খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আপেল মাহমুদ। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি কারখানায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন। আপেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকায় সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় সংসারের খরচ অনেক বেড়ে যায়। বাসা ভাড়ার পাশাপাশি পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে কয়েক দফায়। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে পোষাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে এসে মুদি দোকান দিয়েছি। এখানে পরিবার নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।’
মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, কিচকের আঞ্জুয়ারা, পিরবের আব্দুল মমিন ও দেউলীর আব্দুল বারীর মতো আরও অনেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন লাগামহীন, তাল মিলিয়ে যানবাহন ও বাসাভাড়াও বাড়ছে, তখন শহুরে জীবনকে বিদায় জানাতে হয়েছে তাদের।
গ্রামে ফিরলেই কি আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলে? তেলের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির আঘাত কি গ্রামে পড়েনি? তাহলে ঠরু মোল্লার মতো গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষের গল্প শুনতে হবে। জানতে হবে, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে কেমন হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকে আজ অবধি পরিবারকে মাছ-মাংস খাওয়াতে পারেননি।
বগুড়ার শিবগঞ্জের চলনাকাথী গ্রামের দিনমজুর এই ঠরু অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে দিনে ৩৫০ টাকা আয় করেন। ৩ কেজি চাল, তেল, কাঁচাবাজার বাবদ এবং চার সন্তান ও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ছয়জনের সংসারে দিনে তাঁর ব্যয় হয় ৪০০ টাকা। এই ঘাটতি তিনি মেটান মাঝে মাঝে ঋণ করে।
তাই গ্রামে ফিরেও জীবনযাত্রায় স্বস্তি নেই শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের। স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার পর ঢাকায় বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মেলাতে গ্রামে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া পাই, গ্যাস খরচ বাদ দিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হাতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর।’
এদিকে গ্রামের শিক্ষিত প্রায় মধ্যবিত্ত লোকেরা একটু বেশিই সংকটে আছেন। অভাবে জর্জরিত হলেও তাঁরা লজ্জায় প্রকাশ করতে পারেন না। মোকামতলা বন্দর এলাকার এমনই একজন কনক দেব। তিনি শিক্ষকতা করেন একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কেমন আছেন জানতে চাইলে কনক দেব বলেন, ‘দুই সন্তানের পড়াশোনা, নিজের চিকিৎসা, অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন চলছে আমার। পরিবারের খরচ মেটাতে একটি এনজিও থেকে ঋণ করেছি। কারও কাছে মুখ ফুটে অভাবের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টানলে মধ্যবিত্তদের বাঁচা মুশকিল।’
অক্টোবর মাসের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, মাছ-মাংস খাওয়া বাদ দিলে ঢাকা মহানগরে চারজনের এক পরিবারের শুধু খাবারের জন্য ব্যয় হয় গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। আর মাছ-মাংস যুক্ত হলে তা ২২ হাজার ৪২১ টাকা হবে।
সরকারের হিসাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে আগস্টে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। এটা ৫ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ। কিন্তু বাজারে অনেক পণ্যের মূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। সংস্থাটি বলছে, সরকারের গড় মূল্যস্ফীতির তথ্য বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। জরুরি ভিত্তিতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে সিপিডি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে মোটা চালের দাম প্রায় ১১ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকায় উঠেছে। আটার দাম বেড়েছে ব্যাপক। ৬৮ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। চিনির দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির এমন চাপে শহরের পাশাপাশি দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার, বিশেষ করে ৯ জেলার দরিদ্র মানুষ এখন অনেক খারাপ সময় পার করছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব দেশের কৃষি খাতকেও আক্রান্ত করে। কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রাকেও সংকুচিত করে ফেলেছে।
বুড়িগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল বাসেদ বলেন, ‘আমার চার বিঘা ফসলি জমি আছে। গেল দুই বছর যাবৎ সার আর কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের টাকা দিয়ে আবার নতুন ফসল লাগাতে হয়। আলু, ফুলকপি, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কোনো কোনো সময় লোকসানও গুনতে হচ্ছে। জমি থেকে কোনো বাড়তি আয়েরও সুযোগ নেই আমার।’
এমন পরিস্থিতিতে পরিবারে একটু বাড়তি আয় জোগাতে গিয়ে শৈশবেই পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু। ভ্যান চালানোসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হচ্ছে তারা। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে দেখা মেলে যাত্রীবাহী ভ্যানচালক আবু মুসার সঙ্গে। বয়স আনুমানিক ১২ বছর।
পড়ালেখা বাদ দিয়ে এই বয়সে ভ্যান চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, ‘বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন আর আমি ভ্যান চালাই। বড় বোনের বিয়ের পর সংসারে অভাব দেখা গেছে। আমার ছোট একটা ভাই আর মা আছে।’
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য খাবার কিনতে সম্পদ বিক্রি ও ঋণ করছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া খাবার কিনতে গিয়ে ১০ শতাংশ পরিবার তাদের গত ১২ মাসের সব সঞ্চয় ভেঙে ফেলেছে।
চড়া মূল্যের বাজারে প্রান্তিক পর্যায়ের নিম্নবিত্ত মানুষদের বাঁচাতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. হাসানাত। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কৃষি উপকরণের ওপর ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হবে।’
শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আপেল মাহমুদ। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি কারখানায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন। আপেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকায় সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় সংসারের খরচ অনেক বেড়ে যায়। বাসা ভাড়ার পাশাপাশি পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে কয়েক দফায়। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে পোষাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে এসে মুদি দোকান দিয়েছি। এখানে পরিবার নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।’
মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, কিচকের আঞ্জুয়ারা, পিরবের আব্দুল মমিন ও দেউলীর আব্দুল বারীর মতো আরও অনেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন লাগামহীন, তাল মিলিয়ে যানবাহন ও বাসাভাড়াও বাড়ছে, তখন শহুরে জীবনকে বিদায় জানাতে হয়েছে তাদের।
গ্রামে ফিরলেই কি আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলে? তেলের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির আঘাত কি গ্রামে পড়েনি? তাহলে ঠরু মোল্লার মতো গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষের গল্প শুনতে হবে। জানতে হবে, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে কেমন হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকে আজ অবধি পরিবারকে মাছ-মাংস খাওয়াতে পারেননি।
বগুড়ার শিবগঞ্জের চলনাকাথী গ্রামের দিনমজুর এই ঠরু অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে দিনে ৩৫০ টাকা আয় করেন। ৩ কেজি চাল, তেল, কাঁচাবাজার বাবদ এবং চার সন্তান ও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ছয়জনের সংসারে দিনে তাঁর ব্যয় হয় ৪০০ টাকা। এই ঘাটতি তিনি মেটান মাঝে মাঝে ঋণ করে।
তাই গ্রামে ফিরেও জীবনযাত্রায় স্বস্তি নেই শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের। স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার পর ঢাকায় বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মেলাতে গ্রামে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া পাই, গ্যাস খরচ বাদ দিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হাতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর।’
এদিকে গ্রামের শিক্ষিত প্রায় মধ্যবিত্ত লোকেরা একটু বেশিই সংকটে আছেন। অভাবে জর্জরিত হলেও তাঁরা লজ্জায় প্রকাশ করতে পারেন না। মোকামতলা বন্দর এলাকার এমনই একজন কনক দেব। তিনি শিক্ষকতা করেন একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কেমন আছেন জানতে চাইলে কনক দেব বলেন, ‘দুই সন্তানের পড়াশোনা, নিজের চিকিৎসা, অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন চলছে আমার। পরিবারের খরচ মেটাতে একটি এনজিও থেকে ঋণ করেছি। কারও কাছে মুখ ফুটে অভাবের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টানলে মধ্যবিত্তদের বাঁচা মুশকিল।’
অক্টোবর মাসের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, মাছ-মাংস খাওয়া বাদ দিলে ঢাকা মহানগরে চারজনের এক পরিবারের শুধু খাবারের জন্য ব্যয় হয় গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। আর মাছ-মাংস যুক্ত হলে তা ২২ হাজার ৪২১ টাকা হবে।
সরকারের হিসাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে আগস্টে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। এটা ৫ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ। কিন্তু বাজারে অনেক পণ্যের মূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। সংস্থাটি বলছে, সরকারের গড় মূল্যস্ফীতির তথ্য বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। জরুরি ভিত্তিতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে সিপিডি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে মোটা চালের দাম প্রায় ১১ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকায় উঠেছে। আটার দাম বেড়েছে ব্যাপক। ৬৮ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। চিনির দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির এমন চাপে শহরের পাশাপাশি দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার, বিশেষ করে ৯ জেলার দরিদ্র মানুষ এখন অনেক খারাপ সময় পার করছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব দেশের কৃষি খাতকেও আক্রান্ত করে। কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রাকেও সংকুচিত করে ফেলেছে।
বুড়িগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল বাসেদ বলেন, ‘আমার চার বিঘা ফসলি জমি আছে। গেল দুই বছর যাবৎ সার আর কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের টাকা দিয়ে আবার নতুন ফসল লাগাতে হয়। আলু, ফুলকপি, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কোনো কোনো সময় লোকসানও গুনতে হচ্ছে। জমি থেকে কোনো বাড়তি আয়েরও সুযোগ নেই আমার।’
এমন পরিস্থিতিতে পরিবারে একটু বাড়তি আয় জোগাতে গিয়ে শৈশবেই পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু। ভ্যান চালানোসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হচ্ছে তারা। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে দেখা মেলে যাত্রীবাহী ভ্যানচালক আবু মুসার সঙ্গে। বয়স আনুমানিক ১২ বছর।
পড়ালেখা বাদ দিয়ে এই বয়সে ভ্যান চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, ‘বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন আর আমি ভ্যান চালাই। বড় বোনের বিয়ের পর সংসারে অভাব দেখা গেছে। আমার ছোট একটা ভাই আর মা আছে।’
ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য খাবার কিনতে সম্পদ বিক্রি ও ঋণ করছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া খাবার কিনতে গিয়ে ১০ শতাংশ পরিবার তাদের গত ১২ মাসের সব সঞ্চয় ভেঙে ফেলেছে।
চড়া মূল্যের বাজারে প্রান্তিক পর্যায়ের নিম্নবিত্ত মানুষদের বাঁচাতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. হাসানাত। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কৃষি উপকরণের ওপর ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হবে।’
তিন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের ‘অযোগ্য’ বলছে একটি পক্ষ। আরেক পক্ষের অভিযোগ, আহ্বায়ক কমিটিতে এখন ‘ভূমিদস্যু’ ও ‘চাঁদাবাজদের’ দৌরাত্ম্য। তাই আলাদা হয়েছেন তাঁরা। তবে নগর বিএনপির আহ্বায়ক বলছেন, দ্বন্দ্ব-বিভাজনের কথা তাঁর জানা নেই।
৩৩ মিনিট আগেরাজধানীর আজিমপুরে অপহৃত শিশুকে মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
১ ঘণ্টা আগেনিজেদের অবস্থান জানান দিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদসহ আশপাশের সড়কে বড় জমায়েত করে গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামায়াতের সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে যাওয়ার আগে আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
৮ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যায় আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে রুকু আক্তার নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়
৯ ঘণ্টা আগে