আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
‘হামরা গরিব মানুষ বাঁচলেই কী আর মরলেই কী? দেশোত চাল-ডাল-তেল সবকিছুতে আগুন লাগছে। দেশোত লাফায় লাফায় জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু করছে সরকার। আর কত দাম বাড়াইবে। একবারও কি হামার মতো গরিব মানুষের কথা চিন্তা করেন না সরকার!’—এভাবেই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন রংপুরের গঙ্গাচড়া বাজারে আসা ভ্যানচালক বরকত উল্লাহ।
বরকত উল্লাহ জানান, বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ সাত সদস্যের পরিবার তাঁর। তিনিই একমাত্র পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তি। তাঁর ওপর পরিবারের সবার দায়িত্বভার রয়েছে। কয়েক মাস আগে তাঁর সংসার মোটামুটি ভালোই চলত। কিন্তু এখন সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেও ৩০০ টাকা আয় করে তার সংসার মোটামুটি ভালো চলত। কিন্তু এখন নিত্যপণ্যের লাগামহীন বাজারদরের কারণে পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারছেন না।
বরকত উল্লাহ আরও বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম এমনিতেই বাড়ছে। তার ওপর আবার কারেন্ট থাকে না। আমার একমাত্র আয়ের উৎস ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যান। কারেন্ট না থাকলে অটো ভ্যানটিতে ঠিকমতো চার্জ দিতে পারি না। যদিও কোনো রকমে কয়েক ঘণ্টা চার্জ হয়, তা দিয়ে দু-তিন ঘণ্টা চালাতে না চালাতেই ভ্যানের চার্জ শ্যাষ হয়া যায়। দিনরাত মিলি কারেন্ট থাকে খালি পাঁচ-ছয় ঘণ্টা। এই খালি যায় আর এই আইসে। আজ সারা দিন মিলি চার ঘণ্টা ভ্যান চালায়ে কামাই হইছে মাত্র ২০০ টাকা। এই ২০০ টাকায় চাল-ডাল-তেল সবকিছুই কেনা লাগবে। বাজারে ঢুকতিই শুনলাম সয়াবিন ত্যালের দাম নাকি আরও বাড়াইছে। ব্যাগ হাতে বাজারে ঢুকতেই মোর মাথা ধরেছে, ২০০ টাকা দিয়ে কিবা কিনমু।’
একই কথা বলেন কোলকোন্দ মাটিয়াল দোলাপাড়া গ্রাম থেকে মন্থানা বাজারে বাজার করতে আসা দিনমজুর মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সারা দিন ধানখেতে নিরানির কাজ করি পানু ৩০০ টাকা। তা নিয়া আসনু বাজারোত। বাজারে আসার আগে বাড়িআলী (স্ত্রী) যতগুলা খরচ বাতাইছে (বলছে), খালি চাল কিননু তিন কেজি আর সয়াবিন এক পোয়া। আর যে টাকা থাকিল, তা দিয়া বাকি বাজার কী করি কিনিমু সেই চিন্তা করোং চোল (করতেছি)। আবার ছোট ব্যাটাটার (ছেলেটার) জ্বর, ওষুধ কেনা লাগবে।’
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘বাড়ির বউ কয় খরচ এত কম কেন? তারা তো আর বুঝে না বাজারের কী অবস্থা। হামার কামলা মানুষের মরণদশা হইছে। দেশোত যে কী শুরু হইছে? তার কিছুই বোঝা যায় না। এভাবে চললে হামরা কামলা মানুষ কেমন করি সংসার চালামু? চাকরিজীবীর বেতন বাড়াইছে, ওমারগুলার তো আর কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু হামরাগুলা তো কামলা মানুষ, হামরাগুলো তো আর বেতন-ভাতা কিছু নাই। হামরা কাম করলে টাকা পাই, না করলে নাই। এখন না হয় কাম আছে কাম করি, কয়টা টাকা পাই। তাই দিয়া কোনো রকমে টানাটানি করি বাজার সদায় করি। যখন কাজ-কাম থাকব্যার না, তখন কেমন করে সংসার চালামু? এভাবে আর কয়দিন বা চলবে? আজকে যদি অসুস্থ হই, ওষুধ কিনব তারও টাকা নাই বাড়িত। যা কামাই করি তা বাজারের পেছনে খরচ হয়। এইভাবে কি চলা যাবে? হামার কামলা মাইনষ্যের একটেও ভালো নাই।’
গঙ্গাচড়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমাদের আগের থেকে বিক্রি অনেক কমে গেছে। যেখানে আগে মানুষ কিনত এক কেজি, এখন সেখানে কিনতেছে হাফ কেজি অথবা এক পোয়া। করার কিছু নাই, সবকিছুতেই দাম বেশি। আমাদেরও বেশি দাম দিয়ে মালামাল কিনতে হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে যে মোটা চালের বস্তা ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, সেই বস্তা আমাদের কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। যেখানে চিকন চাল ছিল ২ হাজার ৪০০ টাকা বস্তা, সেখানে কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। মসুর ডাল ছিল ৯০ টাকা, এখন কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। সয়াবিন ১৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯২ টাকা এবং প্রতিটি সাবানে বেড়েছে ১০ টাকা করে। সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় ব্যবসা করে কোনো লাভ হচ্ছে না।’
মন্থানা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী লিজু মিয়া বলেন, ‘মোকামে দাম বাড়াইলে তো হামার (আমার) করার কিছু নাই। কয়েক দিন থাকি (থেকে) কিছুটা স্থির আছে। কাঁচামাল কখন কোন দাম হইবে (হবে) তা বলা যায় না। যখন মোকামে বেশি দাম থাকে, তখন আমরা বেশি দামে কিনি, বেশি দামে বেচাই। আর যখন কম দামে কিনুন, কম দামে বেচাই।
‘হামরা গরিব মানুষ বাঁচলেই কী আর মরলেই কী? দেশোত চাল-ডাল-তেল সবকিছুতে আগুন লাগছে। দেশোত লাফায় লাফায় জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু করছে সরকার। আর কত দাম বাড়াইবে। একবারও কি হামার মতো গরিব মানুষের কথা চিন্তা করেন না সরকার!’—এভাবেই আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন রংপুরের গঙ্গাচড়া বাজারে আসা ভ্যানচালক বরকত উল্লাহ।
বরকত উল্লাহ জানান, বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী ও তিন সন্তানসহ সাত সদস্যের পরিবার তাঁর। তিনিই একমাত্র পরিবারের কর্মক্ষম ব্যক্তি। তাঁর ওপর পরিবারের সবার দায়িত্বভার রয়েছে। কয়েক মাস আগে তাঁর সংসার মোটামুটি ভালোই চলত। কিন্তু এখন সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেও ৩০০ টাকা আয় করে তার সংসার মোটামুটি ভালো চলত। কিন্তু এখন নিত্যপণ্যের লাগামহীন বাজারদরের কারণে পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারছেন না।
বরকত উল্লাহ আরও বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম এমনিতেই বাড়ছে। তার ওপর আবার কারেন্ট থাকে না। আমার একমাত্র আয়ের উৎস ব্যাটারিচালিত অটো ভ্যান। কারেন্ট না থাকলে অটো ভ্যানটিতে ঠিকমতো চার্জ দিতে পারি না। যদিও কোনো রকমে কয়েক ঘণ্টা চার্জ হয়, তা দিয়ে দু-তিন ঘণ্টা চালাতে না চালাতেই ভ্যানের চার্জ শ্যাষ হয়া যায়। দিনরাত মিলি কারেন্ট থাকে খালি পাঁচ-ছয় ঘণ্টা। এই খালি যায় আর এই আইসে। আজ সারা দিন মিলি চার ঘণ্টা ভ্যান চালায়ে কামাই হইছে মাত্র ২০০ টাকা। এই ২০০ টাকায় চাল-ডাল-তেল সবকিছুই কেনা লাগবে। বাজারে ঢুকতিই শুনলাম সয়াবিন ত্যালের দাম নাকি আরও বাড়াইছে। ব্যাগ হাতে বাজারে ঢুকতেই মোর মাথা ধরেছে, ২০০ টাকা দিয়ে কিবা কিনমু।’
একই কথা বলেন কোলকোন্দ মাটিয়াল দোলাপাড়া গ্রাম থেকে মন্থানা বাজারে বাজার করতে আসা দিনমজুর মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সারা দিন ধানখেতে নিরানির কাজ করি পানু ৩০০ টাকা। তা নিয়া আসনু বাজারোত। বাজারে আসার আগে বাড়িআলী (স্ত্রী) যতগুলা খরচ বাতাইছে (বলছে), খালি চাল কিননু তিন কেজি আর সয়াবিন এক পোয়া। আর যে টাকা থাকিল, তা দিয়া বাকি বাজার কী করি কিনিমু সেই চিন্তা করোং চোল (করতেছি)। আবার ছোট ব্যাটাটার (ছেলেটার) জ্বর, ওষুধ কেনা লাগবে।’
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘বাড়ির বউ কয় খরচ এত কম কেন? তারা তো আর বুঝে না বাজারের কী অবস্থা। হামার কামলা মানুষের মরণদশা হইছে। দেশোত যে কী শুরু হইছে? তার কিছুই বোঝা যায় না। এভাবে চললে হামরা কামলা মানুষ কেমন করি সংসার চালামু? চাকরিজীবীর বেতন বাড়াইছে, ওমারগুলার তো আর কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু হামরাগুলা তো কামলা মানুষ, হামরাগুলো তো আর বেতন-ভাতা কিছু নাই। হামরা কাম করলে টাকা পাই, না করলে নাই। এখন না হয় কাম আছে কাম করি, কয়টা টাকা পাই। তাই দিয়া কোনো রকমে টানাটানি করি বাজার সদায় করি। যখন কাজ-কাম থাকব্যার না, তখন কেমন করে সংসার চালামু? এভাবে আর কয়দিন বা চলবে? আজকে যদি অসুস্থ হই, ওষুধ কিনব তারও টাকা নাই বাড়িত। যা কামাই করি তা বাজারের পেছনে খরচ হয়। এইভাবে কি চলা যাবে? হামার কামলা মাইনষ্যের একটেও ভালো নাই।’
গঙ্গাচড়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমাদের আগের থেকে বিক্রি অনেক কমে গেছে। যেখানে আগে মানুষ কিনত এক কেজি, এখন সেখানে কিনতেছে হাফ কেজি অথবা এক পোয়া। করার কিছু নাই, সবকিছুতেই দাম বেশি। আমাদেরও বেশি দাম দিয়ে মালামাল কিনতে হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে যে মোটা চালের বস্তা ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, সেই বস্তা আমাদের কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। যেখানে চিকন চাল ছিল ২ হাজার ৪০০ টাকা বস্তা, সেখানে কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। মসুর ডাল ছিল ৯০ টাকা, এখন কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। সয়াবিন ১৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৯২ টাকা এবং প্রতিটি সাবানে বেড়েছে ১০ টাকা করে। সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় ব্যবসা করে কোনো লাভ হচ্ছে না।’
মন্থানা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী লিজু মিয়া বলেন, ‘মোকামে দাম বাড়াইলে তো হামার (আমার) করার কিছু নাই। কয়েক দিন থাকি (থেকে) কিছুটা স্থির আছে। কাঁচামাল কখন কোন দাম হইবে (হবে) তা বলা যায় না। যখন মোকামে বেশি দাম থাকে, তখন আমরা বেশি দামে কিনি, বেশি দামে বেচাই। আর যখন কম দামে কিনুন, কম দামে বেচাই।
নিজেদের অবস্থান জানান দিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদসহ আশপাশের সড়কে বড় জমায়েত করে গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামায়াতের সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে যাওয়ার আগে আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যায় আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে রুকু আক্তার নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়
৫ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত বুধবার উদ্ধার হওয়া খণ্ডবিখণ্ড লাশটি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২)। তিনি ফতুল্লার চাঁদ ডাইং ফ্যাক্টরির মালিক। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় রুমা আক্তার নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৫ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
৬ ঘণ্টা আগে