (আগামীকাল) পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগাযোগ করে ‘রফিক মিয়ার’ ছবি এবং আদালতে দাখিল করা পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি সংগ্রহ করে শনাক্তের জন্য এই প্রতিবেদক যান ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামে রফিকের বাড়িতে। সেখানে রফিকের বড় ভাই হারিছ মিয়াকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি তাঁর ভাই রফিক নন। তবে পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তাঁকে রফিক বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, রফিক দীর্ঘদিন দেশে আসেননি। তাঁর ছবিও নেই। তিনি বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করার অনুরোধ করেন। তাঁর (হারিছ) ছেলে রুয়েদ ওরফে রুনু মিয়াও লন্ডনে থাকেন।
ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি রফিকের চাচাশ্বশুর বিশ্বনাথের রশিদপুরের (ধর্মদা) শেখ আজাদকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে তিনি রফিক কি না জানতে চাইলে তিনি সরাসরি জবাব দেননি। বলেন, আদালতে ওই ব্যক্তির চোখে কালো চশমা, মুখে বড় মাস্ক ছিল। তাই কে ছিল, বলতে পারবেন না।
তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক বলেন, রফিকের পরিবর্তে অন্যজন কারাগারে গেছেন বলে শুনেছেন।
যোগাযোগ করা হলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বন্দী রফিক মিয়া আদালত থেকে কারাগারে আসার পর নিবন্ধন করে ছবি তোলা হয়। অনেক সময় সার্ভারের জটিলতা বা জ্যামের কারণে শতভাগ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে বন্দীর মৌখিক দেওয়া তথ্য ইনপুট করা হয়।
কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দীর যথার্থতা নির্ধারণের দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে পুলিশের ও পরে আদালতের। সরবরাহ করা তথ্য ও ছবির বন্দীই রফিক মিয়া হিসেবে হাজতের পরোয়ানামূলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে এসেছেন।
কারাগারে থাকা ছবির ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায় জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের দিগলবাক (দিগলবাদ) গ্রামে। শেওলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. জহুর উদ্দিন ও সদস্য মাহমুদুল হাসান এরশাদকে ওই ছবি দেখানো হলে তাঁরা জানান, ছবিটি ট্রাকচালক আমিন উদ্দিনের। তিনি মো. মঈন উদ্দিনের ছেলে। এরশাদ এই প্রতিবেদককে নিয়ে যান আমিন উদ্দিনের বাড়িতে। বাড়ির লোক ছবিটি রাহেলা বেগমের স্বামী ও আমিনা বেগমের বাবা আমিন উদ্দিনের। এরশাদের সহযোগিতায় মোবাইলে যোগাযোগ করলে আমিন উদ্দিন ২১ দিন কারাগারে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রফিকের ভাতিজা রুনুর ট্রিপ দিতাম। ঘটনার দিন কোর্টের সামনে তিনি বলেন, তাঁর একজন আসামি আসেননি। বদলা হাজিরা দিতে হবে। আমি রাজি হই। কিন্তু কোর্ট আমাকে কারাগারে পাঠান।
রুনু পরিবারকে ১০-১৫ হাজার টাকা দেন। আমাকে কারাগার থেকে বের করেন। কারাগারে ঢোকার সময় নিজের নাম আমিন উদ্দিন বললেও তারা বলে, আমি রফিক মিয়া।’
রফিক মিয়া ও তাঁর ভাতিজা রুনু মিয়া যুক্তরাজ্যে থাকায় এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রফিকের ভাই হারিছ মিয়াও যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেননি।
জানতে চাইলে রফিকের জামিনদার মো. জাকারিয়া আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘জামিন হলে স্যার (আইনজীবী হুমায়ুন) আসামির ভাতিজা রুনু ভাইকে ফোন দিতে বলেছিলেন। ফোন করে জামিনদার নিয়ে আসতে বললেও তিনি আসতে পারছেন না জানিয়ে আমাকে জামিনদার হতে অনুরোধ করেন। রুনু ও আসামিকে চিনতাম না।’
তবে আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিই প্রকৃত রফিক মিয়া। কারাগার থেকেও আদালতে এমন প্রতিবেদন এসেছে। তিনি বলেন, ‘আসামিকে আইনজীবীর চেনার কথা নয়। যাঁরা হাজির করেন, তাঁরা চেনেন। জামিনদার বলতে পারবেন। জামিনদার আমার সঙ্গে কাজ করেন না।’
সিলেটের বিশিষ্ট আইনজীবী এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, যদি কোনো ব্যক্তিকে আদালতে কোনো আইনজীবী শনাক্ত করেন, তার দায়দায়িত্ব ওই আইনজীবীর। তবে সেই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠবে, তখন অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরিচয় উদ্ঘাটনের দায়দায়িত্ব আদালতের।
আরও খবর পড়ুন:
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত আড়াইটার দিকে ধানমন্ডি–১৫–এর একটি পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘটনাটি ঘটে। আহত অবস্থায় বাসার ভাড়াটিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ভোর পৌনে ৪টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
৬ মিনিট আগেকিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে প্রথম স্ত্রীর বাসায় যাওয়ায় স্বামীকে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার গভীর রাতে পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
২২ মিনিট আগেগাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে আই আর খান জুট মিলে অগ্নিকাণ্ডে মজুত করা বিপুলপরিমাণে পাট পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেনোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নে দুর্গম চরাঞ্চল দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ছুরিকাঘাতে ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে