রুয়েটে নতুন বিভাগ খোলার প্রকল্পে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি 

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২২, ২০: ৪০

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করার প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গতকাল রোববার ও আজ সোমবার ইউজিসির তিন কর্মকর্তা রুয়েটে অবস্থান করে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যাচাইয়ে অনিয়মের সত্যতা পান।

আজ সোমবার দুপুরে রুয়েটে এসব বিষয়ে কথা বলেছেন ইউজিসির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের প্রধান ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প শেষ হওয়ার রিপোর্ট দেওয়ার পরেও প্রকল্পের ব্যাংক হিসাবে ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৭ হাজার ২৭২ টাকা জমা ছিল। সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন ৫০ লাখ ৩৬ হাজার ৮৫৯ টাকা জমা ছিল। বর্তমানেও অ্যাকাউন্টটি চালু রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টে বর্তমানে ৫২ লাখ টাকা জমা রয়েছে। প্রকল্প শেষ হওয়ার রিপোর্ট ইউজিসিতে প্রদান এবং প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করার পরেও অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন গুরুতর অনিয়ম। অ্যাকাউন্টটি বন্ধ না করাও বিধিবহির্ভূত  কাজ।’

এসব অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমরা প্রকল্পের পরিচালক ড. আবদুল আলীমের সঙ্গে কথা বলেছি। এসব বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি। আমি মনে করি, এ বিষয়গুলো জাতির সামনে প্রকাশ হওয়া উচিত। যদি কেউ দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকেন, তাহলে তিনি আইন অনুযায়ী শাস্তি পাবেন। আর যদি অনিয়ম না করেন তাহলে সেটি প্রমাণ করবেন।’

জানা গেছে, সরকারি সংস্থার মাধ্যমেই রুয়েটের নতুন বিভাগ খোলার প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে জানতে পারে ইউজিসি। এরপর গত ২০ এপ্রিল ইউজিসি বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। সেদিন ইউজিসির সচিব এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ড. ফেরদৌস জামান এবং দুই উপপরিচালক রোকসানা লায়লা এবং মো. আব্দুল আলীমকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই তিন কর্মকর্তা রুয়েটে আসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ চালুকরণের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত ও ল্যাবরেটরি সুবিধা সৃষ্টিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রুয়েটে গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করার প্রকল্পে এই অনিয়ম হয়েছে। ২০০৯ সালের ১ জুলাই ২৬ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে তা বাড়িয়ে ২০১৬ সালের ৩০ জুন করা হয়। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোট পাঁচজন।

সর্বশেষ পিডি ছিলেন অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম। রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপক প্রকল্প শেষে অবশিষ্ট টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেননি বলে অভিযোগ পায় ইউজিসি। এ ছাড়া প্রকল্প শেষ হলেও বিধি মোতাবেক ব্যাংক হিসাব বন্ধ না করারও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রকল্প শেষেও বেঁচে যাওয়া প্রায় ১৩ কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

তবে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে গত রোববার ড. আবদুল আলীম বলেছেন, ‘যেদিন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়, সেদিনই ইউজিসি শেষ কিস্তির টাকা দিয়েছিল। তাই প্রকল্প শেষেও টাকা থেকে গিয়েছিল। কিন্তু পরে সেসব টাকা ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে।’

আবদুল আলীম আরও বলেন, ‘মোট পাঁচজন প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই টাকা একক স্বাক্ষর দিয়ে তোলা যায় না। তাই কোনো অনিয়ম করা সম্ভব নয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ–পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

দ্রুত বেতন-ভাতা পাবে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান

দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর উদ্যোগ, সুযোগ পেতে পারে ইলন মাস্কের স্টারলিংক

গাজীপুরে বেতন পেলেন ৫ কারখানার সাড়ে ৩ হাজার শ্রমিক, কাজে যোগ দেবে কাল

মালামালের সঙ্গে শিশুকেও তুলে নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত