অর্থমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ঘোষিত বাজেট কীভাবে জনবান্ধব বাজেট হয়েছে, সেটি বুঝিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এখন যে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে, তাতেই কুলিয়ে উঠতে পারছে না মানুষ, এই বাজেটের ফলে যখন আরও বাড়তি ট্যাক্স দিতে হবে এবং জিনিসপত্রের দাম আরও ঊর্ধ্বগতি হবে, মূল্যস্ফীতি যখন আকাশচুম্বী হবে তখন সাধারণ মানুষ কী করবে?’ 

আজ শনিবার দুপুরে নরসিংদী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। 

জি এম কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত দুঃসময় পার করছে। জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে সাধারণ মানুষ কুলিয়ে উঠতে পারছে না। মধ্যবিত্তরা আজকে নিম্নবিত্ত নয়, অনেকে দরিদ্র হয়ে গেছেন। চাকরিজীবীর বেতন বাড়ে নাই, ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে সামনে যদি দেশকে উদ্ধার করতে হয়, তাহলে একদলীয় স্বৈরশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। না হলে না খেয়ে মারা যেতে হবে, কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাবে, সেখানে কথা বলার কোনো অধিকার থাকবে না। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) সমালোচনা করে তিনি বলেন, এখন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে কোনো মিডিয়া—তা প্রচার করতে পারে না।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ৩৩টা বছর দেশ শাসন করেছে। দুটি দল লুটপাট করে খেতে খেতে আবারও পাগল হয়ে গেছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এখনো জানে না কী পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে এবং তারা সেটি ঠিক করতে পারেনি। একদল বলে তত্ত্বাবধায়ক, আরেক দল বলে সংবিধান আর আমরা বলি তত্ত্বাবধায়ক আর সংবিধান নয়, মানুষের মুক্তি চাই, মানুষের ভোটের অধিকার প্রয়োগ চাই।’ 

এ সময় ঘোষিত বাজেটকে জনস্বার্থ বিরোধী দাবি করে বাজেটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একটা কলমের মধ্যে ১৫ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করেছে এই সরকার। আমরা ভোটযুদ্ধে নেমেছি, ক্ষমতার পরিবর্তনের যুদ্ধ। ৩৩ বছরে যে দুই দল জনগণকে কষ্ট দিয়েছে, দুর্নীতি করেছে, টাকা পাচার করেছে, দুঃশাসন দিয়েছে, গণতন্ত্র নষ্ট করেছে—এই দুই দলের বাইরে জনগণের স্বার্থে ৩০০ আসনে লড়ে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে চায় জাতীয় পার্টি।’ 

জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব ওমর ফারুক মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইসলাম এমপি, নাজমা আক্তার এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, আলমগীর শিকদার লোটনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। 

সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের কমিটি ঢাকায় গিয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান আয়োজকেরা।