লক্ষ্মীপুর সদরের দীঘলি এবং রামগতির বড়খেরী ও চর আবদুল্লাহসহ তিন ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ চলাকালে এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। সকালে সদর উপজেলার দীঘলির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলতাফ হোসেন, উত্তর দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে নৌকার প্রার্থী সালাউদ্দিন জাবেদের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া একই ইউপির রাজাপুর মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

এদিকে অনিয়মের অভিযোগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণ খাগুডিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদ ও নৌকার এজেন্ট মাজহারুল ইসলামকে আটক করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন। তিনি জানান, কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মের অভিযোগে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদ কবির ও নৌকার এজেন্ট মাজহারুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া রামগতির বড়খেরী ও চর আবদুল্লাহ থেকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

দীঘলির ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলতাফ হোসেন জানান, ‘নৌকার প্রার্থী সালাউদ্দিন জাবেদের নির্দেশে তাঁর ভাইয়ের নেতৃত্বে ভোটকেন্দ্রে গেলে তাঁরা হামলা চালান। এ বিষয়ে আমি নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। এর আগেও কয়েকবার আমার ও সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।’ 

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী সালাউদ্দিন জাবেদ। তিনি বলেন, ‘কে বা কারা আলতাফ হোসেনের ওপর হামলা চালিয়েছে, সেটা জানা নেই। এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না।’ 

তিন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮২১। এই তিন ইউপির ২৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বেশির ভাগ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায়, ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। সদর উপজেলার দীঘলি ও রামগতির বড়খেরী ইউনিয়নে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এবং চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক বলেন, ‘স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ওপর হামলার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জানান, ‘হামলার বিষয়টি সঠিক নয়। খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলার সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’ 

পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ৩ ইউপিতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যদি কেউ কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৩৫০ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছেন।