রাতে খাওয়া–দাওয়া শেষে আবু রায়হান মো. মিজানুর রহমান ও স্ত্রী মোর্শেদা বেগম সুইটি ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে প্রাচীর টপকে বাড়িতে ঢুকে ডাকাত দল। বিষয়টি টের পেলে ডাকাত দল এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে মোর্শেদা বেগমের মাথায় আঘাত করে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। আবু রায়হানকে ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও জমির দলিল ছিনিয়ে নেয়। গত ৭ ফেব্রুয়ারি রংপুরের মিঠাপুকুরের বড়বালা ইউনিয়নের শালিকাদহ গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
চার মাস পর ওই ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার জাকির হোসেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ মাদরাসাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
আজ শনিবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. তরিকুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের শালিকাদহ গ্রামে আবু রায়হান মো. মিজানুর রহমানের বাড়িতে একটি হত্যাসহ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। মুখোশধারী ৬-৭ জনের একটি দল বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারধর করে মিজানুরের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম সুইটির (৩২) মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে।
এ সময় ডাকাত দল মিজানুরকে মারধর ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, মোবাইল, নগদ টাকা, জমির দলিলসহ চার লাখ ৩৪ হাজার টাকার মাল লুট করে নিয়ে যায়। পরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি মিঠাপুকুর থানায় ভুক্তভোগী মামলা দায়ের করেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা দায়েরের ছয় দিনের মাথায় অভিযান চালিয়ে হত্যাসহ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দুই আসামি এবং পরবর্তীতে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যার মধ্যে তিনজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার প্রধান আসামি দুর্ধর্ষ ডাকাত জাকির হোসেন ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে ছিলেন। চার মাস পর তদন্তকারী কর্মকর্তা নূর আলম সিদ্দিকের চেষ্টায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ গ্রেপ্তার জাকিরের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ ও নবাবগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের নয়টি মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।