রংপুরে ৬৮ ভাগ কিশোরী বাল্যবিবাহের শিকার

রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ৩২

রংপুর বিভাগে বাল্যবিবাহের হার ৬৮ ভাগ, যা দেশের জাতীয় গড়ের বেশি। শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। দারিদ্র্যতা, নিরাপত্তাহীনতা, সামাজিক সচেতনতার অভাবে এই অঞ্চলে বাল্যবিবাহ কমছে না। ফলে শিশু মৃত্যু ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
আজ মঙ্গলবার রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্সের হলরুমে আরডিআরএস বাংলাদেশের জননী প্রকল্পের আয়োজনে ‘বাল্যবিয়ের পরিণতি ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সরকারি–বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, কাজী, ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
সভায় প্রকল্পের গভর্নমেন্ট রিলেশন অ্যান্ড কমিউনিটি মোবিলাইজেন অফিসার মাহাবুব আলম জানান, বাংলাদেশের বাল্যবিবাহের হার ৫০ ভাগ হলেও রংপুর বিভাগে ৬৮ ভাগ, যা দেশের জাতীয় গড়ের বেশি। বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায়। রংপুরে ৫৩ দশমিক ৮ ভাগ আর লালমনিরহাটে ৫২ দশমিক ৬ ভাগ।
 
এর মধ্যে বিভাগে ১৬ বছরের আগে বাল্যবিবাহের হার ৩৮ ভাগ, রংপুরে ২৫ ভাগ ও লালমনিরহাটে ১৯ দশমিক ৭ ভাগ। এরমধ্যে রংপুর শহরাঞ্চলে ৪০ ভাগ ও গ্রামাঞ্চলে ৫৬ ভাগ এবং লালমনিরহাটে এ হার সমান।
 
তিনি আরও জানান, রংপুর বিভাগের এই দুই জেলায় বাল্যবিবাহ বেশি হওয়ার কারণ ও প্রভাব হিসেবে উল্লেখ্য করা হয়, দারিদ্র্যতা, বাল্যবিবাহ সাংস্কৃতিকভাবে গৃহীত, কমিউনিটি ও স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকরী যোগসূত্রের অভাব, ভৌগোলিক অবস্থান, নিরাপত্তাজনিত কারণ এবং সামাজিক সচেতনতার অভাব।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা বলেন, ‘বাল্যবিবাহের ফলে একজন শিশু পেটে আরেকটি শিশু চলে আসে। এর ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। ফলে অপুষ্টি, জরায়ু ক্যানসার, শিশু মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সব সময় বাল্যবিয়ের কুফল তুলে ধরে উঠান বৈঠক ও সভা–সেমিনার করছি।’
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, ‘কাজী, জনপ্রতিনিধিরা যদি ইচ্ছে করেন, তাহলে একটিও বাল্যবিবাহ হবে না। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমাদের অভিযান চালু রয়েছে। যত রাতই হোক খবর পেলে আমরা সেখানে ছুটে গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করছি। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার আছি। প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে এগিয়ে এসে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত