জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
১০-১৫ মিনিট দেরি হলে তবু কথা ছিল। কিন্তু ট্রেন এখন ৩০-৪০ মিনিট দেরিতেও ছাড়ছে। গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে ঘণ্টা দেড়েক দেরিতে। ট্রেনের দেরির বহর এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে কখনো কখনো ক্যালেন্ডারের তারিখও বদলে যাচ্ছে। সকালের ট্রেন রাতে, রাতের ট্রেন পরদিন সকালে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস দেরিতে ছেড়েছে। কক্সবাজার এক্সপ্রেস দেরিতে পৌঁছেছে। বিজয় এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা ২০ মিনিট ও চট্টলা এক্সপ্রেস ৩২ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের মৈত্রী এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা, বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ৪০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন দেরিতে ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের রেলওয়ের ব্যবস্থাপক রতন কুমার চৌধুরী।
এই তো গেল গতকাল দিনের কথা। ১ থেকে ৯ ডিসেম্বর পূর্বাঞ্চলের সব ট্রেনই শিডিউল মানেনি।
কোনো দিন দুই ঘণ্টা আর কোনো দিন এক ঘণ্টা দেরিতেও ট্রেন পৌঁছেছে ও ছেড়েছে। অথচ ১ ডিসেম্বর থেকে পূর্বাঞ্চলের সব কটি ট্রেন শিডিউল মেনে শুধু চলবে না, দেড় ঘণ্টার কম সময়েও পৌঁছাবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।
১ ডিসেম্বর পূর্বাঞ্চলের সব আন্তনগর ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করেন তিনি। সঙ্গে ঘোষণা দেন, সব ট্রেনই আগের চেয়ে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট কম সময়ে পৌঁছবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কম সময় দূরে থাক, আগের সময় অনুযায়ীও পৌঁছতে পারেনি।
এই বিষয়ে জানতে পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি। আজ রোববার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের সিআরবি অফিসে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে গেছেন বলে তাঁর অফিস সহকারী জানান।
রেলের পরিবহন বিভাগ থেকে নতুন সময়সূচি পাওয়া গেছে। টাইমটেবিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ সময় কমেছে ঢাকা-সিলেট রুটের উপবন ট্রেনের। আগের শিডিউলে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগত, এই ট্রেনে নতুন সময়সূচিতে লাগবে ৭ ঘণ্টা। অর্থাৎ আন্তনগর ট্রেনটির ভ্রমণ সময় কমার কথা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
১ থেকে ৯ ডিসেম্বরের ৯ দিনের ভ্রমণ সময় পাওয়া গেছে এই ট্রেনের। কন্ট্রোল অফিস থেকে পাওয়া তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ট্রেনটি কোনো দিনই ঠিক সময়ে ছাড়তে ও পৌঁছতে পারেনি। কোনো দিন এক ঘণ্টা, আর কোনো দিন দুই ঘণ্টা দেরিতেও ট্রেনটি পৌঁছেছে। এমনকি গত শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর ট্রেনটি ৭ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট দেরি করে।
এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছাড়ার কথা রাত ১০টায়, কিন্তু ট্রেনটি পরদিন সকাল ৫টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি সিলেটে প্রায় ৮ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছে। যদিও ওই দিন তেজগাঁওয়ে তিতাস কমিউটার ট্রেনের দুর্ঘটনায় লাইন ব্লক থাকায় ট্রেনটি বিলম্বে ছাড়ে।
গতকাল ৯ ডিসেম্বরও ট্রেনটি আড়াই ঘণ্টা দেরিতে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। অথচ ওই দিন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
রেলওয়ে থেকে বলা হয়, মেইনটেন্যান্সের কারণে ট্রেনটি ছাড়তে দেরি হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বরও ট্রেনটি ২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ৬ ডিসেম্বর ১৫ মিনিট দেরিতে ছাড়লেও টাইমটেবিল অনুযায়ী ৭ ঘণ্টার মধ্যে সিলেটে পৌঁছাতে পারেনি। ওই দিন ট্রেনটি সকাল ৫টায় পৌঁছার কথা থাকলেও, পৌঁছে তা-ও দেড় ঘণ্টা দেরিতে। এমনকি ১ ডিসেম্বর নতুন সময়সূচির দিনও ট্রেনটি ঠিক সময়ে ছাড়তে পারেনি। ওই দিন ট্রেনটি ২৬ মিনিট বিলম্বে ছাড়ে। পৌঁছেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে।
১ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় কমার কথা বলা হয় মহানগর গোধূলী ট্রেনের। নতুন নিয়মে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাত্রী পরিবহন করার কথা ৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। অর্থাৎ ট্রেনটির মাধ্যমে ভ্রমণ সময় কমার কথা ১ ঘণ্টা। কিন্তু এই ৯ দিনে একদিনও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি। যদিও ১-৩ ডিসেম্বর ঠিক সময় (বেলা ৩টা) ট্রেনটি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায় ঢাকা উদ্দেশে।
কিন্তু ট্রেনটি রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছার কথা থাকলেও, প্রতিদিনই এক-দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছে। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে, ৫ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা ১০, ৬ ডিসেম্বর ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট, ৭ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা, ৮ ডিসেম্বর দেড় ঘণ্টা দেরিতে ঢাকায় পৌঁছে। দেখা যাচ্ছে, ট্রেনটি ঠিক সময়ে ছাড়লেও, ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না।
অন্যদিকে মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাত্রী পরিবহন করবে। এ ট্রেনের ভ্রমণ সময় কমার কথা ৫৫ মিনিট। অথচ ট্রেনটি গোধূলীর মতো ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না। এটি গোধূলীর চেয়ে কোনো দিন দুই ঘণ্টা, আর কোনো দিন তিন ঘণ্টা দেরিতেও চট্টগ্রাম পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন উভয় পথে যথাক্রমে ৯ থেকে ৯ ঘণ্টা ২০ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করলেও নতুন সময়সূচিতে ভ্রমণ সময় কমার কথা ৫০ মিনিট করে। কিন্তু ১-৯ ডিসেম্বর ট্রেনটি ঠিক সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে পারেনি। প্রতিদিনই ২০-২৫ মিনিট দেরিতে ছেড়েছে। ট্রেনটি সিলেটে পৌঁছার কথা বিকেল সাড়ে ৪টায়। কিন্তু প্রতিদিনই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের (উভয় পথে) ভ্রমণ সময় ৪৫ মিনিট কমে ৫ ঘণ্টা ৫ মিনিট থেকে ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের ভ্রমণ সময় ৫৫ মিনিট, হাওর এক্সপ্রেসের ৪০, তূর্ণা এক্সপ্রেস ৫০, তূর্ণা ৩০, উপবন ৩০, উদয়ন ৩০ ও উপকূল ২৫ মিনিট সময় কমার কথা বলা হলেও, এসব ট্রেনে প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের মহানগর এক্সপ্রেসের ভ্রমণ সময় ৩০ মিনিট, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের আরেক জোড়া ট্রেন চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময় কমার কথা এক ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু বাস্তবে চট্টলা এক্সপ্রেস প্রতিদিনই এক-দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে আংশিক বিরতিহীন (বিমানবন্দর স্টেশন) চলাচলরত জনপ্রিয় ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন সর্বনিম্ন ৫ ঘণ্টা ১০ ও ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করত। নতুন সময়সূচিতে চারটি ট্রেনই ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করার কথা থাকলেও, ১-৯ ডিসেম্বর ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি।
১ ডিসেম্বর ৪০ মিনিট, ২ ডিসেম্বর ৫০, ৩ ডিসেম্বর ৩০, ৪ ডিসেম্বর ২৫ ও ৫ ডিসেম্বর ২০ মিনিট দেরিতে ঢাকা পৌঁছে। তবে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন ২-৫ মিনিট এদিক-সেদিক হলেও ঠিক সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়েছে।
৫ ডিসেম্বর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ে ফেসবুকে লিখেন রেলওয়েরই সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন। তিনি লেখেন, ‘আজ চট্টগ্রাম-ঢাকা সোনার বাংলা, এখনো বিমানবন্দর যেতে পারেনি। ৫ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট চলছে। অথচ নতুন টাইমটেবিল এবং গতি অনুযায়ী এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। অর্থাৎ প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্ব। পুরো যাত্রাপথে ট্রেনের গতি আজ ৭৫ ওঠেনি। প্রায় চলেছে ৭০ কিমির নিচে।’
