রাজশাহীর পুঠিয়ায় দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের প্রচার শেষ হবে আজ মঙ্গলবার মধ্যে রাতে। এদিকে শেষ মুহূর্তে ‘হেলমেট বাহিনী’ সন্ধ্যার পর থেকে প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও অস্ত্র মহড়ায় এলাকার ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা একে অপরের ওপর পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ তুলছেন।

মনিরুল ইসলাম নামে একজন ভোটার বলেন, ‘ভোটের বাকি মাত্র দুদিন। বিগত সময়ে সকল প্রার্থীরা সুষ্ঠুভাবে প্রচার করেছেন। আমরাও ধারণা করেছিলাম ভোট সুষ্ঠুভাবে শেষ হবে। তবে গত দুদিন থেকে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২২ জন হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিরা নির্বাচনী এলাকায় ঘুরছে। আর সন্ধ্যা নামলেই তারা অস্ত্র হাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভোটের অফিসে ভাঙচুর ও তাণ্ডব করছে। কার্তিকপাড়া ও মোল্লাপাড়া বাজারে ককটেল ফাটিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে।

শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু হায়াত বলেন, নির্বাচন এলেই বহিরাগত লোকজন হেলমেট পরে ঘুরছে। এরা কারা! আর তারা কেনোই বা বাছাই করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী দপ্তর অগ্নিসংযোগ করছে। বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

আবু হায়াত আরও বলেন, ‘সাধারণ লোকজন যেন সুষ্ঠুভাবে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন এবং এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে সে জন্য আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

শিলমাড়িয়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, ‘ভোট বানচাল করতে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবু হায়াত জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ক্যাডারদের ভাড়া করে এই এলাকায় আনছেন। আর ভাড়াটিয়া বাহিনীর লোকজন আমার নির্বাচনী এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে।’

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ওই বাহিনীর লোকজন গতকাল সন্ধ্যার পর শিলমাড়িয়া এলাকার কয়েকটি গ্রামে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। এ সময় খবর পেয়ে আমাদের ছেলেরা ঘটনাস্থলে আসার আগেই তাঁরা পালিয়ে যায়।’

ভালুকগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্রপ্রার্থী একরামূল হক বলেন, ‘গতকাল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার দপ্তর রহস্যজনকভাবে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আমার দুজন প্রচার কর্মীকে আটক করেছেন। মাঠে আমার অবস্থান ও ভোটারদের কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হতাশায় পড়েছেন। তাই তারা যখন যা ইচ্ছে করছেন।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে দুজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়গুলো থানা-পুলিশের সহায়তায় নিরসন করার চেষ্টা করছি।’

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, ‘গত সোমবার ভালুকগাছি ইউনিয়ন এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ওই প্রার্থী থানায় অভিযোগ দিয়েছিল। সে মোতাবেক দুজনকে আটক করা হয়েছে। আর গতকাল রাতে ককটেল বিস্ফোরণ ও অস্ত্র মহড়ার বিষয়টি জানা নেই। এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।’