বকশীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তারের জেরে পদ হারালেন বিএনপি নেতা

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ০৩
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯: ২১
আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সেলিম মিয়া নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তারের জেরে আবুল কাশেম নামের এক বিএনপি নেতা দলীয় পদ হারিয়েছেন। তবে পদ হারানো বিএনপি নেতা এর পেছনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মিয়া উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। পদ হারানো বিএনপি নেতা আবুল কাশেম ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

জানা গেছে, গত ১৯ নভেম্বর রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বিএনপি নেতা আবুল কাশেমের সকল পদ স্থগিত করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে বকশীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক শাহালম খান। ১০ নভেম্বর রাতে ওই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম মিয়াকে গাজীরপাড়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেলিম মিয়াকে গ্রেপ্তারে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের হাত রয়েছে দাবি করে গত ১৩ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করেন সেলিম মিয়ার স্ত্রী খোদেজা বেগম।

আবুল কাশেমের পদ স্থগিত করার চিঠি। ছবি: সংগৃহীত
আবুল কাশেমের পদ স্থগিত করার চিঠি। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে খোদেজা বেগম অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম তাঁর স্বামী সেলিম মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তাঁর স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দেয় আবুল কাশেম। সংবাদ সম্মেলনের খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে অংশ নেওয়ার অভিযোগ এনে আবুল কাশেমকে শোকজ নোটিশ প্রদান করেন। শোকজ নোটিশে ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয় আবুল কাশেমকে। এরপর ১৬ নভেম্বর বিকেলে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের কাছে শোকজ নোটিশের জবাব সংবলিত একটি চিঠি দেন আবুল কাশেম।

পরদিন ১৭ নভেম্বর সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা সংবাদ সম্মেলন ডেকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে আবুল কাশেমকে বহিষ্কারের দাবি জানান। এরপর দলের ভেতর ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এর রেশ না কাটতেই গত মঙ্গলবার রাতে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাধারণ সম্পাদকের পদ স্থগিত করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর।

এ ব্যাপারে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির স্থগিত হওয়া সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। নাশকতা মামলার বাদী আমি না। পুলিশ যাঁকে সন্দেহ করেছে তাঁকেই গ্রেপ্তার করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা সেলিমের গ্রেপ্তারে আমার কোনো হাত নেই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। অন্যায়ভাবে আমার পদ স্থগিত করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করায় আবুল কাশেমের পদ স্থগিত করা হয়েছে। দলের ভেতর কেউ বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। মনে রাখতে হবে, বিএনপিতে কোনো বিশৃঙ্খলা চলে না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত