নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নান্দাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল পল্লিগ্রামের মেয়ে স্বপ্না, তানিশা ও শিখা। তিনজন কিশোরীই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দরিদ্রকে পেছনে ফেলে অদম্য সাহসী তিন কিশোরী সংগ্রামের সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছে সাফল্যের দিকে।
সিনহা জাহান শিখা উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রাম বিপ্লব মিয়ার মেয়ে, স্বপ্না আক্তার জিলি শেরপুর ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ফয়জুউদ্দিন ও তানিয়া আক্তার তানিশা মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। তিন কিশোরী ফুটবল দলের প্রশিক্ষণের জন্য ইউরোপের দেশ পর্তুগালে যাচ্ছে।
এদিকে তিন স্বপ্নবাজ কিশোরী পর্তুগাল যাওয়ার খবরে আনন্দ বইছে এলাকায়। আগে যারা কিশোরীদের নিয়ে মন্তব্য করতেন এখন তাদের মুখেই কিশোরীদের সফলতার গল্প। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কার্প টুর্নামেন্ট ২০১৮ সালে রানার্সআপ পরের বছর টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় নান্দাইল উপজেলার শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে চ্যাম্পিয়ন দলে সদস্য ছিল তিন কিশোরী। তারা তিনজনই বর্তমানে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অধ্যয়নরত।
জানা যায়, বঙ্গমাতা নারী ফুটবলের সেরা ৪০ খেলোয়াড়কে নিয়ে বিকেএসপিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিদপ্তরের উদ্যোগে। ৪০ জনের মধ্য থেকে ১৭ জন বাছাই করা হয়। বাছাইকৃতরা আগামী জুলাইয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে যাবে। এদের মধ্যে ১১ জন মূল দলে আর ৬ জন অতিরিক্ত। তারা সেখানে গিয়ে ফুটবলের প্রশিক্ষণ নিবে। শিখা, স্বপ্না খেলবে মূল দলে আর তানিশা অতিরিক্ত ৬ জনের কাতারে।
সিনহা জাহান শিখা:
উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের বিপ্লব মিয়ার মেয়ে। পিতা মটর চালিত টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শিখা তৃতীয়। বড় বোন সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি থাকেন স্বামীর বাড়ি। মেজো বোন রিতা আক্তার শহীদ স্মৃতি আদর্শ সরকারি কলেজ পড়েন। শিখা নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ও তার ছোট ভাই স্বাধীন ইমাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় শিখার মা মঞ্জিলা মারা যান। সেই থেকে নানির বাড়িতে থাকে। শিখার বাবার বাড়ি জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামে। মা মারা যাওয়ার পর বাবা বিপ্লব আরেকটি বিয়ে করেন। থাকেন নিজ বাড়ি জাহাঙ্গীরপুরে। সন্তানদের ভরণ পোষণের খরচ দেন, নেন খোঁজ খবরও।
শিখা ছোটকাল থেকে খেলাধুলায় আগ্রহী ছিলেন। ফুটবল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেন। সে থেকেই কোচ প্রশিক্ষক মগবুল হোসেনের মাধ্যমে উপজেলা, জেলা, বঙ্গমাতা গোল্ড কার্প সহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করেন। খেলেন লেফট উইং পজিশনে।
শিখা আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘সদর থেকে ১০ কিলোমিটারের দুরে মফস্বল এলাকায় আমি থাকি। সদরে প্রতিদিন প্র্যাকটিস করতে যেতাম এতে আসা যাওয়ার ৭০ টাকা খরচ হতো। এই টাকা গুলো বাবা ও নানা ডিম বিক্রি করে দিত। অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত এসেছি। যেটা টাকা দিত এই টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়ায় চলে যেত। খাওয়ার কিছু থাকত না। অনেক সময় পান্তা ভাত খেয়ে খেলতে গেছি। পর্তুগালের প্রশিক্ষণ শেষে জাতীয় দলে খেলা ইচ্ছা আমার। এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
তানিয়া আক্তার তানিশা:
উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে তানিশা আক্তার তানিয়া। বাবা দিনমজুর অন্যের জমিতে কাজ করেন। সংসারে এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে কষ্টে দিন পার করতে হয় তাঁকে। একটি টিনের ভাঙা ছোড়া ঘর ছাড়া কিছু নেই তাঁর। বড় ছেলে ইয়াছিন আরাফাত আচারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তানিশা তার চাচা আনিসুর রহমানের ঘরে থাকে। স্থানীয় কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে বর্তমানে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
তানিশা ২০১৮ সালের মায়ের সঙ্গে নান্দাইল শপিং করতে গিয়েছিল। তখন চন্ডিপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস দেখে তারও খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। পরে প্রশিক্ষণ কোচ মকবুল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে সেও প্র্যাকটিস শুরু করে। অসহায় বাবা দুলাল মিয়া কষ্টে মেয়ের জন্য টাকা জোগাড় করে রাখতেন। মাঝে মাঝে টাকা না থাকলে প্র্যাকটিসে যাওয়া হতো না তানিশার। খেলেন দলের রক্ষণ ভাগে।
তানিয়া আক্তার তানিশা আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমি প্রথমে খেলা করতে গিয়ে অনেকের রোষানলে পড়েছি। আমি ২০১৮ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে ভালো খেলেছি। এখন পর্তুগালে যাচ্ছি খুব ভালো লাগছে। আমার বাবা দিনমজুর আমার এটা ঘর নেই। টাকা ইনকাম করে একটি ঘর বানাতে চাই। মায়ের গলায় সমস্যা অপারেশন করাতে হবে। এখন তো খেতেই পারি না ঠিকমতো, ঘর-চিকিৎসা তো দূরের কথা। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে এসে জাতীয় দলে খেলতে চাই।
স্বপ্না আক্তার জিলি:
উপজেলার থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে শেরপুর ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ফয়জুউদ্দিন ফকিরের মেয়ে স্বপ্না আক্তার জিলি। বাবা কৃষি কাজ করেন। সংসারের তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে স্বপ্না ষষ্ঠ। বড় বোন বাসনা আক্তার, শাবানা আক্তার ও বড় ভাই রায়হান মিয়া গার্মেন্টসে চাকরি করেন। আরেক বোন রোজিনার বিয়ে হয়েছে এখন বাড়িতেই থাকেন। ছোট ভাই আবু নাঈম মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। আর স্বপ্না নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সবার ছোট রোহান বাড়িতেই থাকে।
শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের বড়দের ফুটবল খেলা দেখত। তা দেখে ফুটবল খেলার আগ্রহ বাড়ে তার। স্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন উজ্জলকে খেলার আগ্রহের কথা বললে তিনি খেলার সুযোগ করে দেন। স্বপ্না আক্তার জিলি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সংসারের খরচ জোটাতে বাবা ফয়জুউদ্দিনের অনেক কষ্ট হয়। কষ্টের কথা ভেবে তিন সন্তান চাকরি করেন গার্মেন্টস। এ পর্যন্ত আসার পেছনে রয়েছে তার অনেক কষ্টের গল্প। প্রতিদিন নান্দাইল এসে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে। দুই কিলোমিটার কাচা রাস্তা হেঁটে ১২ কিলোমিটার গাড়ি করে আসা যাওয়া খরচ হয়েছে ৮০ টাকা। বাবা সে খরচ বহন করেছেন।
স্বপ্না আক্তার জিলি আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমি অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত এসেছি। প্র্যাকটিস করতে আসব তার টাকা পর্যন্ত জোগাতে কষ্ট হয়েছে। কিছুদিন আগে টাকার অভাবে প্র্যাকটিস করতে আসতে পারিনি। এতে অনেক দিন খেলা বন্ধ ছিল। পরে এমপিকে জানালে তিনি একটা ব্যবস্থা করে দেন। আমি পর্তুগাল ও স্পেনে যাচ্ছি প্রশিক্ষণে। ফিরে এসে জাতীয় দলে খেলতে চাই।’
এ বিষয়ে তিন কিশোরীর প্রশিক্ষক মগবুল হোসেন বলেন, ‘আমি তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রশিক্ষণের ফলেই তারা এ পর্যন্ত আসতে সুযোগ পেয়েছে।’
নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের কৃতি তিন ফুটবল খেলোয়াড় প্রশিক্ষণে পর্তুগাল যাচ্ছে এটা গর্বের বিষয়। আমি তাদেরকে সব সময় বিভিন্নভাবে সাপোর্ট করেছি। তারা ভালো করুক সেই প্রত্যাশা করি।’
নান্দাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল পল্লিগ্রামের মেয়ে স্বপ্না, তানিশা ও শিখা। তিনজন কিশোরীই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দরিদ্রকে পেছনে ফেলে অদম্য সাহসী তিন কিশোরী সংগ্রামের সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছে সাফল্যের দিকে।
সিনহা জাহান শিখা উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রাম বিপ্লব মিয়ার মেয়ে, স্বপ্না আক্তার জিলি শেরপুর ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ফয়জুউদ্দিন ও তানিয়া আক্তার তানিশা মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। তিন কিশোরী ফুটবল দলের প্রশিক্ষণের জন্য ইউরোপের দেশ পর্তুগালে যাচ্ছে।
এদিকে তিন স্বপ্নবাজ কিশোরী পর্তুগাল যাওয়ার খবরে আনন্দ বইছে এলাকায়। আগে যারা কিশোরীদের নিয়ে মন্তব্য করতেন এখন তাদের মুখেই কিশোরীদের সফলতার গল্প। বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ড কার্প টুর্নামেন্ট ২০১৮ সালে রানার্সআপ পরের বছর টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় নান্দাইল উপজেলার শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সে চ্যাম্পিয়ন দলে সদস্য ছিল তিন কিশোরী। তারা তিনজনই বর্তমানে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অধ্যয়নরত।
জানা যায়, বঙ্গমাতা নারী ফুটবলের সেরা ৪০ খেলোয়াড়কে নিয়ে বিকেএসপিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিদপ্তরের উদ্যোগে। ৪০ জনের মধ্য থেকে ১৭ জন বাছাই করা হয়। বাছাইকৃতরা আগামী জুলাইয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে যাবে। এদের মধ্যে ১১ জন মূল দলে আর ৬ জন অতিরিক্ত। তারা সেখানে গিয়ে ফুটবলের প্রশিক্ষণ নিবে। শিখা, স্বপ্না খেলবে মূল দলে আর তানিশা অতিরিক্ত ৬ জনের কাতারে।
সিনহা জাহান শিখা:
উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের বিপ্লব মিয়ার মেয়ে। পিতা মটর চালিত টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শিখা তৃতীয়। বড় বোন সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি থাকেন স্বামীর বাড়ি। মেজো বোন রিতা আক্তার শহীদ স্মৃতি আদর্শ সরকারি কলেজ পড়েন। শিখা নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ও তার ছোট ভাই স্বাধীন ইমাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় শিখার মা মঞ্জিলা মারা যান। সেই থেকে নানির বাড়িতে থাকে। শিখার বাবার বাড়ি জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা গ্রামে। মা মারা যাওয়ার পর বাবা বিপ্লব আরেকটি বিয়ে করেন। থাকেন নিজ বাড়ি জাহাঙ্গীরপুরে। সন্তানদের ভরণ পোষণের খরচ দেন, নেন খোঁজ খবরও।
শিখা ছোটকাল থেকে খেলাধুলায় আগ্রহী ছিলেন। ফুটবল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেন। সে থেকেই কোচ প্রশিক্ষক মগবুল হোসেনের মাধ্যমে উপজেলা, জেলা, বঙ্গমাতা গোল্ড কার্প সহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলায় অংশ গ্রহণ করেন। খেলেন লেফট উইং পজিশনে।
শিখা আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘সদর থেকে ১০ কিলোমিটারের দুরে মফস্বল এলাকায় আমি থাকি। সদরে প্রতিদিন প্র্যাকটিস করতে যেতাম এতে আসা যাওয়ার ৭০ টাকা খরচ হতো। এই টাকা গুলো বাবা ও নানা ডিম বিক্রি করে দিত। অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত এসেছি। যেটা টাকা দিত এই টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়ায় চলে যেত। খাওয়ার কিছু থাকত না। অনেক সময় পান্তা ভাত খেয়ে খেলতে গেছি। পর্তুগালের প্রশিক্ষণ শেষে জাতীয় দলে খেলা ইচ্ছা আমার। এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
তানিয়া আক্তার তানিশা:
উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে তানিশা আক্তার তানিয়া। বাবা দিনমজুর অন্যের জমিতে কাজ করেন। সংসারে এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে কষ্টে দিন পার করতে হয় তাঁকে। একটি টিনের ভাঙা ছোড়া ঘর ছাড়া কিছু নেই তাঁর। বড় ছেলে ইয়াছিন আরাফাত আচারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। তানিশা তার চাচা আনিসুর রহমানের ঘরে থাকে। স্থানীয় কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে বর্তমানে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
তানিশা ২০১৮ সালের মায়ের সঙ্গে নান্দাইল শপিং করতে গিয়েছিল। তখন চন্ডিপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস দেখে তারও খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। পরে প্রশিক্ষণ কোচ মকবুল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে সেও প্র্যাকটিস শুরু করে। অসহায় বাবা দুলাল মিয়া কষ্টে মেয়ের জন্য টাকা জোগাড় করে রাখতেন। মাঝে মাঝে টাকা না থাকলে প্র্যাকটিসে যাওয়া হতো না তানিশার। খেলেন দলের রক্ষণ ভাগে।
তানিয়া আক্তার তানিশা আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমি প্রথমে খেলা করতে গিয়ে অনেকের রোষানলে পড়েছি। আমি ২০১৮ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে ভালো খেলেছি। এখন পর্তুগালে যাচ্ছি খুব ভালো লাগছে। আমার বাবা দিনমজুর আমার এটা ঘর নেই। টাকা ইনকাম করে একটি ঘর বানাতে চাই। মায়ের গলায় সমস্যা অপারেশন করাতে হবে। এখন তো খেতেই পারি না ঠিকমতো, ঘর-চিকিৎসা তো দূরের কথা। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে এসে জাতীয় দলে খেলতে চাই।
স্বপ্না আক্তার জিলি:
উপজেলার থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে শেরপুর ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ফয়জুউদ্দিন ফকিরের মেয়ে স্বপ্না আক্তার জিলি। বাবা কৃষি কাজ করেন। সংসারের তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে স্বপ্না ষষ্ঠ। বড় বোন বাসনা আক্তার, শাবানা আক্তার ও বড় ভাই রায়হান মিয়া গার্মেন্টসে চাকরি করেন। আরেক বোন রোজিনার বিয়ে হয়েছে এখন বাড়িতেই থাকেন। ছোট ভাই আবু নাঈম মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। আর স্বপ্না নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সবার ছোট রোহান বাড়িতেই থাকে।
শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের বড়দের ফুটবল খেলা দেখত। তা দেখে ফুটবল খেলার আগ্রহ বাড়ে তার। স্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন উজ্জলকে খেলার আগ্রহের কথা বললে তিনি খেলার সুযোগ করে দেন। স্বপ্না আক্তার জিলি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সংসারের খরচ জোটাতে বাবা ফয়জুউদ্দিনের অনেক কষ্ট হয়। কষ্টের কথা ভেবে তিন সন্তান চাকরি করেন গার্মেন্টস। এ পর্যন্ত আসার পেছনে রয়েছে তার অনেক কষ্টের গল্প। প্রতিদিন নান্দাইল এসে প্র্যাকটিস করতে হয়েছে। দুই কিলোমিটার কাচা রাস্তা হেঁটে ১২ কিলোমিটার গাড়ি করে আসা যাওয়া খরচ হয়েছে ৮০ টাকা। বাবা সে খরচ বহন করেছেন।
স্বপ্না আক্তার জিলি আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘আমি অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত এসেছি। প্র্যাকটিস করতে আসব তার টাকা পর্যন্ত জোগাতে কষ্ট হয়েছে। কিছুদিন আগে টাকার অভাবে প্র্যাকটিস করতে আসতে পারিনি। এতে অনেক দিন খেলা বন্ধ ছিল। পরে এমপিকে জানালে তিনি একটা ব্যবস্থা করে দেন। আমি পর্তুগাল ও স্পেনে যাচ্ছি প্রশিক্ষণে। ফিরে এসে জাতীয় দলে খেলতে চাই।’
এ বিষয়ে তিন কিশোরীর প্রশিক্ষক মগবুল হোসেন বলেন, ‘আমি তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। প্রশিক্ষণের ফলেই তারা এ পর্যন্ত আসতে সুযোগ পেয়েছে।’
নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের কৃতি তিন ফুটবল খেলোয়াড় প্রশিক্ষণে পর্তুগাল যাচ্ছে এটা গর্বের বিষয়। আমি তাদেরকে সব সময় বিভিন্নভাবে সাপোর্ট করেছি। তারা ভালো করুক সেই প্রত্যাশা করি।’
নিজেদের অবস্থান জানান দিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদসহ আশপাশের সড়কে বড় জমায়েত করে গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামায়াতের সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে যাওয়ার আগে আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যায় আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে রুকু আক্তার নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়
৩ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত বুধবার উদ্ধার হওয়া খণ্ডবিখণ্ড লাশটি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২)। তিনি ফতুল্লার চাঁদ ডাইং ফ্যাক্টরির মালিক। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় রুমা আক্তার নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৩ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
৫ ঘণ্টা আগে