রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীই কলেজ অধ্যক্ষ মো. সেলীম রেজাকে মারধর করেছেন। অধ্যক্ষ নিজেই এক ব্যক্তির কাছে মারধরের সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। আর তাঁদের দুজনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী গত ৭ জুলাই তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনা জানাজানি হলে সারা দেশে নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ১৪ জুলাই অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে নিয়ে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওমর ফারুক চৌধুরী।
সেখানে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা দাবি করেন, এমপি তাঁকে মারধর করেননি। আর গোদাগাড়ীর মাটিকাটা কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল রাজু দাবি করেন, এমপি নন, তিনিই এমপির সামনে সেলীম রেজাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। এতে আলমারিতে ধাক্কা লেগে তিনি আহত হয়েছেন। অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন ও টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ ঘটনা।
সংবাদ সম্মেলনে এমপি ফারুক চৌধুরী দাবি করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনিই রটাচ্ছেন যে এমপি অধ্যক্ষকে মারধর করেছেন।
এমপির এই বক্তব্যের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে নগরীর লক্ষ্মীপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন, ‘এমপির হাতে মারধরের শিকার হয়ে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা তাঁকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ সময় তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে অধ্যক্ষের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড বাজিয়ে শোনান।’
কার সঙ্গে এই কথা হচ্ছে জানতে চাইলে আসাদ বলেন, ‘সেটা এখন বলছি না।’
অডিওতে শোনা যাচ্ছে, অধ্যক্ষ অন্যজনকে বলছেন, সেদিন এমপির অফিসে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল রাজু অন্য অধ্যক্ষদের ডেকেছিলেন। যার সঙ্গে কথোপকথন, সেই ব্যক্তি অধ্যক্ষকে প্রশ্ন করেন, তারপরে আপনি গেলেন? অধ্যক্ষ বলেন, হ্যাঁ গেলাম। আমি তো এমনি যাই না, ডাকলে যাই। অন্যরা সাত দিনে তিন দিনই দেখা করে। আমি আর চব্বিশনগরের প্রিন্সিপাল হাবিব ভাই না ডাকলে, কোনো মিটিং না হলে যাই না। এটাও আবার রাগ। সেদিনও আমি আর হাবিব ভাই একসঙ্গে গেছি। এই দুইটা লোক ছাড়া ভাই সবাই ওর (এমপির) পা চাটা।
অন্য ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ওখানে যাওয়ার পরে? অধ্যক্ষ বলেন, ‘ওখানে যাওয়ার পরে বিড়ইলের মজিবর ছিল। ওই যে স্কুল এমপিওভুক্ত হলো। ওরা ফুলটুল নিয়ে গেছে। ওখানে সেক্রেটারি রশিদ ভাই (গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ) ছিল। ওরা বেরিয়ে আসল। আমরা বসে ছিলাম। পাঁচ-সাত মিনিট। তারপরে রশিদ ভাইয়ের সঙ্গে হ্যান্ডশেক হলো। কথাবার্তা হলো। ওটা ওমর প্লাজার পূর্ব পাড়ে।’
‘তখন রাজু এসে বলছে, এই এমপি উঠে যাবে। ঢোকেন, ঢোকেন, ঢোকেন। সব ঢুকে গেলাম। ঢুকতেই প্রথম কথা। আমাকে বলছে—সেলীম, তোমার কলেজে কী হয়েছে? আমি বলছি, কই স্যার? কিছু তো হয়নি। তখনই গালি (প্রকাশের অযোগ্য)। তোর অফিসে বসে আমার নামে, রাজুর পরিবার নিয়ে, আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলিস, টিচাররা কথা বলে। তুই আমাকে না বলে, ওই টিচারদের বিচার না করে... এই উঠে এসেই মনে করেন যে কিল, ঘুষি, লাথি।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘বারবার উঠছে-বসছে, মারছে। হকিস্টিক নিয়ে আসছে। পর্দা টেনে দিল। প্রিন্সিপালকে দিয়েই পর্দা টানাইছে। রাজু পর্দা টেনে দিল। দিয়ে বলছে, এই হকিস্টিক নিয়ে আয়। শালাকে হকিস্টিক দিয়ে মেরেই ফেলব। শালাকে আজ মেরেই ফেলব, শালা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে। শালা বসে জস ল্যাও? তো আমি তো নিজেই জানি না কখন এটা রেকর্ড হয়েছে, কী কথা হয়েছে।’
অন্য ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘কোন টিচার রেকর্ড করেছিল, ওটার কী নাম?’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম। এ আবার একজনকে চাকরি দিবে বলে ৩-৪ লাখ টাকা নিয়েছিল। রাজাবাড়ীর জনি। জনির কাছ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছে। হাঁস-মুরগিসহ দেড় লাখ টাকার জিনিস নিয়েছে যে রাজাবাড়ী কলেজে তাকে পিয়নের চাকরি দিবে, ঢাকায় এগুলো পাঠাতে হবে। জনি গত ১৯ তারিখে একটা দরখাস্ত দেয়—স্যার, সিরাজ স্যার আমার টাকা নিয়েছে। আপনি এটার বিচার করে দেন। আমাকে আর সভাপতিকে। এই সিরাজকে তখন আমি বলি, এই যে জনি আপনার নামে লিখিত দিয়েছে, এটা বাইরে বাইরেই আপনি মিটআপ করে ফেলেন। তা না হলে আমি গভর্নিং বডিতে তুলব। এ ঘটনার আগেই কিন্তু ওই রেকর্ডিংগুলো করে রাজুকে দিয়ে দিয়েছে আমাকে ও টিচারদের ফাঁসানোর জন্যে।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি ওই টিচারদের বিচার করলাম না কেন? কিন্তু আমি তো জানিই না ওটা রেকর্ড হয়েছে। এখন আমরা পাঁচজন বসলে একটা কথা হয় না? বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ নিয়ে হতে পারে। কোনো ব্যক্তি নিয়ে হতে পারে। এর মধ্যেই যদি কেউ রেকর্ডিং করে নিয়ে চলে যায়, ওখানে যে প্রধান বসে আছে, সে কি বুঝতে পারবে? এই হচ্ছে এই।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ও (সিরাজুল ইসলাম) এটা দেখে ৩০ তারিখে জনির ৮০ হাজার টাকা শোধ করেছে। ও গিয়ে আবার রাজুকে (অধ্যক্ষ রাজু) বলেছে, আপনাদের উপকারের জন্য এই রেকর্ডিংগুলো দিয়েছি। কিন্তু প্রিন্সিপাল মহোদয় এ কারণে আমাকে শোকজ করেছে।’
অচেনা ব্যক্তিটি তখন বলেন, ‘তাহলে ওগুলো আলোচনা না, আলোচনা আপনাকে মারা?’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘হ্যাঁ মারা।’ ওই ব্যক্তি জানতে চান, প্রিন্সিপালদের ভূমিকা? সেলীম রেজা বলেন, ‘কোনো ভূমিকা না, আমাকে বলছে—মাফ নেন, মাফ নেন। তো আমি কীসের মাফ নিব? তার পরও বললাম, তো স্যার, আমি তো জানি না, যদি আমার টিচাররা ভুল করে থাকে, আর হবে না। এই ‘যদি’ লাগিয়েছি দেখে আরও রাগ। উঠে আবার মাইর। প্রায় ১০ মিনিট।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘সোহেল (দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল) এসে আমাকে বলছে, ভাই, আপনাকে নিয়ে যাই। তো আমি বলেছি যাব না। একবার গিয়ে মাইর খেলাম। যেটা হওয়ার হয়েই গেছে। ও পারলে আমার চাকরি খেয়ে লিক গ্যা। আর যদি আরও মারতে চায়, আমার বাসায় এসে মেরে যাবে। আমার কলেজে যাইয়া আমাকে মেরে চলে আসবে। ঠিক আছে? আমার চাকরি খাইয়া লিবে? খাইয়া লিক গ্যা।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘বিকালে প্রিন্সিপালরা এসেছিল আমার খোঁজ নিতে। তারা বলছে—স্যার, যা হওয়ার হয়েছে, আর মাইরেন না। এটা তারা নাকি যাইয়া বলেছে। আমি সকালে আবার শিবলীকে (অন্য কলেজের অধ্যক্ষ) জিজ্ঞেস করলাম। শিবলী বলছে, তার রাগ কমেনি। টিচারদের ওপরেও রাগ আছে। তাদেরও মারবে এ রকম। আমি বলছি, কোনো দরকার নাই। আপনারা আপনাদের মতো থাকেন। আমাকে আমার মতো থাকতে দেন। আমাকে ডাকলেও আর যাব না। তাতে ওর ক্ষমতা থাকলে আমার চাকরি খেয়ে লিবে।’
এই কথোপকথনের বিষয়ে জনতে শনিবার সকালে অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে দুবার ফোন করা হলে প্রতিবারই তিনি ফোন না ধরে কেটে দিয়েছেন। দুপুরে তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে অধ্যক্ষকে পেটানোর ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার থেকেই সরেজমিনে তদন্ত করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। শনিবার কমিটির প্রধান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন বলেন, ‘বিষয়টা আমরা সিরিয়াসলি তদন্ত করছি। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আমরা কাজ করছি।’
এ পর্যন্ত তদন্তে কী পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলছি না। তবে এটুকু বলতে পারি, তদন্ত প্রতিবেদনে ভালো কিছুই উঠে আসবে। সঠিক বিষয়টা থাকবে।’
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীই কলেজ অধ্যক্ষ মো. সেলীম রেজাকে মারধর করেছেন। অধ্যক্ষ নিজেই এক ব্যক্তির কাছে মারধরের সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। আর তাঁদের দুজনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী গত ৭ জুলাই তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনা জানাজানি হলে সারা দেশে নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ১৪ জুলাই অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে নিয়ে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওমর ফারুক চৌধুরী।
সেখানে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা দাবি করেন, এমপি তাঁকে মারধর করেননি। আর গোদাগাড়ীর মাটিকাটা কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল রাজু দাবি করেন, এমপি নন, তিনিই এমপির সামনে সেলীম রেজাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। এতে আলমারিতে ধাক্কা লেগে তিনি আহত হয়েছেন। অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন ও টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ ঘটনা।
সংবাদ সম্মেলনে এমপি ফারুক চৌধুরী দাবি করেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। তিনিই রটাচ্ছেন যে এমপি অধ্যক্ষকে মারধর করেছেন।
এমপির এই বক্তব্যের প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে নগরীর লক্ষ্মীপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন, ‘এমপির হাতে মারধরের শিকার হয়ে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা তাঁকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ সময় তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে অধ্যক্ষের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড বাজিয়ে শোনান।’
কার সঙ্গে এই কথা হচ্ছে জানতে চাইলে আসাদ বলেন, ‘সেটা এখন বলছি না।’
অডিওতে শোনা যাচ্ছে, অধ্যক্ষ অন্যজনকে বলছেন, সেদিন এমপির অফিসে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল রাজু অন্য অধ্যক্ষদের ডেকেছিলেন। যার সঙ্গে কথোপকথন, সেই ব্যক্তি অধ্যক্ষকে প্রশ্ন করেন, তারপরে আপনি গেলেন? অধ্যক্ষ বলেন, হ্যাঁ গেলাম। আমি তো এমনি যাই না, ডাকলে যাই। অন্যরা সাত দিনে তিন দিনই দেখা করে। আমি আর চব্বিশনগরের প্রিন্সিপাল হাবিব ভাই না ডাকলে, কোনো মিটিং না হলে যাই না। এটাও আবার রাগ। সেদিনও আমি আর হাবিব ভাই একসঙ্গে গেছি। এই দুইটা লোক ছাড়া ভাই সবাই ওর (এমপির) পা চাটা।
অন্য ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ওখানে যাওয়ার পরে? অধ্যক্ষ বলেন, ‘ওখানে যাওয়ার পরে বিড়ইলের মজিবর ছিল। ওই যে স্কুল এমপিওভুক্ত হলো। ওরা ফুলটুল নিয়ে গেছে। ওখানে সেক্রেটারি রশিদ ভাই (গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ) ছিল। ওরা বেরিয়ে আসল। আমরা বসে ছিলাম। পাঁচ-সাত মিনিট। তারপরে রশিদ ভাইয়ের সঙ্গে হ্যান্ডশেক হলো। কথাবার্তা হলো। ওটা ওমর প্লাজার পূর্ব পাড়ে।’
‘তখন রাজু এসে বলছে, এই এমপি উঠে যাবে। ঢোকেন, ঢোকেন, ঢোকেন। সব ঢুকে গেলাম। ঢুকতেই প্রথম কথা। আমাকে বলছে—সেলীম, তোমার কলেজে কী হয়েছে? আমি বলছি, কই স্যার? কিছু তো হয়নি। তখনই গালি (প্রকাশের অযোগ্য)। তোর অফিসে বসে আমার নামে, রাজুর পরিবার নিয়ে, আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলিস, টিচাররা কথা বলে। তুই আমাকে না বলে, ওই টিচারদের বিচার না করে... এই উঠে এসেই মনে করেন যে কিল, ঘুষি, লাথি।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘বারবার উঠছে-বসছে, মারছে। হকিস্টিক নিয়ে আসছে। পর্দা টেনে দিল। প্রিন্সিপালকে দিয়েই পর্দা টানাইছে। রাজু পর্দা টেনে দিল। দিয়ে বলছে, এই হকিস্টিক নিয়ে আয়। শালাকে হকিস্টিক দিয়ে মেরেই ফেলব। শালাকে আজ মেরেই ফেলব, শালা আমার বিরুদ্ধে কথা বলে। শালা বসে জস ল্যাও? তো আমি তো নিজেই জানি না কখন এটা রেকর্ড হয়েছে, কী কথা হয়েছে।’
অন্য ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘কোন টিচার রেকর্ড করেছিল, ওটার কী নাম?’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম। এ আবার একজনকে চাকরি দিবে বলে ৩-৪ লাখ টাকা নিয়েছিল। রাজাবাড়ীর জনি। জনির কাছ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছে। হাঁস-মুরগিসহ দেড় লাখ টাকার জিনিস নিয়েছে যে রাজাবাড়ী কলেজে তাকে পিয়নের চাকরি দিবে, ঢাকায় এগুলো পাঠাতে হবে। জনি গত ১৯ তারিখে একটা দরখাস্ত দেয়—স্যার, সিরাজ স্যার আমার টাকা নিয়েছে। আপনি এটার বিচার করে দেন। আমাকে আর সভাপতিকে। এই সিরাজকে তখন আমি বলি, এই যে জনি আপনার নামে লিখিত দিয়েছে, এটা বাইরে বাইরেই আপনি মিটআপ করে ফেলেন। তা না হলে আমি গভর্নিং বডিতে তুলব। এ ঘটনার আগেই কিন্তু ওই রেকর্ডিংগুলো করে রাজুকে দিয়ে দিয়েছে আমাকে ও টিচারদের ফাঁসানোর জন্যে।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি ওই টিচারদের বিচার করলাম না কেন? কিন্তু আমি তো জানিই না ওটা রেকর্ড হয়েছে। এখন আমরা পাঁচজন বসলে একটা কথা হয় না? বিএনপি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ নিয়ে হতে পারে। কোনো ব্যক্তি নিয়ে হতে পারে। এর মধ্যেই যদি কেউ রেকর্ডিং করে নিয়ে চলে যায়, ওখানে যে প্রধান বসে আছে, সে কি বুঝতে পারবে? এই হচ্ছে এই।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ও (সিরাজুল ইসলাম) এটা দেখে ৩০ তারিখে জনির ৮০ হাজার টাকা শোধ করেছে। ও গিয়ে আবার রাজুকে (অধ্যক্ষ রাজু) বলেছে, আপনাদের উপকারের জন্য এই রেকর্ডিংগুলো দিয়েছি। কিন্তু প্রিন্সিপাল মহোদয় এ কারণে আমাকে শোকজ করেছে।’
অচেনা ব্যক্তিটি তখন বলেন, ‘তাহলে ওগুলো আলোচনা না, আলোচনা আপনাকে মারা?’ অধ্যক্ষ বলেন, ‘হ্যাঁ মারা।’ ওই ব্যক্তি জানতে চান, প্রিন্সিপালদের ভূমিকা? সেলীম রেজা বলেন, ‘কোনো ভূমিকা না, আমাকে বলছে—মাফ নেন, মাফ নেন। তো আমি কীসের মাফ নিব? তার পরও বললাম, তো স্যার, আমি তো জানি না, যদি আমার টিচাররা ভুল করে থাকে, আর হবে না। এই ‘যদি’ লাগিয়েছি দেখে আরও রাগ। উঠে আবার মাইর। প্রায় ১০ মিনিট।’
অধ্যক্ষ বলেন, ‘সোহেল (দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল) এসে আমাকে বলছে, ভাই, আপনাকে নিয়ে যাই। তো আমি বলেছি যাব না। একবার গিয়ে মাইর খেলাম। যেটা হওয়ার হয়েই গেছে। ও পারলে আমার চাকরি খেয়ে লিক গ্যা। আর যদি আরও মারতে চায়, আমার বাসায় এসে মেরে যাবে। আমার কলেজে যাইয়া আমাকে মেরে চলে আসবে। ঠিক আছে? আমার চাকরি খাইয়া লিবে? খাইয়া লিক গ্যা।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘বিকালে প্রিন্সিপালরা এসেছিল আমার খোঁজ নিতে। তারা বলছে—স্যার, যা হওয়ার হয়েছে, আর মাইরেন না। এটা তারা নাকি যাইয়া বলেছে। আমি সকালে আবার শিবলীকে (অন্য কলেজের অধ্যক্ষ) জিজ্ঞেস করলাম। শিবলী বলছে, তার রাগ কমেনি। টিচারদের ওপরেও রাগ আছে। তাদেরও মারবে এ রকম। আমি বলছি, কোনো দরকার নাই। আপনারা আপনাদের মতো থাকেন। আমাকে আমার মতো থাকতে দেন। আমাকে ডাকলেও আর যাব না। তাতে ওর ক্ষমতা থাকলে আমার চাকরি খেয়ে লিবে।’
এই কথোপকথনের বিষয়ে জনতে শনিবার সকালে অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে দুবার ফোন করা হলে প্রতিবারই তিনি ফোন না ধরে কেটে দিয়েছেন। দুপুরে তাঁর মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তাদের মন্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে অধ্যক্ষকে পেটানোর ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার থেকেই সরেজমিনে তদন্ত করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। শনিবার কমিটির প্রধান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন বলেন, ‘বিষয়টা আমরা সিরিয়াসলি তদন্ত করছি। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আমরা কাজ করছি।’
এ পর্যন্ত তদন্তে কী পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলছি না। তবে এটুকু বলতে পারি, তদন্ত প্রতিবেদনে ভালো কিছুই উঠে আসবে। সঠিক বিষয়টা থাকবে।’
নিজেদের অবস্থান জানান দিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদসহ আশপাশের সড়কে বড় জমায়েত করে গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামায়াতের সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে যাওয়ার আগে আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
৬ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যায় আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে রুকু আক্তার নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়
৬ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত বুধবার উদ্ধার হওয়া খণ্ডবিখণ্ড লাশটি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২)। তিনি ফতুল্লার চাঁদ ডাইং ফ্যাক্টরির মালিক। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় রুমা আক্তার নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৭ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
৮ ঘণ্টা আগে