তরমুজের গাড়িতে চাঁদা আদায়ে বাধা দেওয়ায় আ.লীগ নেতাকে মারধর

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৯: ৪৭

বরগুনার আমতলীতে তরমুজের গাড়িতে চাঁদা আদায়ে বাধা দেওয়ায় ওয়াদুদ মৃধা ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মজিবুর রহমান চৌকিদার ও তাঁর ভাই রেজাউল করিম কুদ্দুস মৃধাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর ভাই আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

মজিবুর রহমান আরও অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আইনজীবী এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনিরের বাধায় মামলা করতে পারেননি। মামলা করলে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালীবাড়িসংলগ্ন স্থানে ওয়াদুদ মৃধা, বাবুল ফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজসহ ৫-৭ জন স্থানীয় সন্ত্রাসী তরমুজের গাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা তুলে আসছে। এতে অতিষ্ঠ তরমুজ ব্যবসায়ীরা।

গত শনিবার রাতে তরমুজের গাড়িতে চাঁদা তুলতে বাধা দেন স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মজিবুর রহমান চৌকিদার। এতে সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। গত সোমবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধার নেতৃত্বে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে কালীবাড়ি গ্রামে এসে মজিবুর রহমানকে মারধর করছিল। এতে বাধা দেন তাঁর ভাই মো. রেজাউল করিম কুদ্দুস।

পরে সন্ত্রাসীরা দুই ভাইকেই মারধর শুরু করে। তাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা একটি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা দুই ভাইকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। খবর পেয়ে আমতলী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোটরসাইকেলটি জব্দ করে স্থানীয় গ্রামপুলিশ মো. নয়া মিয়ার জিম্মায় রাখে।

এ ঘটনায় মজিবুর রহমান চৌকিদার আমতলী থানায় মামলা করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আইনজীবী এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি তাঁকে মামলা করতে দেননি। উল্টো মামলা করলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন আহত আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমান চৌকিদার।

অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান এইচএম মনিরুল ইসলাম মনির পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধা, বাবুল ফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজ এলাকার চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নেছার উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও মাহবুব কাজী বলেন, মোটরসাইকেলে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী এসে মজিবুর রহমান চৌকিদারকে মারধর শুরু করে। এ সময় তাঁর ভাই মো. রেজাউল করিম এগিয়ে আসলে তাঁকেও মারধর করেছে। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা একটি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।

আহত গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মজিবুর রহমান চৌকিদার বলেন, ‘তরমুজের গাড়িতে চাঁদা তুলতে বাধা দেওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের পালিত সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধা, বাবুল ফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজসহ ৫-৭ জন আমাকে মারধর করেছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে মামলা করতে দেননি। মামলা করলে চেয়ারম্যান আমাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন।’

গ্রাম পুলিশ মো. নয়া মিয়া বলেন, ‘থানা থেকে পুলিশ এসে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে আমার হেফাজতে রেখে গেছেন। আমতলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে গ্রাম পুলিশ নয়া মিয়ার হেফাজতে রেখে এসেছি।’

গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আইনজীবী এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের রেকর্ড ভাঙল ১৪ বছর পর

৩ মাসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা

যানজটে গুলি করে ফেঁসে গেলেন জাপার সাবেক এমপি, অস্ত্রসহ আটক

শোরুম উদ্বোধন করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরীমনি, কী ঘটেছিল সেখানে

এয়ারক্র্যাফটে স্বর্ণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত