চট্টগ্রামে টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নারীকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করে দেওয়ার জালিয়াতি মামলায় সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিষয়ে তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশ। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নয় এসব আসামির ব্যাপারে তদন্ত করবে পুলিশ। 

আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন। এ ছাড়া মামলায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে। 

নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. অলি উল্লাহ সরকার আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এর আগে মামলাটি কে তদন্ত করবে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ২০ মার্চ আদালতে আবেদন করেন। মামলাটির দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় ঘটনায় জড়িত সহকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের তদন্ত কোন সংস্থা করবে সে বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়। শুরু থেকেই এই মামলা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তদন্ত করছে। 

মামলায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী মির্জাপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা রমজান বিবি ওরফে লাকী নামের এক রোহিঙ্গা নারীর জন্মনিবন্ধন ও জাতীয়তা সনদ করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। 

সে ঘটনায় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। লাকী মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই জন্মনিবন্ধন ও জাতীয়তা সনদ পান। হাটহাজারীর জনৈক আব্দুস সালাম বাবা সেজে রমজান বিবিকে তাঁর মৃত মেয়ে লাকীর নাম ব্যবহার করে সনদ পেতে সহায়তা করেন। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসে লাকীর এনআইডির তথ্য আপলোড করা হয়। পরে এনআইডির স্মার্ট কার্ড তোলার জন্য চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট রোহিঙ্গা রমজানকে লাকি বানিয়ে এনআইডি কার্ড দেওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। লাকীর স্বামী নজির আহমেদও একইভাবে এনআইডি কার্ড বানিয়ে এর আগে সৌদি আরব চলে যান। তাঁদের দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও জান্নাতুল বাকিয়াও একইভাবে ভুয়া এনআইডি কার্ড পেয়েছিলেন। 

এখন পর্যন্ত এ মামলাটিতে গ্রেপ্তার হন ১৮ জন। তার মধ্যে ১২ জন নির্বচন কমিশনের (ইসি) কর্মী। এঁদের ৪ জন স্থায়ী ও ৮ জন অস্থায়ী।