সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
খুব বেশি দিন নয়, বছর বিশেক আগেও শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে ঢুকলে চোখে পড়ত সারি সারি বইয়ের দোকান। কবি-সাহিত্যিকেরা মেতে উঠতেন আড্ডায়। আড্ডা, গান, তর্কে জমজমাট সাহিত্য-সংস্কৃতির এই প্রাণকেন্দ্র বদলে গেছে। বইয়ের দোকান উঠে গিয়ে ঠাঁই পেয়েছে কাপড়ের দোকান। মুক্তচিন্তা ও আড্ডার স্থান আজিজ মার্কেটের এই রূপান্তরের পেছনে রয়েছে করুণ গল্প—যা পরিবর্তনের, ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি ও মুনাফার।
সম্প্রতি আজিজ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, হাতে গোনা ১২ থেকে ১৫টি বইয়ের দোকান এখনো টিকে আছে। বাকি সব দোকানে নানা রং ও ডিজাইনের পোশাক। আজিজের বইদোকানিরা জানিয়েছেন, ২০০০ সালের পর থেকে আজিজ মার্কেটে একটা-দুইটা করে বাড়তে থাকে কাপড়ের দোকান। মার্কেটের স্থানিক গুরুত্ব ও পোশাকের চাহিদা বিবেচনায় দোকানিরাও বদলাতে শুরু করেন ব্যবসার ধরন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে দোকান ছাড়তে বাধ্য হয় অনেক প্রকাশনা সংস্থা।
আজিজ মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে আছেন এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, আশি ও নব্বই দশকে বইপ্রেমী, তরুণ লেখক, কবি, চিত্রশিল্পী এবং সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রধান আড্ডাস্থল ছিল আজিজ মার্কেট। ১৯৮৭ সালে পাঠকসমাবেশ দিয়ে আজিজ মার্কেটে বইয়ের দোকানের যাত্রা শুরু। এরপর তক্ষশীলা, বিদিত, পড়ুয়া, শ্রাবণ, পলল, বুক পয়েন্ট, প্রাকৃতজন, মনন, প্যাপিরাস, গ্রন্থ গ্যালারি, প্রাচ্য বিদ্যা, সুখ, এপিকসহ ৬০টির বেশি বইয়ের দোকান গড়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যে। ছোট-বড় বইয়ের দোকান, প্রকাশনা সংস্থা, কফি শপ, নাট্যদলের কার্যালয়, গানের ক্যাসেট ও বাদ্যযন্ত্রের দোকান ঘিরে দিনভর চলত সংস্কৃতিপ্রেমী ও সৃজনশীল ব্যক্তিদের আড্ডা। নিয়মিত চলত নতুন বইয়ের প্রকাশনা উৎসব, কবিতাপাঠ এবং লিটল ম্যাগাজিনের আসর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাছাকাছি হওয়ায় আজিজ ঘিরে জমে উঠত নিয়মিত আড্ডা। এসব আড্ডায় আসতেন হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, আহমদ ছফাসহ অনেক খ্যাতিমান সাহিত্যিক।
আজিজে ‘উত্থান পর্ব’র কার্যালয় পরিচিত ছিল আহমদ ছফার ডেরা হিসেবে। সেখানে তরুণ কবি-লেখকদের সঙ্গে তুমুল তর্ক-বিতর্কে মেতে উঠতেন আহমদ ছফা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কবির, তারেক মাসুদ, বিপাশা হায়াত, সৈয়দ হাসান ইমাম, গায়ক লাকী আখান্দ্, জেমস, সৈয়দ আবদুল হাদী, অভিনেতা মারজুক রাসেলসহ অনেকে নিয়মিত আড্ডা দিতেন আজিজে। এককথায় ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেট ছিল দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র।
যেভাবে জায়গা করে নেয় কাপড়ের দোকান
আজিজে প্রথম কাপড়ের দোকানের সূচনা ঘটে এক শিল্পীর হাত ধরে। তিনি বাহার রহমান। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য-কবিতা লেখালেখি বা প্রকাশনার কাজ করতেন বাহার। লেখার পাশাপাশি নিয়মিত আজিজে লেখক-কবিদের সঙ্গে আড্ডাও দিতেন। রোজগারের জন্য চালাতেন ‘নিত্য উপহার’। ১৯৯৪ সাল থেকে ‘নিত্য উপহার’ আজিজে স্ক্রিনপ্রিন্টের মাধ্যমে বিয়ে, জন্মদিনের নিমন্ত্রণ ও উপহার কার্ড তৈরির কাজ করত। তবে ২০০১ সাল থেকে শুরু হয় টি-শার্টের যাত্রা।
বাহার রহমান বলেন, ‘আমরা দেশীয় ঘরানার টি-শার্ট করতাম। সেগুলো আসলে শুধু টি-শার্ট নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু করার আগ্রহ ছিল। আমরা কাপড়ের দোকানের চেয়ে অন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। যেখানে মানুষের গায়ের ক্যানভাসে মানুষের নিজের কথা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, আত্মপরিচয়ের কথা থাকবে।’
আজিজ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ২০০৭ সালের পর থেকে মূলত আজিজ মার্কেটে কাপড়ের দোকানের আধিক্য শুরু হয়। পলল প্রকাশনীর নাজির হোসেন ২০০৬ সাল থেকে আজিজ মার্কেটে এই প্রকাশনীর দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, ২০০৫ সালের পর থেকে কাপড়ের দোকান থেকে বেশি ভাড়া এবং অতিরিক্ত অগ্রিম অর্থ পাওয়া যেত। ফলে বইয়ের দোকান উঠিয়ে কাপড়ের দোকান বসানোর একটি ঝোঁক তৈরি হয়। নাজির হোসেন বলেন, ‘এখন যে বইয়ের দোকানগুলো আছে, সেগুলো আর কাপড়ের দোকানের ভাড়া একই। কিন্তু বই আর কাপড় তো এক বিষয় নয়। তবু আমরা খুব কষ্ট করে টিকে আছি।’
খুব বেশি দিন নয়, বছর বিশেক আগেও শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে ঢুকলে চোখে পড়ত সারি সারি বইয়ের দোকান। কবি-সাহিত্যিকেরা মেতে উঠতেন আড্ডায়। আড্ডা, গান, তর্কে জমজমাট সাহিত্য-সংস্কৃতির এই প্রাণকেন্দ্র বদলে গেছে। বইয়ের দোকান উঠে গিয়ে ঠাঁই পেয়েছে কাপড়ের দোকান। মুক্তচিন্তা ও আড্ডার স্থান আজিজ মার্কেটের এই রূপান্তরের পেছনে রয়েছে করুণ গল্প—যা পরিবর্তনের, ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি ও মুনাফার।
সম্প্রতি আজিজ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, হাতে গোনা ১২ থেকে ১৫টি বইয়ের দোকান এখনো টিকে আছে। বাকি সব দোকানে নানা রং ও ডিজাইনের পোশাক। আজিজের বইদোকানিরা জানিয়েছেন, ২০০০ সালের পর থেকে আজিজ মার্কেটে একটা-দুইটা করে বাড়তে থাকে কাপড়ের দোকান। মার্কেটের স্থানিক গুরুত্ব ও পোশাকের চাহিদা বিবেচনায় দোকানিরাও বদলাতে শুরু করেন ব্যবসার ধরন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে দোকান ছাড়তে বাধ্য হয় অনেক প্রকাশনা সংস্থা।
আজিজ মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে আছেন এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, আশি ও নব্বই দশকে বইপ্রেমী, তরুণ লেখক, কবি, চিত্রশিল্পী এবং সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রধান আড্ডাস্থল ছিল আজিজ মার্কেট। ১৯৮৭ সালে পাঠকসমাবেশ দিয়ে আজিজ মার্কেটে বইয়ের দোকানের যাত্রা শুরু। এরপর তক্ষশীলা, বিদিত, পড়ুয়া, শ্রাবণ, পলল, বুক পয়েন্ট, প্রাকৃতজন, মনন, প্যাপিরাস, গ্রন্থ গ্যালারি, প্রাচ্য বিদ্যা, সুখ, এপিকসহ ৬০টির বেশি বইয়ের দোকান গড়ে ওঠে কয়েক বছরের মধ্যে। ছোট-বড় বইয়ের দোকান, প্রকাশনা সংস্থা, কফি শপ, নাট্যদলের কার্যালয়, গানের ক্যাসেট ও বাদ্যযন্ত্রের দোকান ঘিরে দিনভর চলত সংস্কৃতিপ্রেমী ও সৃজনশীল ব্যক্তিদের আড্ডা। নিয়মিত চলত নতুন বইয়ের প্রকাশনা উৎসব, কবিতাপাঠ এবং লিটল ম্যাগাজিনের আসর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাছাকাছি হওয়ায় আজিজ ঘিরে জমে উঠত নিয়মিত আড্ডা। এসব আড্ডায় আসতেন হুমায়ূন আহমেদ, সেলিনা হোসেন, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, আহমদ ছফাসহ অনেক খ্যাতিমান সাহিত্যিক।
আজিজে ‘উত্থান পর্ব’র কার্যালয় পরিচিত ছিল আহমদ ছফার ডেরা হিসেবে। সেখানে তরুণ কবি-লেখকদের সঙ্গে তুমুল তর্ক-বিতর্কে মেতে উঠতেন আহমদ ছফা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কবির, তারেক মাসুদ, বিপাশা হায়াত, সৈয়দ হাসান ইমাম, গায়ক লাকী আখান্দ্, জেমস, সৈয়দ আবদুল হাদী, অভিনেতা মারজুক রাসেলসহ অনেকে নিয়মিত আড্ডা দিতেন আজিজে। এককথায় ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেট ছিল দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র।
যেভাবে জায়গা করে নেয় কাপড়ের দোকান
আজিজে প্রথম কাপড়ের দোকানের সূচনা ঘটে এক শিল্পীর হাত ধরে। তিনি বাহার রহমান। ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য-কবিতা লেখালেখি বা প্রকাশনার কাজ করতেন বাহার। লেখার পাশাপাশি নিয়মিত আজিজে লেখক-কবিদের সঙ্গে আড্ডাও দিতেন। রোজগারের জন্য চালাতেন ‘নিত্য উপহার’। ১৯৯৪ সাল থেকে ‘নিত্য উপহার’ আজিজে স্ক্রিনপ্রিন্টের মাধ্যমে বিয়ে, জন্মদিনের নিমন্ত্রণ ও উপহার কার্ড তৈরির কাজ করত। তবে ২০০১ সাল থেকে শুরু হয় টি-শার্টের যাত্রা।
বাহার রহমান বলেন, ‘আমরা দেশীয় ঘরানার টি-শার্ট করতাম। সেগুলো আসলে শুধু টি-শার্ট নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু করার আগ্রহ ছিল। আমরা কাপড়ের দোকানের চেয়ে অন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। যেখানে মানুষের গায়ের ক্যানভাসে মানুষের নিজের কথা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, আত্মপরিচয়ের কথা থাকবে।’
আজিজ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ২০০৭ সালের পর থেকে মূলত আজিজ মার্কেটে কাপড়ের দোকানের আধিক্য শুরু হয়। পলল প্রকাশনীর নাজির হোসেন ২০০৬ সাল থেকে আজিজ মার্কেটে এই প্রকাশনীর দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, ২০০৫ সালের পর থেকে কাপড়ের দোকান থেকে বেশি ভাড়া এবং অতিরিক্ত অগ্রিম অর্থ পাওয়া যেত। ফলে বইয়ের দোকান উঠিয়ে কাপড়ের দোকান বসানোর একটি ঝোঁক তৈরি হয়। নাজির হোসেন বলেন, ‘এখন যে বইয়ের দোকানগুলো আছে, সেগুলো আর কাপড়ের দোকানের ভাড়া একই। কিন্তু বই আর কাপড় তো এক বিষয় নয়। তবু আমরা খুব কষ্ট করে টিকে আছি।’
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নে আই আর খান জুট মিলে অগ্নিকাণ্ডে মজুত করা বিপুলপরিমাণে পাট পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেনোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নে দুর্গম চরাঞ্চল দিয়ারা বালুয়া গুচ্ছগ্রামে চাঁদা না পেয়ে ছুরিকাঘাতে ইউনুছ আলী এরশাদ (৩৯) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগেগোলাম মোস্তফা। বয়স ৩৫ বছর। পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন। গুলিতে তাঁর ডান হাতের কবজি থেকে কনুই পর্যন্ত হাড় ভেঙে কয়েক টুকরা হয়েছিল। গত ২৩ জুলাই ভর্তি হওয়ার পর থেকে হাতে ১০ বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পেশায় নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা গুলিব
১ ঘণ্টা আগেজাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বরিশাল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৭ ঘণ্টা আগে