বরগুনার আমতলীতে বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলতে গিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ১২ জনকে বরিশাল শেবাচিম ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উপজেলার ঘটখালী (উতশীতলা) গ্রামে আজ শুক্রবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

জানা গেছে, চাওড়া ইউনিয়নের ঘটখালী (উতশীতলা) গ্রামের তোতা হাওলাদারের সঙ্গে আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী গ্রামে জামাল বিশ্বাসের ৫০ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে আসছে। ওই জমি তোতা হাওলাদার ও তার লোকজন ভোগদখল করছে। জামাল বিশ্বাসের দাবি ওই জমি আদালত তার পক্ষে রায় দিয়েছে। 

আজ শুক্রবার সকালে অর্ধ শতাধিক লোকজন নিয়ে জামাল বিশ্বাস ওই বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলতে আসে। এতে তোতা হাওলাদারের লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দুপক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। 

ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাব্বি গুরুতর আহত আমান হাওলাদার, ইব্রাহিম বিশ্বাস, আইরিন, জসিম হাওলাদার, শহীদুল হাওলাদার, শেফালী, আকলিমা, জামাল বিশ্বাস, পারভেজ, কালাম বিশ্বাস, ছালাম বিশ্বাস, সোহরাফ খাঁনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছে এবং বাবুল হাওলাদার ও মহসিনকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 

অপর আহত জান্নাতি, সারমিন, রহিমা, বিউটি, রোজিনা, শামীমা, রাকিব ও রোজিনা আক্তারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, ট্রাকে করে দেশীয় অস্ত্রসহ জামাল বিশ্বাস লোকজন নিয়ে জমিতে ঘর তুলতেছিল। এতে তোতার মিয়ার লোকজন বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। 

আহত জামাল বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই জমি নিয়ে আমার সঙ্গে তোতার দীর্ঘদিন করে মামলা চলে আসছে। আদালত আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। ওই জমিতে আমি ঘর তুলতে গেলে আমাকে ও আমার লোকজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আমি এ ঘটনায় শাস্তি দাবি করছি।’ 

তোতা হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভোগদখলীয় জমিতে জোরপূর্বক জামাল বিশ্বাস অর্ধশতাধিক ভাটারিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে ঘর তুলতে ছিল। আমি এতে বাধা দেওয়ায় আমার ছেলেসহ অন্তত ১৫ জনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবি করছি।’
 
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাব্বি বলেন, ‘গুরুতর আহত ১২ জনকে বরিশাল শেবাচিম ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।’