নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মোখলেছুর রহমান (৩৫) নামে এক প্রবাস ফেরত যুবক নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চরাঞ্চলের নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর, দড়িগাঁও ও দড়িপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার। 

নিহত মোখলেস মিয়া সুমেদ আলী গ্রুপের সমর্থক এবং গোপীনাথপুর গ্রামের আশাব উদ্দিনের ছেলে। সংঘর্ষে টেঁটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ জন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। খবর পেয়ে থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নিলক্ষ্যা ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারের জেরে সুমেদ আলী ও সাবেক মেম্বার শহিদ গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে প্রায় প্রতি বছরই বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে লুটপাট ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছিল। এরই জেরে সুমেদ আলী পক্ষের লোকজন কয়েক বছর ধরে এলাকা ছাড়া ছিল। সর্বশেষ সুমেদ আলী গত দেড় মাস আগে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পান। এ নিয়ে তাঁর সমর্থকেরা এলাকা ছাড়া থাকায় এলাকায় আসতে উদগ্রীব হয়। 

মঙ্গলবার দুপুরে আশপাশের ইউনিয়ন থেকে স্পিডবোট ও নৌকাযোগে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকায় প্রবেশ করে সুমেদ আলীর সমর্থকেরা। এ সময় তারা তিনটি গ্রামে ঢুকে গুলি ও টেঁটা ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে প্রতিপক্ষের সমর্থকেরাও অস্ত্রশস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যায় ও আহত হয় ৫ জন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। বিকেলে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত পুলিশ একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। মরদেহটি মর্গে প্রেরণ করা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

নরসিংদীর সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মূলত দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ওই সময় একজন নিহতসহ ৬ থেকে ৭ জন আহত হয়। হত্যা ও হামলার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত মূল হোতাদের ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।