বরিশাল নগরীতে একটি রিভলবার নিয়ে গতকাল রোববার ধস্তাধস্তি করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) জেলা শাখার আহ্বায়ক এ কে এম মর্তুজা আবেদীন ও মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্না। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশালে তিক্ততা ও দূরত্ব বাড়ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির মধ্যে। 

ধস্তাধস্তির ঘটনায় আজ সোমবার জাপা মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে শ্রমিক লীগ নেতা মান্নাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। একই দিন সকালে বরিশাল প্রেসক্লাবে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি সংবাদ সম্মেলনে মান্নার বিচার দাবি করে। এর জবাবে বিকেলে নগর শ্রমিক লীগ একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল নগরের লঞ্চঘাটসংলগ্ন ভূমি কার্যালয়ের সামনে রিভলবার নিয়ে দুই নেতার মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। 

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এ কে এম মোস্তফা বলেন, কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীনের ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা করার পরও মান্না মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। শিগগিরই মান্নাকে গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মহানগর জাপার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম গফুর, জেলা জাপার সদস্যসচিব এম এ জলিল, মহানগর জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক আকতার রহমান সপ্রু, সদর উপজেলার আহ্বায়ক বশির আহম্মেদ ঝুনু প্রমুখ। 

• বরিশালে জাপা ও শ্রমিক লীগ নেতার মধ্যে রিভলবার নিয়ে ধস্তাধস্তি

অন্যদিকে, আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর শ্রমিক লীগ। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বেল্লাল হোসেন শিশির লিখিত বক্তব্যে বলেন, রইজ আহম্মেদ মান্নাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছেন মর্তুজা আবেদীন। তিনি পরিকল্পিতভাবে মোবাইল ফোন বুক পকেটে রেখে ঘটনা ভিডিও করেছেন। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নিতে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

শ্রমিক লীগের সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু, প্যানেল মেয়র রফিকুর ইসলাম খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, রাজিব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

জাতীয় নির্বাচনের আগে মহাজোটের শরিক জাপার সঙ্গে আওয়ামী লীগের এ ঘটনা বরিশালের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন, ‘নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। এটি রাজনৈতিক স্টান্টবাজি।’ 

তবে জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও নগর জাপার সদস্যসচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তিক্ততা সৃষ্টি তো হয়েছেই। জাপার আহ্বায়কের ওপর দিনদুপুরে হামলা করেছে, অথচ গ্রেপ্তার হলো না। এ ঘটনায় জাপা ও আওয়ামী লীগের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি তো হবেই। দলের মহাসচিবও মান্নার বিচার চেয়েছেন। 

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রিভলবার নিয়ে ধস্তাধস্তির ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে এখনো অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’