মালয়েশিয়া যেতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা দিয়েছিলেন সোহেল তানভীর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি তারা। মন খারাপ করে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। যাত্রাপথে ট্রেন থেকে পড়ে নিখোঁজ হন। 

নিখোঁজের ৪৪ ঘণ্টা পর আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে তাঁর লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় জেলেরা। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং সেটি তানভীরের লাশ বলে শনাক্ত করে। 

আজ বাদ মাগরিব জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। সোহেল তানভীর (২২) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রাম গ্রামের মেরাজ মোল্লার ছেলে। 

তানভীরের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারসহ স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। মরদেহ বাড়িতে আনা হলে আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি এলাকার শত শত মানুষ তাঁকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন। বাদ মাগরিব দেবগ্রাম পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ মাঠে তাঁর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। 

তানভীর গত ৩১ মে বিকেলে কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশন পার হওয়ার পর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে পড়ে মেঘনা নদীতে ডুবে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। 

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘তিন দিন নৌ পুলিশসহ আমরা লাশ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করি। দুপুরে রায়পুরা এলাকায় এক জেলে পানিতে লাশ ভাসতে দেখে সেখানকার পুলিশে খবর দেন। পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাড়ে ৬ লাখ টাকা চুক্তিতে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল তানভীরের। গত ৩১ মে সকালে ঢাকায় যাওয়ার পর জানতে পারেন তাঁর বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সি। এজেন্সির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পাঁচ–সাত দিনের মধ্যে টিকিট ম্যানেজ করে দেওয়া হবে। এ অবস্থায় তানভীর ও তাঁর স্বজনেরা উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশন পার হওয়ার পর সিট থেকে উঠে দরজার সামনে যান তানভীর। অসতর্কতাবশত মেঘনা সেতুতে পড়ে যান। সেখানে উপস্থিত লোকজনের কাছ থেকে বিষয়টি শুনে সঙ্গে থাকা স্বজনেরা বুঝতে পারেন তানভীরই পড়ে গেছেন। এরপর থেকে লাশ খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।