মাহবুব কবীর মিলন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন টাইমটেবিল মেইনটেনই করতে না পারলে, যাত্রীদের মিথ্যা আশ্বাস কেন। ট্রেন বিলম্ব ছাড়া এবং দেরিতে পৌঁছার কী কারণ? কোনো দিন রেল কর্মকর্তারা কি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে? আমার তো মনে হয় না, নিয়েছে। কর্মকর্তাদের এই বিষয়ে কঠোর হওয়া উচিত।’
গতকাল ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম প্রবেশ করে ৭টা ৩০ মিনিটে। অথচ এটি চট্টগ্রামে ৩টা ৪০ মিনিটে পৌঁছানোর কথা। ট্রেনটি বিলম্ব করে ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট।
এই ট্রেনের যাত্রী আব্দুল্লাহ আস সাইদ বলেন, ‘প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি কক্সবাজারে পৌঁছে। দ্রুতগামী ননস্টপ ট্রেন যদি এ রকম হয়, পর্যটকেরা ভ্রমণে নিরুৎসাহী হবে।’
পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদারকে শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি উত্তর না দিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
তবে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেশির ভাগ সময় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে শিডিউল বিপর্যয় হয়। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান শেষে ট্রেন চলাচল ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু দুর্ঘটনা ছাড়াও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
১০-১৫ মিনিট দেরি হলে তবু কথা ছিল। কিন্তু ট্রেন এখন ৩০-৪০ মিনিট দেরিতেও ছাড়ছে। গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে ঘণ্টা দেড়েক দেরিতে। ট্রেনের দেরির বহর এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে কখনো কখনো ক্যালেন্ডারের তারিখও বদলে যাচ্ছে। সকালের ট্রেন রাতে, রাতের ট্রেন পরদিন সকালে।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস দেরিতে ছেড়েছে। কক্সবাজার এক্সপ্রেস দেরিতে পৌঁছেছে। বিজয় এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা ২০ মিনিট ও চট্টলা এক্সপ্রেস ৩২ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের মৈত্রী এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা, বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ৪০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন দেরিতে ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের রেলওয়ের ব্যবস্থাপক রতন কুমার চৌধুরী।
এই তো গেল গতকাল দিনের কথা। ১ থেকে ৯ ডিসেম্বর পূর্বাঞ্চলের সব ট্রেনই শিডিউল মানেনি।
কোনো দিন দুই ঘণ্টা আর কোনো দিন এক ঘণ্টা দেরিতেও ট্রেন পৌঁছেছে ও ছেড়েছে। অথচ ১ ডিসেম্বর থেকে পূর্বাঞ্চলের সব কটি ট্রেন শিডিউল মেনে শুধু চলবে না, দেড় ঘণ্টার কম সময়েও পৌঁছাবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম।
১ ডিসেম্বর পূর্বাঞ্চলের সব আন্তনগর ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করেন তিনি। সঙ্গে ঘোষণা দেন, সব ট্রেনই আগের চেয়ে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট কম সময়ে পৌঁছবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কম সময় দূরে থাক, আগের সময় অনুযায়ীও পৌঁছতে পারেনি।
এই বিষয়ে জানতে পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি। আজ রোববার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের সিআরবি অফিসে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে গেছেন বলে তাঁর অফিস সহকারী জানান।
রেলের পরিবহন বিভাগ থেকে নতুন সময়সূচি পাওয়া গেছে। টাইমটেবিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ সময় কমেছে ঢাকা-সিলেট রুটের উপবন ট্রেনের। আগের শিডিউলে ঢাকা থেকে সিলেট যেতে ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগত, এই ট্রেনে নতুন সময়সূচিতে লাগবে ৭ ঘণ্টা। অর্থাৎ আন্তনগর ট্রেনটির ভ্রমণ সময় কমার কথা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
১ থেকে ৯ ডিসেম্বরের ৯ দিনের ভ্রমণ সময় পাওয়া গেছে এই ট্রেনের। কন্ট্রোল অফিস থেকে পাওয়া তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ট্রেনটি কোনো দিনই ঠিক সময়ে ছাড়তে ও পৌঁছতে পারেনি। কোনো দিন এক ঘণ্টা, আর কোনো দিন দুই ঘণ্টা দেরিতেও ট্রেনটি পৌঁছেছে। এমনকি গত শুক্রবার ৮ ডিসেম্বর ট্রেনটি ৭ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট দেরি করে।
এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছাড়ার কথা রাত ১০টায়, কিন্তু ট্রেনটি পরদিন সকাল ৫টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি সিলেটে প্রায় ৮ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছে। যদিও ওই দিন তেজগাঁওয়ে তিতাস কমিউটার ট্রেনের দুর্ঘটনায় লাইন ব্লক থাকায় ট্রেনটি বিলম্বে ছাড়ে।
গতকাল ৯ ডিসেম্বরও ট্রেনটি আড়াই ঘণ্টা দেরিতে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। অথচ ওই দিন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
রেলওয়ে থেকে বলা হয়, মেইনটেন্যান্সের কারণে ট্রেনটি ছাড়তে দেরি হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বরও ট্রেনটি ২ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। ৬ ডিসেম্বর ১৫ মিনিট দেরিতে ছাড়লেও টাইমটেবিল অনুযায়ী ৭ ঘণ্টার মধ্যে সিলেটে পৌঁছাতে পারেনি। ওই দিন ট্রেনটি সকাল ৫টায় পৌঁছার কথা থাকলেও, পৌঁছে তা-ও দেড় ঘণ্টা দেরিতে। এমনকি ১ ডিসেম্বর নতুন সময়সূচির দিনও ট্রেনটি ঠিক সময়ে ছাড়তে পারেনি। ওই দিন ট্রেনটি ২৬ মিনিট বিলম্বে ছাড়ে। পৌঁছেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে।
১ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় কমার কথা বলা হয় মহানগর গোধূলী ট্রেনের। নতুন নিয়মে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাত্রী পরিবহন করার কথা ৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। অর্থাৎ ট্রেনটির মাধ্যমে ভ্রমণ সময় কমার কথা ১ ঘণ্টা। কিন্তু এই ৯ দিনে একদিনও ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি। যদিও ১-৩ ডিসেম্বর ঠিক সময় (বেলা ৩টা) ট্রেনটি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায় ঢাকা উদ্দেশে।
কিন্তু ট্রেনটি রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছার কথা থাকলেও, প্রতিদিনই এক-দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছে। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে, ৫ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা ১০, ৬ ডিসেম্বর ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট, ৭ ডিসেম্বর এক ঘণ্টা, ৮ ডিসেম্বর দেড় ঘণ্টা দেরিতে ঢাকায় পৌঁছে। দেখা যাচ্ছে, ট্রেনটি ঠিক সময়ে ছাড়লেও, ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না।
অন্যদিকে মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাত্রী পরিবহন করবে। এ ট্রেনের ভ্রমণ সময় কমার কথা ৫৫ মিনিট। অথচ ট্রেনটি গোধূলীর মতো ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছে না। এটি গোধূলীর চেয়ে কোনো দিন দুই ঘণ্টা, আর কোনো দিন তিন ঘণ্টা দেরিতেও চট্টগ্রাম পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন উভয় পথে যথাক্রমে ৯ থেকে ৯ ঘণ্টা ২০ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করলেও নতুন সময়সূচিতে ভ্রমণ সময় কমার কথা ৫০ মিনিট করে। কিন্তু ১-৯ ডিসেম্বর ট্রেনটি ঠিক সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে পারেনি। প্রতিদিনই ২০-২৫ মিনিট দেরিতে ছেড়েছে। ট্রেনটি সিলেটে পৌঁছার কথা বিকেল সাড়ে ৪টায়। কিন্তু প্রতিদিনই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের (উভয় পথে) ভ্রমণ সময় ৪৫ মিনিট কমে ৫ ঘণ্টা ৫ মিনিট থেকে ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের ভ্রমণ সময় ৫৫ মিনিট, হাওর এক্সপ্রেসের ৪০, তূর্ণা এক্সপ্রেস ৫০, তূর্ণা ৩০, উপবন ৩০, উদয়ন ৩০ ও উপকূল ২৫ মিনিট সময় কমার কথা বলা হলেও, এসব ট্রেনে প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের মহানগর এক্সপ্রেসের ভ্রমণ সময় ৩০ মিনিট, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটের আরেক জোড়া ট্রেন চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময় কমার কথা এক ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু বাস্তবে চট্টলা এক্সপ্রেস প্রতিদিনই এক-দেড় ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছেছে।
আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে আংশিক বিরতিহীন (বিমানবন্দর স্টেশন) চলাচলরত জনপ্রিয় ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন সর্বনিম্ন ৫ ঘণ্টা ১০ ও ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করত। নতুন সময়সূচিতে চারটি ট্রেনই ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে যাত্রী পরিবহন করার কথা থাকলেও, ১-৯ ডিসেম্বর ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি।
১ ডিসেম্বর ৪০ মিনিট, ২ ডিসেম্বর ৫০, ৩ ডিসেম্বর ৩০, ৪ ডিসেম্বর ২৫ ও ৫ ডিসেম্বর ২০ মিনিট দেরিতে ঢাকা পৌঁছে। তবে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন ২-৫ মিনিট এদিক-সেদিক হলেও ঠিক সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়েছে।
৫ ডিসেম্বর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ে ফেসবুকে লিখেন রেলওয়েরই সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন। তিনি লেখেন, ‘আজ চট্টগ্রাম-ঢাকা সোনার বাংলা, এখনো বিমানবন্দর যেতে পারেনি। ৫ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট চলছে। অথচ নতুন টাইমটেবিল এবং গতি অনুযায়ী এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। অর্থাৎ প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্ব। পুরো যাত্রাপথে ট্রেনের গতি আজ ৭৫ ওঠেনি। প্রায় চলেছে ৭০ কিমির নিচে।’
মাহবুব কবীর মিলন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন টাইমটেবিল মেইনটেনই করতে না পারলে, যাত্রীদের মিথ্যা আশ্বাস কেন। ট্রেন বিলম্ব ছাড়া এবং দেরিতে পৌঁছার কী কারণ? কোনো দিন রেল কর্মকর্তারা কি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে? আমার তো মনে হয় না, নিয়েছে। কর্মকর্তাদের এই বিষয়ে কঠোর হওয়া উচিত।’
গতকাল ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম প্রবেশ করে ৭টা ৩০ মিনিটে। অথচ এটি চট্টগ্রামে ৩টা ৪০ মিনিটে পৌঁছানোর কথা। ট্রেনটি বিলম্ব করে ৩ ঘণ্টা ৫০ মিনিট।
এই ট্রেনের যাত্রী আব্দুল্লাহ আস সাইদ বলেন, ‘প্রায় চার ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি কক্সবাজারে পৌঁছে। দ্রুতগামী ননস্টপ ট্রেন যদি এ রকম হয়, পর্যটকেরা ভ্রমণে নিরুৎসাহী হবে।’
পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদারকে শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি উত্তর না দিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
তবে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেশির ভাগ সময় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে শিডিউল বিপর্যয় হয়। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার অভিযান শেষে ট্রেন চলাচল ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু দুর্ঘটনা ছাড়াও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই পক্ষে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দুজনকে আটক করে
৭ মিনিট আগেউত্তরবঙ্গে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবিতে দফায় দফায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ সমাবেশের পর এবার রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রংপুরের ছাত্র-জনতা। আগামী তিন দিনের মধ্যে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া না হলে এ কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা
৪০ মিনিট আগেপাবনা শহরে রাতের আঁধারে তুষার হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার রাত ৯টার দিকে শহরের খেয়াঘাট রোডে বর্ণমালা কিন্ডারগার্টেনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
১ ঘণ্টা আগেটঙ্গীর তুরাগ তীরে আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আয়োজন করবেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়েরপন্থীরা। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন করবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত কার্যবিবরণী প্রকাশ করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে