কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আসামির তালিকায় ৩ সাংবাদিকের নাম

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ১৮

কুড়িগ্রামের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জেলায় কর্মরত তিন সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার সদর থানায় মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন। 

বাদী রুহুল আমিন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সেনেরখামার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচিসহ গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম শহরের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম শহরে আওয়ামী লীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হত্যা, হামলা, মারধর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে আওয়ামী লীগের ১০৪ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। 

মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আসামির তালিকায় ৪০, ৪২ এবং ৬৪ নম্বরে জেলায় কর্মরত তিন সাংবাদিকের নাম দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি আব্দুল খালেক ফারুক, দৈনিক সংবাদ ও নিউজ ২৪ টেলিভিশনের প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির সূর্য এবং এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের প্রতিনিধি ইউসুফ আলমগীর। তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

হত্যা মামলায় সাংবাদিকদের আসামি করায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আসামি হওয়া সাংবাদিকদের দাবি, পেশাগত দায়িত্ব পালনের বাইরে তাঁদের কোনো ভূমিকা নেই। ষড়যন্ত্র এবং বিদ্বেষমূলকভাবে তাঁদের মামলায় জড়ানো হয়েছে। হয়রানি করাই উদ্দেশ্য। 

মামলার আসামি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি এবং কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ফারুক বলেন, ‘এই মামলায় সাংবাদিকদের জড়ানো ভিত্তিহীন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের বাইরে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। ঘটনার দিন আমরা প্রেসক্লাবে আটকা পড়েছিলাম। ঘটনা দেখতে যেতেও পারি নাই। তারপরও হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই দুরভিসন্ধিমূলকভাবে সাংবাদিকদের আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ 

 ‘আশিকের মৃত্যুর পর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তাঁর দাফনের সংবাদ সংগ্রহ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলাম। পেশাগত কাজের বাইরে এক পা হাঁটি নাই। তারপরও হয়রানিমূলকভাবে আমাদের জড়ানো হয়েছে। এটা নিন্দনীয়।’ বলেন খালেক ফারুক। 

মামলার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক নেতা আব্দুল খালেক ফারুক বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণে সরকার যে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করেছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশা করছি। তাতেই সত্যতা বেরিয়ে আসবে।’ 

প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ বলেন, ‘মামলার বিষয় শুনেছি। যে সাংবাদিকদের নাম এসেছে, তাঁরা সবাই দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারির সঙ্গে জেলায় সাংবাদিকতা করে আসছেন। ঘটনার সঙ্গে তাঁরা ন্যূনতম জড়িত নন। তাঁদের আসামি করাই নিন্দা জানাই।’ 

এ বিষয়ে জানতে বাদী রুহুল আমিনের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। 

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল আলম বলেন, ‘মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত