যশোরের ঝিকরগাছায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত তিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ৪৮ শিক্ষার্থীর ফল আটকে দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনকারীরা সবাই ঝিকরগাছা মহিলা কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষের পরীক্ষার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন তারা। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৮ জন ঝিকরগাছা সরকারি শহীদ মশিউর রহমান কলেজের শিক্ষার্থী। অন্যরা শার্শা উপজেলার দুটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রকাশিত ফলাফলে তাদের সবাইকে ‘বহিষ্কার/রিপোর্টেড’ দেখানো হয়েছে। 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মার্চ মাসে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্স তৃতীয় বর্ষের ২০২০ সালের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের ৩১২ নম্বর রুমে পরীক্ষায় বসেন ৪৮ জন। মাসব্যাপী এ পরীক্ষায় কোনো অভিযোগ ও ঝামেলা ছাড়াই সম্পন্ন হয়। কিন্তু গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রকাশিত ফলাফলে তাঁদের সবাইকে বহিষ্কার দেখানো হয়েছে। 

মশিউর রহমান কলেজের শিক্ষার্থী শারমিলি আক্তার বলেন, ‘প্রথম বর্ষে ফার্স্টক্লাস রেজাল্ট হয়েছিল। দ্বিতীয় বর্ষেও ফার্স্টক্লাস পেয়েছি। এবার তৃতীয় বর্ষের কোনো অভিযোগ ছাড়াই ভালো পরীক্ষা দিয়েছি। এখন ফলাফল “বহিষ্কার/রিপোর্টেড” এসেছে।’ 

অপর ভুক্তভোগী আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘কলেজ বা কোনো কেন্দ্রের ভুলের জন্য যদি আমাদের রেজাল্টে সমস্যা হয় তাহলে বিষয়টি হতাশাজনক। এমন রেজাল্ট আসায় আমরা দিনদিন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে আমাদের রেজাল্ট প্রকাশিত করা হোক।’ 

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঝিকরগাছা সরকারি মশিউর রহমান কলেজের শিক্ষার্থী ইমন হোসেন, নাভারণ ডিগ্রি কলেজের সরদার মেহেদি হাসান প্রমুখ। 

এদিকে, একসঙ্গে ৪৮ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজ প্রধানেরাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বিষয়টি দ্রুতই সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

শহীদ মশিউর রহমান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিপ্রব কুমার সেন বলেন, ‘পরীক্ষা সম্পন্ন করার দায়-দায়িত্ব কেন্দ্রের। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে।’ 

ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব মো. শাহনুর কবীর বলেন, ‘কেন্দ্রের কোনো ত্রুটি নেই। ফলাফলে রিপোর্টেড থাকা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কলেজের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হারুন-অর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে শিক্ষকেরা খাতা দেখেছেন তাঁরা খাতা পরিবর্তন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। এ কারণে ফলাফলে রিপোর্টেড দেখাচ্ছে। এটি সমাধানে জন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আবেদন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’