ফরিদগঞ্জ হাসপাতালে শয্যা বাড়লেও জনবলসংকটে ব্যাহত সেবা

৫০ শয্যার জনবলকাঠামো অনুমোদনের জন্য ইতিপূর্বে কয়েক দফা চিঠির পর সর্বশেষ ২০ জুন আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) 
প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ২৮
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৩৩
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত বুধবার চিকিৎসকের কক্ষের সামনে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব এলাকার সাহেলা বেগম নিজের ও তাঁর সন্তানের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ফেরত যেতে বাধ্য হন তিনি। অন্যদিকে চরমথুরার শ্বাসকষ্টের রোগী আবুল কালাম সকাল ১০টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১২টার সময়ও চিকিৎসক দেখাতে পারেননি।

গত বুধবার ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদের জনবল সংকটনিয়ে চলছে এই সরকারি হাসপাতাল। অথচ উপজেলার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র শ্রেণির লোকজন প্রতিদিনই এখানে ভিড় করছে চিকিৎসাসেবা নিতে।

ষাটের দশকে স্থাপিত হাসপাতালটি ২০২১ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়নও। কিন্তু সে অনুযায়ী বর্ধিত জনবলকাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় চিকিৎসাসেবা আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে উপজেলার ৬ লক্ষাধিক মানুষের সেবা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপে পড়ছেন হাসপাতালের কর্মীরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এ ছাড়া জরুরি বিভাগে প্রায় ১০০ এবং অন্তর্বিভাগে ৭৫ থেকে ৮৫ জন রোগী সেবা নেয়। ভর্তি রোগীর চাপ থাকায় অনেকে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নেয়।

বর্তমানে ৩১ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে মোট ৩৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ২৪ জন। তাঁদের মধ্যে আবার বেশ কয়েকজন সাব-সেন্টার থেকে প্রেষণে এসে এখানে রয়েছেন। সেই সঙ্গে এখানকার কয়েকজন প্রেষণে অন্যত্র কাজ করছেন। ৫০ শয্যার হাসপাতালের জনবলকাঠামো অনুমোদন হলে হাসপাতালটিতে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা বেড়ে হবে ১১৩।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে একজন চিকিৎসককে দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগী দেখতে হয়; যেখানে একজনের ৩০ থেকে ৪০ জনের বেশি রোগী দেখা উচিত নয়। এভাবে একটি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চলতে পারে না।’

এ নিয়ে কথা হলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মুজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। ফলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জনবলসংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার দায় এসে পড়ে চিকিৎসকদের ঘাড়ে। তার পরও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ‘৫০ শয্যার জনবলকাঠামো অনুমোদনের জন্য ইতিপূর্বে কয়েক দফা চিঠির পর সর্বশেষ ২০ জুন আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ বৃহৎ এই উপজেলার জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমাদের হাসপাতালে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নানা রোগে আক্রান্ত রোগীরা সেবা নিতে আসে। খুব কমসংখ্যক জনবল দিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের সেবা দিতে হয় আমাদের।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত