জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
ভারত মহাসাগরে পূর্ব আফ্রিকার উপকূল দিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমালিয়ার জলদস্যুরা প্রথমে একটি ছোট যানে করে আসে। এক জলদস্যু জাহাজটিতে ওঠার চেষ্টা করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাজটিতে জলকামানের ব্যবস্থা থাকলে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঠেকানো যেত। দস্যুতা থেকে রক্ষায় এ রকম আটটি নির্দেশনা রয়েছে ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস বা ইউকেএমটিওর। কিন্তু জাহাজটিতে এমন কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় তা সহজে ছিনতাই হয়ে যায়।
এই অবস্থায় জাহাজের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তর। এতে আন্তর্জাতিক নিয়ম মানার পাশাপাশি জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী রাখার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি জাহাজ চলাচলে জলকামানসহ যেসব সুরক্ষা থাকা দরকার, এমভি আবদুল্লাহে কিছুই ছিল না। এত দূর থেকে জাহাজটি ছিনতাই হওয়াও দুর্ভাগ্যজনক।
তবে জাহাজটিতে সব রকমের নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বলে দাবি করেছেন এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মুখপাত্র উপদেষ্টা মিজানুর ইসলাম। এমভি আবদুল্লাহ দেশে ফেরার পর নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তর মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম।
লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে দস্যুতা প্রতিরোধ এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস বা ইউকেএমটিও। জাহাজ সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দস্যুতা প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য আটটি সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলকামান। কারণ, এটি ব্যবহার করে অবৈধভাবে জাহাজে ওঠা ঠেকানো যায়। কামানের পানির তীব্র বেগের কারণে ছোট নৌযানের পক্ষে জাহাজের কাছাকাছি থাকাই কঠিন হয়ে পড়ে।
এমভি আবদুল্লাহে শুরুর দিকে আক্রমণ করার একটি ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওই ভিডিও করেছেন জাহাজের নাবিকেরা। এতে দেখা যায়, প্রথমে একটি ছোট যানে এসে জাহাজটির পাশ ঘেঁষে চলতে থাকে। একপর্যায়ে এক জলদস্যু জাহাজটিতে ওঠার চেষ্টা করে। জাহাজটি কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি।
দস্যুতা প্রতিরোধে আরও একটি সুরক্ষার কথা বলেছে ইউকেএমটিও। সেটি হলো কাঁটাতার বা রেজর ওয়্যার। এমভি আবদুল্লাহে এই ব্যবস্থাও ছিল না। ইউকেএমটিও জানায়, জাহাজে ঠিকঠাকভাবে এটি স্থাপন করতে পারলে এটাই সবচেয়ে কার্যকর সুরক্ষা পদ্ধতি। ৭৩০ বা ৯৮০ মিলিমিটার ব্যাস রেখে চক্রাকারে ভালো মানের তার ব্যবহার করলে হাতে ব্যবহৃত কোনো সরঞ্জাম দিয়ে সেগুলো কাটা যে কারও পক্ষে কঠিন। ডাবল রোল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। এটি সম্ভব না হলে জাহাজের কাঠামোর বাইরের দিকে এটি রাখার কথা বলা হয়েছে।
ইউকেএমটিওর দেওয়া আরেকটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হলো অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী। ঝুঁকি বিবেচনায় প্রাইভেট মেরিটাইম সিকিউরিটি-সংক্রান্ত নীতিমালা মেনে এই ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আজকের পত্রিকা নিশ্চিত হয়েছে, জিম্মি জাহাজটিতে কোনো অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। এ ছাড়া চালনা-কৌশল বা মাস্টার ও কর্মকর্তাদের দক্ষতার সঙ্গে চক্রাকারে বা এলোপাতাড়ি চালানোর বিষয়টিও সুরক্ষার মধ্যে এনেছে ইউকেএমটিও। কারণ, এই দক্ষতায় চারপাশে প্রবল ঢেউ সৃষ্টি হয়। দস্যুদের নৌযান আর ভিড়তে পারে না। জানা গেছে, এমভি আবদুল্লাহর গতি ছিল খুব কম।
একটি মার্চেন্ট নেভির ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান বলেন, ‘এসব নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকলে ভালো। তবে যেহেতু গত কয়েক বছর জাহাজ অ্যাটাক হওয়ার ঘটনা ঘটেনি, সে কারণে এখন এগুলো বাধ্যতামূলক না।’
এ ব্যাপারে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, ‘জাহাজটি এখনো উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া সেখানকার কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা কথাও বলতে পারিনি। উদ্ধার হওয়ার পর জাহাজটিতে যেসব নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখার কথা, সেসব ছিল কি না, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’
এদিকে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনায় এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৯৭টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, এই নির্দেশনা প্রতিপালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নিয়মও মানতে হবে। এত দিন কোনো কোনো জাহাজ অস্ত্র নিরাপত্তা নিত, আবার কেউ কেউ নিত না।
এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
ভারত মহাসাগরে পূর্ব আফ্রিকার উপকূল দিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সোমালিয়ার জলদস্যুরা প্রথমে একটি ছোট যানে করে আসে। এক জলদস্যু জাহাজটিতে ওঠার চেষ্টা করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাজটিতে জলকামানের ব্যবস্থা থাকলে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঠেকানো যেত। দস্যুতা থেকে রক্ষায় এ রকম আটটি নির্দেশনা রয়েছে ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস বা ইউকেএমটিওর। কিন্তু জাহাজটিতে এমন কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় তা সহজে ছিনতাই হয়ে যায়।
এই অবস্থায় জাহাজের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তর। এতে আন্তর্জাতিক নিয়ম মানার পাশাপাশি জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী রাখার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি জাহাজ চলাচলে জলকামানসহ যেসব সুরক্ষা থাকা দরকার, এমভি আবদুল্লাহে কিছুই ছিল না। এত দূর থেকে জাহাজটি ছিনতাই হওয়াও দুর্ভাগ্যজনক।
তবে জাহাজটিতে সব রকমের নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বলে দাবি করেছেন এমভি আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মুখপাত্র উপদেষ্টা মিজানুর ইসলাম। এমভি আবদুল্লাহ দেশে ফেরার পর নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তর মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম।
লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে দস্যুতা প্রতিরোধ এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস বা ইউকেএমটিও। জাহাজ সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়ে তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে দস্যুতা প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য আটটি সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলকামান। কারণ, এটি ব্যবহার করে অবৈধভাবে জাহাজে ওঠা ঠেকানো যায়। কামানের পানির তীব্র বেগের কারণে ছোট নৌযানের পক্ষে জাহাজের কাছাকাছি থাকাই কঠিন হয়ে পড়ে।
এমভি আবদুল্লাহে শুরুর দিকে আক্রমণ করার একটি ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওই ভিডিও করেছেন জাহাজের নাবিকেরা। এতে দেখা যায়, প্রথমে একটি ছোট যানে এসে জাহাজটির পাশ ঘেঁষে চলতে থাকে। একপর্যায়ে এক জলদস্যু জাহাজটিতে ওঠার চেষ্টা করে। জাহাজটি কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি।
দস্যুতা প্রতিরোধে আরও একটি সুরক্ষার কথা বলেছে ইউকেএমটিও। সেটি হলো কাঁটাতার বা রেজর ওয়্যার। এমভি আবদুল্লাহে এই ব্যবস্থাও ছিল না। ইউকেএমটিও জানায়, জাহাজে ঠিকঠাকভাবে এটি স্থাপন করতে পারলে এটাই সবচেয়ে কার্যকর সুরক্ষা পদ্ধতি। ৭৩০ বা ৯৮০ মিলিমিটার ব্যাস রেখে চক্রাকারে ভালো মানের তার ব্যবহার করলে হাতে ব্যবহৃত কোনো সরঞ্জাম দিয়ে সেগুলো কাটা যে কারও পক্ষে কঠিন। ডাবল রোল ব্যবহার করতে পারলে ভালো। এটি সম্ভব না হলে জাহাজের কাঠামোর বাইরের দিকে এটি রাখার কথা বলা হয়েছে।
ইউকেএমটিওর দেওয়া আরেকটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হলো অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী। ঝুঁকি বিবেচনায় প্রাইভেট মেরিটাইম সিকিউরিটি-সংক্রান্ত নীতিমালা মেনে এই ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আজকের পত্রিকা নিশ্চিত হয়েছে, জিম্মি জাহাজটিতে কোনো অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। এ ছাড়া চালনা-কৌশল বা মাস্টার ও কর্মকর্তাদের দক্ষতার সঙ্গে চক্রাকারে বা এলোপাতাড়ি চালানোর বিষয়টিও সুরক্ষার মধ্যে এনেছে ইউকেএমটিও। কারণ, এই দক্ষতায় চারপাশে প্রবল ঢেউ সৃষ্টি হয়। দস্যুদের নৌযান আর ভিড়তে পারে না। জানা গেছে, এমভি আবদুল্লাহর গতি ছিল খুব কম।
একটি মার্চেন্ট নেভির ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান বলেন, ‘এসব নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকলে ভালো। তবে যেহেতু গত কয়েক বছর জাহাজ অ্যাটাক হওয়ার ঘটনা ঘটেনি, সে কারণে এখন এগুলো বাধ্যতামূলক না।’
এ ব্যাপারে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম বলেন, ‘জাহাজটি এখনো উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া সেখানকার কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা কথাও বলতে পারিনি। উদ্ধার হওয়ার পর জাহাজটিতে যেসব নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখার কথা, সেসব ছিল কি না, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।’
এদিকে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনায় এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে চলাচলকারী ৯৭টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজে অস্ত্রধারী নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করতে বলা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, এই নির্দেশনা প্রতিপালনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নিয়মও মানতে হবে। এত দিন কোনো কোনো জাহাজ অস্ত্র নিরাপত্তা নিত, আবার কেউ কেউ নিত না।
এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সময় ছুরিকাঘাতে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ কে এম আব্দুর রশিদকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাজারীবাগ মডেল থানায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।
১ ঘণ্টা আগেসিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রিপন মিয়াকে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সিরাজগঞ্জ শহরের রহমতগঞ্জে ছয়টি পিকআপ ভ্যানে চাঁদা চাইলে তাঁকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
২ ঘণ্টা আগেবিশ্বের একমাত্র স্বীকৃত উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতাল চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি বিমানে স্থাপিত উড়ন্ত হাসপাতালটি চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিশেষায়িত হাসপাতালটি চক্ষুরোগসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দিতে ১৮ থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে অবস্থান করবে...
২ ঘণ্টা আগে২০২৩ সালের ২২ আগস্ট সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক কাটাগাঙ্গের এ লোহার সেতু ভেঙে নদীতে ডুবে যায়। ওই ঘটনায় ট্রাকচালক ওমর ফারুক ও চালকের সহকারী জাকির হোসেন কলিন্স নিহত হয়েছিলেন। এরপর সপ্তাহখানেক সরাসরি যানচলাচল বন্ধ থাকার পর ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি আবারও জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হয়...
২ ঘণ্টা আগে