ফুলবাড়ীতে বিএনপির বর্ধিত সভায় দুই পক্ষের হট্টগোল, হাতাহাতি

দিনাজপুর ও ফুলবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৮: ২৭

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে দলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন কর্মী সামান্য আহত হন। 

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভাস্থলে এ ঘটনা ঘটে। 

দলীয় নেতাকর্মীদের কয়েকজন জানায়, বর্ধিত সভা ঘিরে সকাল থেকে উপজেলা চত্বর ও শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় জড়ো থাকেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির দুটি গ্রুপের একটির নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি। 

অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিমতলা মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে বর্ধিত সভাস্থলে আসছিলেন। আগে থেকেই সভাস্থলে অবস্থান করছিলেন শাহাজুল ইসলামের সমর্থকেরা। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির শুরু হয়। পরে এটি রূপ নেয় ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে। 

বর্ধিত সভায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহাম্মেদ চৌধুরী খোকনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম (মতি), জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি, সিনিয়র সহসভাপতি মোকাররম হোসেন, সহসভাপতি খালেকুজ্জামান বাবু, সহসভাপতি মাহবুব আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান বাদশা ও আমিনুল ইসলাম মুন্না প্রমুখ। আমন্ত্রিত অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে বর্ধিত সভার ফেস্টুন পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা সভা শেষে উপজেলা বিএনপির নির্যাতিত এবং মামলার স্বীকার ২১ নেতাকর্মীকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ সংবর্ধনা দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক। 

জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেক কষ্ট ও ক্ষোভ জমা আছে। আজকে সভাকে কেন্দ্র করে একটু আধটু হই হুল্লোড় হয়েছে। তবে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল দল। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা পরিচালনা করছি।’ 

ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুজ্জামান জানান, প্রথম দিকে একটু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছিল। পরে পরিবেশ স্বভাবিক হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে সভা শেষ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি খুরশিদ আলম মতিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। খুরশিদ আলম ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। 

তখন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খুরশিদ আলম মতিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। পরে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করা হয়। কিন্তু তার তিন দিন পর ১০ অক্টোবর তাঁর সভাপতি পদ স্থগিত করে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ বহাল করা হয়। 

সবশেষে বিগত জেলা বিএনপির কাউন্সিলে তাঁকে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা করা হয়। এরপর থেকে উপজেলা বিএনপি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পৃথকভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত