কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে অপহরণ শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তাদের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লোকজন। দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে পাহাড়ে ধরে নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযান চালিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে যারা গাছ বাগান, লেবু বাগানসহ দিন মজুরের কাজ করেন এমন লোকজনকে ধরে নিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত বছর পূর্ব হাইদগাঁও মাহাদাবাদ এলাকায় মো. আরিফুল্লাহ নামের এক যুবককে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মারধর করেন। এর আগে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের এগ্রো প্রজেক্টে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। প্রায় সময় উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়াই, শ্রীমাই পাহাড় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়া চলছে বলে স্থানীয় দিনমজুর ও কাঠুরিয়ারা জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে পটিয়া, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, দোহাজারি, চন্দনাইশ এলাকার গহিন অরণ্য থেকে এসব সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে।
২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিনি ট্রাক চালক মোসলেম উদ্দিনকে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের প্রজেক্টের পাশ থেকে ১০-১২ জনের কয়েকজন পাহাড়ি সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যান। ট্রাক চালক চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। গত ২ বছরেও পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ সময় অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের হাতে।
ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরিমল তঞ্চঙ্গ্যা ও পরিতোষ তঞ্চঙ্গ্যা নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
তবে পিবিআই দাবি করেছে, এই দুই আসামি গাড়িচালক মোসলেমকে হত্যার পাশাপাশি তাঁর লাশ গুমের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরপরই ওই দুই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে গত বছরের ৩১ জুলাই পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় অভিযান চালায় পিবিআই। তবে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে লাশের কোনো সন্ধান মেলেনি।
দিকে প্রতি বছর মৌসুমে পাহাড়ের পটিয়া সীমান্তে পাহাড়ি সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। পাহাড়ের শ্রীমাই, বুদবুদি ছড়া, রাঙ্গুনিয়া কমলছড়ি, ক্রুশিয়া, বেনিপাড়া, ছীপছড়িপাড়া, ডলুছড়ি, এলাকায় প্রায় সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। দক্ষিণ শ্রীমাই এলাকার মো. শফি (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।
সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া-বান্দরবান সীমান্ত হয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা পটিয়ার পাহাড়ে প্রবেশ করছে। অস্ত্রধারী এসব সন্ত্রাসীরা মানুষকে ধরে নিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করছে। কেউ টাকা দিতে না পারলে তাকে মারধর করা হচ্ছে। পাহাড়ে যারা লেবু বাগান করেছে প্রতিটি লেবু বাগানের মালিকের কাছ থেকে সন্ত্রাসীরা টাকা আদায় করছে।
পটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তে পাহাড়ের লেবু বাগান থেকে ৩২ বাগান মালিক ও লেবুচাষিকে অপহরণের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে পটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তের কড়লডেঙ্গা পাহাড়ের ছালদাছড়ির মুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুক্তিপণ আদায় করে মঙ্গলবার রাতে তাদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। অপহৃত সবাই বোয়ালখালী ও পটিয়ার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে অপহৃত লেবু বাগানের মালিক সরোয়ার আলম জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে তাঁরা কড়লড়েঙ্গা পাহাড়ের লেবু বাগানে কাজ করতে যান। দুপুরের দিকে ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্রের মুখে ৩০-৩৫ জন লেবুচাষি ও বাগান মালিককে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের গহিনে নিয়ে গিয়ে তাঁদের মারধর করে। পরে ২১ জন শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিয়ে বাকি ১১ জন বাগান মালিককে আটকে রাখে। ১১ জনের মধ্যে শাহেদ ও আসিফকে বিকেলে ছেড়ে দিয়ে আটকদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য খবর দেয়। তাঁরা এসে পরিবারের কাছে খবর দিলে পরিবারের লোকজন মুক্তিপণের ব্যবস্থা করে জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনেন। বাকি ৯ জনকে গত বুধবার ভোর রাতে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ জানা যায়নি।
এদিকে বাগান মালিক ও লেবুচাষিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন বিষয়টি পটিয়া থানা-পুলিশকে জানালে তাঁরা খবর পেয়ে বোয়ালখালী ও পটিয়া থানা যৌথ পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে।
পটিয়া কেলিশহরের আহমদ হোসেনের ছেলে বাগান মালিক মো. জাহেদকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকেও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে তারা কত টাকা মুক্তিপণ দিয়েছে তা জানা যায়নি। সন্ত্রাসীরা কয়েকজনকে বেশ মারধর করেছে। এ ঘটনায় লেবুচাষি ও বাগান মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে সোমবার দিনভর পটিয়ার গহিন পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানার খোঁজে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে। সকালে র্যাব ও পুলিশ উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার হয়ে গহিন পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করে। একই সময়ে পটিয়া সীমান্তের পার্বত্য চট্টগ্রাম বান্দরবানের সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের একটি টিম অভিযান চালায়। তবে খুঁজে পায়নি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানা।
জানা গেছে, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় নিয়ন্ত্রণ রাখতে দীর্ঘদিন ৩ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সক্রিয়। তারা প্রতিনিয়ত পাহাড়ের বাগান মালিক ও কাজে যাওয়া শ্রমিকদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি চাকমা গ্রুপ ও একটি বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা জলপাই কালারের পোশাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করে থাকে।
গত ১২ এপ্রিল পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা ১২ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে পরে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর র্যাব, পুলিশ ও সীমান্তের বান্দরবানের ডলুপাড়া ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বান্দরবান সীমান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের মেজর মোহাম্মদ তাহমিদ ও পটিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কবির আহমদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) তারিক রহমান, র্যাব-৭ এর পরিদর্শক নূরে আলম ও পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এলাকার কৃষক ও সাধারণ লোকজনকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। যার কারণে র্যাব, পুলিশ ও পটিয়া সীমান্তের বান্দরবানের ডলু ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর টিম একই সময়ে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে পাননি। অভিযান চলমান রাখা হবে এবং অপহরণকারীদের অবস্থান জানা গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে অপহরণ শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তাদের ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লোকজন। দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে পাহাড়ে ধরে নিয়ে পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযান চালিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে যারা গাছ বাগান, লেবু বাগানসহ দিন মজুরের কাজ করেন এমন লোকজনকে ধরে নিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত বছর পূর্ব হাইদগাঁও মাহাদাবাদ এলাকায় মো. আরিফুল্লাহ নামের এক যুবককে অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মারধর করেন। এর আগে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের এগ্রো প্রজেক্টে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। প্রায় সময় উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়াই, শ্রীমাই পাহাড় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়া চলছে বলে স্থানীয় দিনমজুর ও কাঠুরিয়ারা জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে পটিয়া, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, দোহাজারি, চন্দনাইশ এলাকার গহিন অরণ্য থেকে এসব সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে।
২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মিনি ট্রাক চালক মোসলেম উদ্দিনকে পূর্ব হাইদগাঁও আলম মাস্টারের প্রজেক্টের পাশ থেকে ১০-১২ জনের কয়েকজন পাহাড়ি সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যান। ট্রাক চালক চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। গত ২ বছরেও পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ সময় অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় অপহৃতের বড় ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এই মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের হাতে।
ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পরিমল তঞ্চঙ্গ্যা ও পরিতোষ তঞ্চঙ্গ্যা নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
তবে পিবিআই দাবি করেছে, এই দুই আসামি গাড়িচালক মোসলেমকে হত্যার পাশাপাশি তাঁর লাশ গুমের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরপরই ওই দুই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে গত বছরের ৩১ জুলাই পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় অভিযান চালায় পিবিআই। তবে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও সেখানে লাশের কোনো সন্ধান মেলেনি।
দিকে প্রতি বছর মৌসুমে পাহাড়ের পটিয়া সীমান্তে পাহাড়ি সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। পাহাড়ের শ্রীমাই, বুদবুদি ছড়া, রাঙ্গুনিয়া কমলছড়ি, ক্রুশিয়া, বেনিপাড়া, ছীপছড়িপাড়া, ডলুছড়ি, এলাকায় প্রায় সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। দক্ষিণ শ্রীমাই এলাকার মো. শফি (৪৪) নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।
সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া-বান্দরবান সীমান্ত হয়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা পটিয়ার পাহাড়ে প্রবেশ করছে। অস্ত্রধারী এসব সন্ত্রাসীরা মানুষকে ধরে নিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করছে। কেউ টাকা দিতে না পারলে তাকে মারধর করা হচ্ছে। পাহাড়ে যারা লেবু বাগান করেছে প্রতিটি লেবু বাগানের মালিকের কাছ থেকে সন্ত্রাসীরা টাকা আদায় করছে।
পটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তে পাহাড়ের লেবু বাগান থেকে ৩২ বাগান মালিক ও লেবুচাষিকে অপহরণের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে পটিয়া-বোয়ালখালী সীমান্তের কড়লডেঙ্গা পাহাড়ের ছালদাছড়ির মুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুক্তিপণ আদায় করে মঙ্গলবার রাতে তাদের ছেড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। অপহৃত সবাই বোয়ালখালী ও পটিয়ার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে অপহৃত লেবু বাগানের মালিক সরোয়ার আলম জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে তাঁরা কড়লড়েঙ্গা পাহাড়ের লেবু বাগানে কাজ করতে যান। দুপুরের দিকে ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্ত্রের মুখে ৩০-৩৫ জন লেবুচাষি ও বাগান মালিককে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের গহিনে নিয়ে গিয়ে তাঁদের মারধর করে। পরে ২১ জন শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দিয়ে বাকি ১১ জন বাগান মালিককে আটকে রাখে। ১১ জনের মধ্যে শাহেদ ও আসিফকে বিকেলে ছেড়ে দিয়ে আটকদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য খবর দেয়। তাঁরা এসে পরিবারের কাছে খবর দিলে পরিবারের লোকজন মুক্তিপণের ব্যবস্থা করে জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনেন। বাকি ৯ জনকে গত বুধবার ভোর রাতে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ জানা যায়নি।
এদিকে বাগান মালিক ও লেবুচাষিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন বিষয়টি পটিয়া থানা-পুলিশকে জানালে তাঁরা খবর পেয়ে বোয়ালখালী ও পটিয়া থানা যৌথ পুলিশের একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে।
পটিয়া কেলিশহরের আহমদ হোসেনের ছেলে বাগান মালিক মো. জাহেদকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকেও মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে তারা কত টাকা মুক্তিপণ দিয়েছে তা জানা যায়নি। সন্ত্রাসীরা কয়েকজনকে বেশ মারধর করেছে। এ ঘটনায় লেবুচাষি ও বাগান মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে সোমবার দিনভর পটিয়ার গহিন পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানার খোঁজে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়েছে। সকালে র্যাব ও পুলিশ উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার হয়ে গহিন পাহাড়ে এ অভিযান পরিচালনা করে। একই সময়ে পটিয়া সীমান্তের পার্বত্য চট্টগ্রাম বান্দরবানের সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের একটি টিম অভিযান চালায়। তবে খুঁজে পায়নি পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানা।
জানা গেছে, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় নিয়ন্ত্রণ রাখতে দীর্ঘদিন ৩ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সক্রিয়। তারা প্রতিনিয়ত পাহাড়ের বাগান মালিক ও কাজে যাওয়া শ্রমিকদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি চাকমা গ্রুপ ও একটি বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসী গ্রুপ। তারা জলপাই কালারের পোশাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করে থাকে।
গত ১২ এপ্রিল পটিয়া উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীরা ১২ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে পরে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর র্যাব, পুলিশ ও সীমান্তের বান্দরবানের ডলুপাড়া ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বান্দরবান সীমান্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেনাবাহিনীর ডলুপাড়া ক্যাম্পের মেজর মোহাম্মদ তাহমিদ ও পটিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কবির আহমদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) তারিক রহমান, র্যাব-৭ এর পরিদর্শক নূরে আলম ও পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এলাকার কৃষক ও সাধারণ লোকজনকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। যার কারণে র্যাব, পুলিশ ও পটিয়া সীমান্তের বান্দরবানের ডলু ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর টিম একই সময়ে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে পাননি। অভিযান চলমান রাখা হবে এবং অপহরণকারীদের অবস্থান জানা গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লুৎফল আমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি মাছের প্রজেক্ট দেখতে যাচ্ছিলাম। আজমপুর রেলওয়ে কলোনি মসজিদের সামনে দুজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণ পর আরও ৪-৫ জন যুবক এসে স্বাধীনকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে স্বপন স্বাধীনকে লম্বা ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। বিষয়টি তাৎক্
১ ঘণ্টা আগেআওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার ওপর এত ভরসা করত, কিন্তু তাদের খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাশ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম
১ ঘণ্টা আগেতিন ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের ‘অযোগ্য’ বলছে একটি পক্ষ। আরেক পক্ষের অভিযোগ, আহ্বায়ক কমিটিতে এখন ‘ভূমিদস্যু’ ও ‘চাঁদাবাজদের’ দৌরাত্ম্য। তাই আলাদা হয়েছেন তাঁরা। তবে নগর বিএনপির আহ্বায়ক বলছেন, দ্বন্দ্ব-বিভাজনের কথা তাঁর জানা নেই।
২ ঘণ্টা আগেরাজধানীর আজিমপুরে অপহৃত শিশুকে মোহাম্মদপুর থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
২ ঘণ্টা আগে