অটোরিকশা চালান এনায়েত, আর তাঁর বন্ধু শাহ আলম যাত্রীবেশে অটোতে থাকেন। কোনো ফাঁকা স্থান পেয়ে শাহ আলম অটো থেকে নেমে পড়ার আগেই তাঁর কাছে থাকা কাগজে মোড়ানো একটি নকল স্বর্ণের বিস্কুট অটোতে ফেলে দেন। পরে কৌশলে তা অটোর অন্য যাত্রীর কাছে আসল স্বর্ণ হিসেবে বিক্রি করে সটকে পড়েন। রংপুরে এমন প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহ আলম, এশাহকের ছেলে এনায়েত। তাঁদের কাছ থেকে একটি নকল স্বর্ণের বিস্কুট ও একটি অটোরিকশা জব্দ করা হয়।
আজ শুক্রবার সকাল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা–পুলিশ। পুলিশ বলছে, তাঁরা দুজনেই দীর্ঘদিন থেকে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ জানায়, শাহ আলম ও এনায়েত দুজনই বন্ধু। এনায়েত অটোচালক ও শাহ আলম সেই অটোর যাত্রী হয়ে বিভিন্ন শহরের ঘুরেন। অটোয় কোনো যাত্রী উঠলে শাহ আলম সেই যাত্রীর সামনে কাগজে মোড়ানো নকল স্বর্ণের বিস্কুট কৌশলে ফেলে দেন। ফাঁকা জায়গায় নেমে যাওয়ার সময় সেই স্বর্ণের বিস্কুট তিনি নিজেই তুলে যাত্রীকে দেখান।
যাত্রী সেটাকে স্বর্ণ হিসেবে নিশ্চিত করলে শাহ আলম যাত্রীকে জানান, তিনি গরিব মানুষ। স্বর্ণের বিস্কুট দিয়ে কী করবে, কোথায় বিক্রি করবে। এ জন্য তিনি স্বর্ণের বিস্কুটটি যাত্রীকে কিনে নিতে বলেন। এরপর সেটি যাত্রী সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকায় কিনে নিলে টাকা নিয়ে সটকে পড়েন শাহ আলম। পরে যাত্রীকে গন্তব্য নেমে দিয়ে দুজনে এক হয়ে সেই টাকা ভাগ করে নেন।
আজ শুক্রবার সকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড় এলাকায় এমন ঘটনার গোপন সংবাদ পান তাজহাট থানা-পুলিশ। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য শাহ আলম ও এনায়েতকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম সরদার বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি পার্কের মোড় এলাকায় দুজন সোনার বার বিক্রি করতে এসেছে। আমরা এসে তাদের ধরার পর দেখি সেটি নকল সোনার বার। এরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।’
ওসি বলেন, ‘যাত্রী সেজে স্বর্ণ বলে বিক্রি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল তারা। এ ঘটনায় একটি নকল স্বর্ণের বার, একটি অটো জব্দ করে প্রতারকদের থানায় আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’