পূজামণ্ডপে সংগীত পরিবেশনে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে: পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ১৯

চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের মঞ্চে ইসলামি ভাবধারার সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন এই তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আটক দুজন হলেন তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক শহীদুল করিম (৪২) ও দারুল ইরফান একাডেমির শিক্ষক নুরুল ইসলাম (৩৪)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল সন্ধ্যায় নগরের কোরবানিগঞ্জ এলাকায় জেএম সেন হলে একটি পূজামণ্ডপের মঞ্চে সংগঠনটির ছয় সদস্য দুটি সংগীত পরিবেশন করে। এর মধ্যে একটি সংগীত ‘ইসলামি গান’ বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রাতেই বিক্ষোভের পাশাপাশি সেখানে সড়ক অবরোধ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এ ঘটনায় পূজা উদ্‌যাপন কমিটির একজনকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ জানানো হয়। পরে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, পূজা উদ্‌যাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে গান পরিবেশন করার অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিল্পীগোষ্ঠীর শহীদুল করিম, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা ও মামুন নামের ছয়জন শিল্পী সেখানে গান পরিবেশন করেন। দুটি গানের মধ্যে একটির ভাষার শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে বলে প্রতীয়মান হয়। পূজামণ্ডপে পরিবেশন করা দুটি গান অতি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

উপকমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এলে আমরা তাৎক্ষণিক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করি। বিশেষ করে অনুষ্ঠানে যাঁরা এই ধরনের গান পরিবেশন করেছেন, তাঁদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা করি। পরে অভিযান চালিয়ে ছয়জনের মধ্যে দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁদের গান পরিবেশনায় কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বা এই গানের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না কি না বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদেরও আটক করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া পূজা উদ্‌যাপন কমিটির যাঁরা তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, বিশেষ করে কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তাঁকে আমরা এখনো পাইনি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এটা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। আটক দুজনকে এখন পর্যন্ত আমরা গ্রেপ্তার দেখাইনি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরাই জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গতকাল রাতে নগরের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপের মঞ্চে দুটি সংগীত পরিবেশন করে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সংগঠন। এর মধ্যে একটি ছিল ইসলামি ভাবধারার সাম্যের গান। এই গানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান জানিয়েছিলেন, মহানগর পূজা উদ্‌যাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে সেখানে গান দুটি পরিবেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’, অন্যটি সম্প্রীতির গান ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক যুগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, শঙ্কায় ভারত

হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর দেশ ‘মবের মুল্লুক’: সামিনা লুৎফা

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের কার্গো জাহাজ, ‘ঐতিহাসিক’ বলা হচ্ছে যে কারণে

পরশুরামে ছুরিকাঘাতে তরুণ নিহত

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সংলাপ শুরু কাল, চলবে পুরো নভেম্বর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত