দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃতীয় লিঙ্গের একমাত্র প্রার্থী ঊর্মি। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে একতারা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

নির্বাচনে জয়ের জন্য ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত লড়বেন বলে জানিয়েছেন এই প্রার্থী। ঊর্মি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। আমাদের দলটি নতুন। আমি গাজীপুর-৫ আসনের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমাকে দল মনোনয়ন দিয়েছে, এ জন্য লক্ষকোটি শুকরিয়া। আমি গাজীপুর-৫ আসনের মানুষের পাশে থাকতে চাই সুখে-দুঃখে, আপদে-বিপদে। সর্বক্ষণ আমি এলাকার জনগণের পাশে থাকতে চাই।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি সবাই আমাকে ভালোবাসে। আমি ধনী-গরিব সবার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব। এ প্রত্যাশা থেকে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। ফিল্ডে যখন নেমেছি, সবাই বিজয়ী হতে চায়, আমিও বিজয়ী হতে চাই। জয় পরাজয় নিয়েই আমাদের জীবন।’ 

ঊর্মি গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানাধীন বারইবাড়ি এলাকার মো. ফাইজ উদ্দিন খান ও মোসাম্মৎ সালেহা খাতুন দম্পতির সন্তান। 

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ঊর্মির নামে কোনো মামলা নেই। তিনি স্বশিক্ষিত। তাঁর কৃষি বা অকৃষি জমি এবং কোনো বাড়ি-গাড়ি নেই। এ ছাড়া ঊর্মির কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোনো খাতে কোনো বিনিয়োগ নেই। তবে, ব্যবসা থেকে ঊর্মির বাৎসরিক আয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তাঁর কাছে নগদ ৮ লাখ টাকা আছে। এ ছাড়া ঊর্মির পাঁচ ভরি স্বর্ণ আছে। তাঁর ব্যবহারের জন্য ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে টিভি, ফ্রিজ, এসি, ফ্যান। আর আসবাবের মধ্যে আছে খাট, সোফা, ডাইনিং টেবিল। 

ঊর্মি আরও বলেন, ‘আমি যদি নির্বাচিত হই, আমি সব সময় দুঃখী মানুষের পাশে থাকব। আমি চাইব আমার এলাকার মধ্যে যে নেশাদ্রব্যের প্রভাব যেন না পড়ে, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাজ থেকে এ জিনিসটা দূর করতে।’ 

ঊর্মি বলেন, ‘দলের চেয়ারম্যানের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। নির্বাচিত হলে আমি জনগণের জন্য কাজ করব। আশা করি, মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে তাদের পাশে থাকার সুযোগ দেবে।’ 

গাজীপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচনে ঊর্মিসহ মোট আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি (নৌকা)। আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারউজ্জামান (ট্রাক)। তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি-জিএস ও গাজীপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। 

এই আসনের অপর প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন (ঈগল), জাসদ মনোনীত তরিকুল ইসলাম আকন্দ (মশাল), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আল আমিন দেওয়ান (চেয়ার), গণফোরামের সোহেল রানা (উদীয়মান সূর্য)। 

গাজীপুর-৫ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৩। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭২টি এবং নারী ভোটার সংখ্যা হলো ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৪১। এ আসনের কালীগঞ্জ উপজেলা এলাকার ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৯০০ জন এবং অন্যান্য এলাকার ভোটার ৮৯ হাজার ৭১৩ জন। এ আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৪, বুথ ৬৯৫টি।