ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলায় নিহতের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহত জাকির হোসেন শাকিলের মা বাদী হয়ে ৭১ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। 

মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। 

নিহত শাকিল সোনাগাজী উপজেলার কুঠিরহাট মান্দারী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। 

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘এ ঘটনায় দুজন বাদী হয়ে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’ 

আসামিরা হলেন-ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বিকম ওরফে রেন্সু করিম, যুবলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ। 

এর আগে সোমবার নিহত অটোরিকশাচালক মো. সবুজের ভাই মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছাত্রদের গুলি করার নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে নিজাম হাজারীকে প্রধান আসামি করা হয়। 

গত ৪ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। বেলা দুইটার দিকে আওয়ামী লীগের মিছিল মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে আসলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। 

এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানে সংঘর্ষ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।