সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সুন্দরবনের কোলঘেঁষা গ্রাম মিঠেখালি। চারদিকে খালের বিস্তৃতি থাকলেও পলি পড়ে আজ তা শীর্ণ। একসময় নৌকাই ছিল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। নব্বইয়ের দশকের শেষে মাটির রাস্তাগুলো পাকা হতে শুরু করলে হারিয়ে যায় সেই পালতোলা নৌকার দিন।
যখন ছোট ছিলাম, দেশ বলতে আমার কাছে ছিল আমার গ্রাম। কারণ জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছি সেখানে। ছোটবেলায় শেখা সেই ‘তোমার পরে ঠেকাই মাথা’ ধরনের আবেগ না থাকলেও বিশ্ব মায়ের আঁচল সেটাই ছিল।
আজ বড় হতে হতে বুঝতে পারি, এই বর্ষার ভিজে মাঠ, লবণাক্ত বাতাসে ভরা গ্রীষ্ম, আলগা শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত—সবকিছু প্রাণ পায় মানুষ দিয়ে।
অল্প বয়সের আবেগে শুধু মানুষগুলোই দেশ মনে হলেও, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারছি, সময়ের সঙ্গে মানুষের বদল হলেও মাটি, জল, হাওয়া—কিছুই বদলায় না।
মিঠেখালি গ্রামের নামটা কেমন করে এমন মিষ্টি হলো, তা ঠিকভাবে জানা নেই আমার। তবে গ্রামের প্রাণ—বাজারের কোনো সনাতন ময়রার পরিবার আর তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এই গ্রামের সৌহার্দ্যের পরিচয় বহন করে।
সুন্দরবনের কোলঘেঁষা এই গ্রামটিতে মাঠছোঁয়া বাঁশঝাড় না থাকলেও শিয়ালকাঁটার বেগুনি ফুল পথের পাশ আলো করে থাকে। আজকাল টিন, ইটের পাকা ও আধা পাকা বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে গোলপাতার ছাউনি দেওয়া ঘরগুলো মনে করায় সুন্দরবন কাছেই।
গ্রামের মূল সড়কের পাশেই প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বাইনগাছ আজও হালকা নরম হলুদাভ ফুল ফোটায়। শিহরিত হয় মন, যখন আজও বেঁচে থাকা প্রাচীন কিছু মানুষ বলেন, ‘এইখানে আগে বাঘ আসত, তাই এর নাম বাঘের ভিটা।’
গ্রামটির নামপত্তনের সময় কেউ বুঝতেই পারেনি যে একদিন মানুষের নিজের ভুলে এর মিঠা পানি সব লবণাক্ত হয়ে যাবে। হ্যাঁ, ক্রমাগত জোয়ারের লবণ-পানি আটকে চিংড়ি চাষের ফলে এই অঞ্চলে আজ সুপেয় পানির তীব্র সংকট। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ফিল্টারে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা হলেও আজও খাওয়ার পানির প্রধান উৎস বৃষ্টির পানি। বড় বড় মাটির পাত্রে (মাইট নামে পরিচিত) বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হয়, যা বছরভর কাজে লাগে।
প্রকৃতির এই বৈপরীত্যময় রূপ ছাড়াও এই গ্রামের আরও একটি পরিচয়, এই গ্রামটি বাংলাদেশের অন্যতম নন্দিত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর গ্রাম। এই গ্রামের আকাশকে ঠিকানা করে কবি সমগ্র বিশ্বের বাঙালির জন্য সেই অনন্য বাক্যগুলো লিখেছিলেন, সুরের নোটিফিকেশনের ব্যাকরণ না শিখেও সৃষ্টি করেছিলেন সেই প্রাণের সুর। মিঠেখালি গ্রামের যেকোনো ঋতুর আকাশ তাই মনে করায় সেই অনন্য গান ‘ভালো আছি ভালো থেকো...’
উৎসবপ্রিয় এই গ্রামের মানুষ ফুটবল খেলার মাঠে, মেলা, ঈদ, পুজো-পার্বণে গলা ছেড়ে গায়—‘হৃদয় জমিন রইল পতিত, মানব জমিন রইল পতিত, আবাদ করা আর হলো না। দিন গ্যালো...’ রুদ্র ভালোবেসে তাঁর গ্রামের নাম দিয়েছিলেন ‘স্বর্ণগ্রাম’। রাজধানী ঢাকার কোলাহলকে পেছনে ফেলে সেই স্বর্ণগ্রামে রুদ্র ফিরে এসে শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন। শান্তির সেই স্বর্ণগ্রাম, গ্রামের মাঠ, গাছ, লোনা জল আর মেঠো মানুষগুলোই আমার কাছে আমার দেশের প্রতিভূ।
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সুন্দরবনের কোলঘেঁষা গ্রাম মিঠেখালি। চারদিকে খালের বিস্তৃতি থাকলেও পলি পড়ে আজ তা শীর্ণ। একসময় নৌকাই ছিল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। নব্বইয়ের দশকের শেষে মাটির রাস্তাগুলো পাকা হতে শুরু করলে হারিয়ে যায় সেই পালতোলা নৌকার দিন।
যখন ছোট ছিলাম, দেশ বলতে আমার কাছে ছিল আমার গ্রাম। কারণ জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছি সেখানে। ছোটবেলায় শেখা সেই ‘তোমার পরে ঠেকাই মাথা’ ধরনের আবেগ না থাকলেও বিশ্ব মায়ের আঁচল সেটাই ছিল।
আজ বড় হতে হতে বুঝতে পারি, এই বর্ষার ভিজে মাঠ, লবণাক্ত বাতাসে ভরা গ্রীষ্ম, আলগা শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত—সবকিছু প্রাণ পায় মানুষ দিয়ে।
অল্প বয়সের আবেগে শুধু মানুষগুলোই দেশ মনে হলেও, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারছি, সময়ের সঙ্গে মানুষের বদল হলেও মাটি, জল, হাওয়া—কিছুই বদলায় না।
মিঠেখালি গ্রামের নামটা কেমন করে এমন মিষ্টি হলো, তা ঠিকভাবে জানা নেই আমার। তবে গ্রামের প্রাণ—বাজারের কোনো সনাতন ময়রার পরিবার আর তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা এই গ্রামের সৌহার্দ্যের পরিচয় বহন করে।
সুন্দরবনের কোলঘেঁষা এই গ্রামটিতে মাঠছোঁয়া বাঁশঝাড় না থাকলেও শিয়ালকাঁটার বেগুনি ফুল পথের পাশ আলো করে থাকে। আজকাল টিন, ইটের পাকা ও আধা পাকা বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে গোলপাতার ছাউনি দেওয়া ঘরগুলো মনে করায় সুন্দরবন কাছেই।
গ্রামের মূল সড়কের পাশেই প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বাইনগাছ আজও হালকা নরম হলুদাভ ফুল ফোটায়। শিহরিত হয় মন, যখন আজও বেঁচে থাকা প্রাচীন কিছু মানুষ বলেন, ‘এইখানে আগে বাঘ আসত, তাই এর নাম বাঘের ভিটা।’
গ্রামটির নামপত্তনের সময় কেউ বুঝতেই পারেনি যে একদিন মানুষের নিজের ভুলে এর মিঠা পানি সব লবণাক্ত হয়ে যাবে। হ্যাঁ, ক্রমাগত জোয়ারের লবণ-পানি আটকে চিংড়ি চাষের ফলে এই অঞ্চলে আজ সুপেয় পানির তীব্র সংকট। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ফিল্টারে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা হলেও আজও খাওয়ার পানির প্রধান উৎস বৃষ্টির পানি। বড় বড় মাটির পাত্রে (মাইট নামে পরিচিত) বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হয়, যা বছরভর কাজে লাগে।
প্রকৃতির এই বৈপরীত্যময় রূপ ছাড়াও এই গ্রামের আরও একটি পরিচয়, এই গ্রামটি বাংলাদেশের অন্যতম নন্দিত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর গ্রাম। এই গ্রামের আকাশকে ঠিকানা করে কবি সমগ্র বিশ্বের বাঙালির জন্য সেই অনন্য বাক্যগুলো লিখেছিলেন, সুরের নোটিফিকেশনের ব্যাকরণ না শিখেও সৃষ্টি করেছিলেন সেই প্রাণের সুর। মিঠেখালি গ্রামের যেকোনো ঋতুর আকাশ তাই মনে করায় সেই অনন্য গান ‘ভালো আছি ভালো থেকো...’
উৎসবপ্রিয় এই গ্রামের মানুষ ফুটবল খেলার মাঠে, মেলা, ঈদ, পুজো-পার্বণে গলা ছেড়ে গায়—‘হৃদয় জমিন রইল পতিত, মানব জমিন রইল পতিত, আবাদ করা আর হলো না। দিন গ্যালো...’ রুদ্র ভালোবেসে তাঁর গ্রামের নাম দিয়েছিলেন ‘স্বর্ণগ্রাম’। রাজধানী ঢাকার কোলাহলকে পেছনে ফেলে সেই স্বর্ণগ্রামে রুদ্র ফিরে এসে শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন। শান্তির সেই স্বর্ণগ্রাম, গ্রামের মাঠ, গাছ, লোনা জল আর মেঠো মানুষগুলোই আমার কাছে আমার দেশের প্রতিভূ।
রাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
৩৮ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার জগতি রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেন থামানো, স্টেশন আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
৪০ মিনিট আগেরংপুরের মিঠাপুকুরে জামাই-শ্বশুরের বিবাদ থামাতে গিয়ে সোহান আহমেদ (২৬) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার পাইকান গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সোহান ওই গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।
৪১ মিনিট আগেশেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন দিয়ে এরশাদুল হক নামে এক যুবকের লাশ হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। আজ শুক্রবার দুপুরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও দুই দেশের পুলিশের উপস্থিতিতে ওই লাশ হস্তান্তর করা হয়।
৪৩ মিনিট আগে