টিসিবির পণ্যের সংকট, খালি হাতে ফেরত গেলেন ২ ইউনিয়নের ৭ হাজার মানুষ

এস. এম. রকি, খানসামা (দিনাজপুর) 
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৪, ২১: ২০

সংকট থাকায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য না পেয়ে প্রায় ৭ হাজার মানুষ খালি হাতে ফেরত গেছেন। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়ন ও খামারপাড়া ইউনিয়নে আজ শনিবার এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে আংগারপাড়া ইউনিয়নের ৩৪৩০ জন এবং খামারপাড়া ইউনিয়নের ৩২৭৫ জন কার্ডধারী খালি হাতে ফেরত যান। 

টিসিবির পণ্য সরবরাহকারী দুই প্রতিষ্ঠান মনিরা ট্রেডার্স ও মুহিত ট্রেডার্স বলছে, সংকট থাকায় নির্ধারিত সময়ে পণ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

জানা গেছে, টিসিবি থেকে ফ্যামিলি কার্ড অনুযায়ী প্রতি মাসে ডিলারের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হয়। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকার ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্য সরবরাহ করে ।

আজ শনিবার সকালে খামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ ও ১৫ জুন খামারপাড়া ইউনিয়ন এবং ১৫ ও ১৬ জুন আংগারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবি কার্ডধারীদের ৫ কেজি চাল, ২ লিটার তেল ও ২ কেজি মসুর ডাল ৪৭০ টাকায় দেওয়ার কথা। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এসে টিসিবির পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যান কার্ডধারীরা। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। 

বোর্ডেরহাট এলাকার রবিউল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলছিল আজকে টিসিবি পণ্য দেবে। তাই নিতে আসলাম। কিন্তু এসে শুনি মাল নাকি আজকে দেবে না। ঈদের আগে খবর দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে খামারপাড়া ইউনিয়নে টিসিবি পণ্য সরবরাহকারী মনিরা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী বাইজিত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঈদের আগে টিসিবি পণ্য বিতরণের জন্য পণ্য উত্তোলন বাবদ টাকা ডিও করেছি। কিন্তু গত সপ্তাহে পণ্য বিতরণ করতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যানরা বলেন যে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে লোকজনের সমাগম থাকায় পড়ে বিতরণ করতে। 

তিনি আরও বলেন, এতে পণ্য উত্তোলন দেরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পণ্য উত্তোলন করতে গিয়ে সয়াবিন তেল সংকট দেখা দেয়। যে কারণে পণ্য উত্তোলন না করায় ঈদের আগে আর বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ ও ১৫ জুন টিসিবি পণ্য বিতরণের কথা প্রচার করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী কার্ডধারীরা পণ্য নিতে আসছে কিন্তু পণ্য না আসায় তাদের হাতে টিসিবি পণ্য তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত ঈদুল ফিতরেও এমন হয়েছে। এতে টিসিবি পণ্য নিতে এসে মানুষ ফেরত যাওয়ায় চেয়ারম্যানের প্রতি ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। 

টিসিবি দিনাজপুর ক্যাম্প অফিসের সহকারী পরিচালক (অফিস প্রধান) মো. মাহমুদুল হাসানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। 

খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, টিসিবি কার্ডধারীদের মধ্যে পণ্য বিতরণে উপজেলা প্রশাসনের দিক থেকে কোনো গ্যাপ ছিল না। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেবদের আরও অধিক তৎপরতা থাকলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত। পণ্য না পেয়ে ফেরত যাওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত