ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আড়াই শ বছরের পুরোনো ময়মনসিংহ শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নব্বইয়ের দশকেও উত্তাল ছিল নদটি। সেটি এখন দখল-দূষণে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও নদের পাড় দখলের তালিকায় নাম লিখিয়েছে; পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে ময়লা। অথচ খননও আটকে আছে। সে কারণে ব্রহ্মপুত্রের প্রাণ ফেরানো খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক ও পরিবেশবাদীরা।
সম্প্রতি নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, থানা ঘাট, কাচারী ঘাট এবং পুলিশ লাইনস কাশর চর জেলখানা এলাকায় গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের দুই পাড় দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলার চিত্র দেখা গেছে। ময়লা-আবর্জনা নদে ফেলায় পানি দূষিত হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠেছে।
কাশর চর জেলখানা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, নব্বইয়ের দশকের দিকে ব্রহ্মপুত্র ছিল উত্তাল; এখন ধু ধু বালুচর। তারপর আবার পাড় দখল করে বেশ কয়েকটি স্থাপনা তৈরি হয়েছে। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এ নিয়ে কেউ কথাও বলছে না।
মসজিদ, মাদ্রাসা করা একই এলাকার আলী আহম্মেদ ফিরোজের দাবি, যে জমিতে মসজিদ, মাদ্রাসা গড়ে তোলা হয়েছে, সেটি তাঁদের জায়গা। ভাঙনের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে জায়গা একীভূত হয়েছে। তাই আমাদের জায়গায় সবার সহযোগিতায় মসজিদ, মাদ্রাসা করা হয়েছে।’
তা ছাড়া নগরীর কাচারী ঘাট নির্বাচন অফিস-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেতুবন্ধন হিজড়া সমবায় সমিতি ক্যাফে নামের একটি সাইনবোর্ড। এই সাইনবোর্ডের আশপাশে নদের মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধশতাধিক দোকানপাট।
কাচারী ঘাট এলাকার দোকানি ফিরোজা বেগম বলেন, ‘সাত বছর ধরে নদীর পাড়ে চায়ের দোকান করে সংসার চালাচ্ছি। প্রশাসনের লোকজন বলে গেছে সেই জায়গা হিজড়াদের জন্য ছেড়ে দিতে।’
সেতুবন্ধন কল্যাণ সংঘের সভাপতি তনু হিজড়া বলেন, ‘হাত না পেতে কিছু করে চলার জন্যই বিভাগীয় কমিশনার ম্যাডামের কাছে গিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা চাই। তারপর ম্যাডাম নদের পাড়ে আমাদের জন্য জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে সমস্যা হলে স্যার-ম্যাডামরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই করব।’
পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকার ষাটোর্ধ্ব কামাল উদ্দিন বলেন, একটা সময় এই নদে মাছ, জলজ প্রাণী থাকলেও এখন নদে চর জাগার পাশাপাশি পানি দূষিত হওয়ায় আর কিছুই নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক দিলরুবা আহমেদ বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের দখল-দূষণরোধে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরও কাজ করে চলেছে; বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, তারা যেন তাদের ময়লা নদে না ফেলে। মানুষ সচেতন না হলে দখল-দূষণ রোধ থেকে আমাদের নদ-নদীগুলো রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ময়মনসিংহের প্রাণ হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এই নদ ঘিরে এখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্য রচিত। মানুষের স্বার্থের চেয়ে নদের স্বার্থকে আমরা বড় করে দেখতে চাই।’
প্রশাসনও নদ দখল করার অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘হিজড়াদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ক্যাফে তৈরির পাশাপাশি বিকল্প একটি জায়গাও নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন করেছে; অনেকে মোবাইলে কল করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, সেখানে ক্যাফে নির্মাণ করা ঠিক হবে না। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসব।’
নাব্যতা ফেরাতে খনন
এদিকে দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয় খননকাজ। প্রায় ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নদের ২২৭ কিলোমিটার খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও শুষ্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর রাখার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও খনন হয়েছে মাত্র ২৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মহসীন মিয়া বলেন, করোনাকালসহ বেশ কিছু কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ২৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দিতে স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় খননকাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, খননকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরপরেই দখল-দূষণ রোধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আড়াই শ বছরের পুরোনো ময়মনসিংহ শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নব্বইয়ের দশকেও উত্তাল ছিল নদটি। সেটি এখন দখল-দূষণে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও নদের পাড় দখলের তালিকায় নাম লিখিয়েছে; পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে ময়লা। অথচ খননও আটকে আছে। সে কারণে ব্রহ্মপুত্রের প্রাণ ফেরানো খুব কঠিন হবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিক ও পরিবেশবাদীরা।
সম্প্রতি নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, থানা ঘাট, কাচারী ঘাট এবং পুলিশ লাইনস কাশর চর জেলখানা এলাকায় গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের দুই পাড় দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলার চিত্র দেখা গেছে। ময়লা-আবর্জনা নদে ফেলায় পানি দূষিত হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠেছে।
কাশর চর জেলখানা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, নব্বইয়ের দশকের দিকে ব্রহ্মপুত্র ছিল উত্তাল; এখন ধু ধু বালুচর। তারপর আবার পাড় দখল করে বেশ কয়েকটি স্থাপনা তৈরি হয়েছে। সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এ নিয়ে কেউ কথাও বলছে না।
মসজিদ, মাদ্রাসা করা একই এলাকার আলী আহম্মেদ ফিরোজের দাবি, যে জমিতে মসজিদ, মাদ্রাসা গড়ে তোলা হয়েছে, সেটি তাঁদের জায়গা। ভাঙনের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে জায়গা একীভূত হয়েছে। তাই আমাদের জায়গায় সবার সহযোগিতায় মসজিদ, মাদ্রাসা করা হয়েছে।’
তা ছাড়া নগরীর কাচারী ঘাট নির্বাচন অফিস-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেতুবন্ধন হিজড়া সমবায় সমিতি ক্যাফে নামের একটি সাইনবোর্ড। এই সাইনবোর্ডের আশপাশে নদের মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে অর্ধশতাধিক দোকানপাট।
কাচারী ঘাট এলাকার দোকানি ফিরোজা বেগম বলেন, ‘সাত বছর ধরে নদীর পাড়ে চায়ের দোকান করে সংসার চালাচ্ছি। প্রশাসনের লোকজন বলে গেছে সেই জায়গা হিজড়াদের জন্য ছেড়ে দিতে।’
সেতুবন্ধন কল্যাণ সংঘের সভাপতি তনু হিজড়া বলেন, ‘হাত না পেতে কিছু করে চলার জন্যই বিভাগীয় কমিশনার ম্যাডামের কাছে গিয়ে কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা চাই। তারপর ম্যাডাম নদের পাড়ে আমাদের জন্য জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে সমস্যা হলে স্যার-ম্যাডামরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই করব।’
পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকার ষাটোর্ধ্ব কামাল উদ্দিন বলেন, একটা সময় এই নদে মাছ, জলজ প্রাণী থাকলেও এখন নদে চর জাগার পাশাপাশি পানি দূষিত হওয়ায় আর কিছুই নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক দিলরুবা আহমেদ বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের দখল-দূষণরোধে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরও কাজ করে চলেছে; বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, তারা যেন তাদের ময়লা নদে না ফেলে। মানুষ সচেতন না হলে দখল-দূষণ রোধ থেকে আমাদের নদ-নদীগুলো রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ময়মনসিংহের প্রাণ হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এই নদ ঘিরে এখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্য রচিত। মানুষের স্বার্থের চেয়ে নদের স্বার্থকে আমরা বড় করে দেখতে চাই।’
প্রশাসনও নদ দখল করার অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘হিজড়াদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ক্যাফে তৈরির পাশাপাশি বিকল্প একটি জায়গাও নির্ধারণ করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন মানববন্ধন করেছে; অনেকে মোবাইলে কল করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, সেখানে ক্যাফে নির্মাণ করা ঠিক হবে না। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসব।’
নাব্যতা ফেরাতে খনন
এদিকে দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয় খননকাজ। প্রায় ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নদের ২২৭ কিলোমিটার খনন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও শুষ্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর রাখার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও খনন হয়েছে মাত্র ২৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মহসীন মিয়া বলেন, করোনাকালসহ বেশ কিছু কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ২৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দিতে স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় খননকাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, খননকাজ সম্পন্ন হওয়ার পরপরেই দখল-দূষণ রোধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে আই আর খান জুট মিলে অগ্নিকাণ্ডে মজুত করা বিপুলপরিমাণে পাট পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
২৯ মিনিট আগেনোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নে দুর্গম চরাঞ্চল দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ছুরিকাঘাতে ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগেগোলাম মোস্তফা। বয়স ৩৫ বছর। পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন। গুলিতে তাঁর ডান হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত হাড় ভেঙে কয়েক টুকরা হয়েছিল। গত ২৩ জুলাই ভর্তি হওয়ার পর থেকে হাতে ১০ বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পেশায় নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা গুলিব
১ ঘণ্টা আগেজাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৭ ঘণ্টা আগে