প্রতিনিধি, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও জয়পুরহাট
দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের ফলে দুধ বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। বড় বড় দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান, মিষ্টির দোকান ও রেস্তোরাঁ দুধ কেনা কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ রাখায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় খামারিরা অর্ধেক দামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাভাবিক সময়ে এই অঞ্চলে খামারিরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৪৫ টাকায় দুধ বিক্রি করেন। এখন তাঁদের ২৫ টাকায় দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। খামারিরা বলছেন, বোতলজাত এক লিটার পানি ২০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন সেই দামে তাঁদের দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।
দেশের মধ্যে অন্যতম দুগ্ধাঞ্চল বলে খ্যাত বাঘাবাড়ী অঞ্চলে (বেড়া-সাঁথিয়া-শাহজাদপুর) প্রাণ, আকিজ, ইগলু, পিউরি মিল্কসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনা কমিয়ে বা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এ অঞ্চলের খামারিদের প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।
খামারিদের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে বেড়া উপজেলার (সাঁথিয়ার ভারপ্রাপ্ত) প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌর চন্দ্র সাহা বলেন, এই অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অনেক কোম্পানি দুধ কেনা কমিয়ে দিয়েছে বা বন্ধ রেখেছে। এতে উৎপাদনের বাকি অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ লিটার দুধ খোলাবাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে খামারিদের।
বেড়ার ইছামতীর বেসরকারি দুগ্ধ ক্রয়কেন্দ্র পিউরি মিল্কের ব্যবস্থাপক আবদুর রউফ মানিক বলেন, চলতি বিধিনিষেধের কারণে তাঁরা দুধ কেনা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছেন।
আকিজের বেড়ার দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার শাহ বলেন, আগের তুলনায় খামারিদের কাছ থেকে প্রতিদিন অর্ধেক ১ হাজার ৫০০ লিটার নিচ্ছেন তাঁরা।
মিল্ক ভিটার আওতাধীন বোয়ালমারী প্রাথমিক সমবায় সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, তাঁর সমিতি থেকে প্রতিদিন ৫০০ লিটার দুধ সরবরাহ করা হয়। এখন ২২০ লিটার দুধ যাচ্ছে।
বেড়া পৌর এলাকার মৈত্রাবাঁধা মহল্লার প্রাইমারি স্কুলশিক্ষিকা জাতীয় খেতাবপ্রাপ্ত খামারি মাহফুজা খানম বলেন, প্রতিদিন তিনি ইগলুতে ১৫০ ও ব্র্যাকে ৫০ লিটার দুধ দেন। দুটি প্রতিষ্ঠানই এখন দুধ নিচ্ছে না। খোলাবাজারে তিনি সে দুধ অর্ধেক দামে বিক্রি করছেন।
মিল্ক ভিটা বাঘাবাড়ি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা প্রতিদিনের চাহিদা সমিতির কেন্দ্রে কেন্দ্রে জানিয়ে দেন। সে অনুযায়ী সমিতির খামারিরা দুধ কিনে থাকেন।
ঘিওর: গতকাল সকালে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিষ্টির দোকান, রেস্তোরাঁ বন্ধ। চাহিদা না থাকায় খামারিরা দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। ১ লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৫-২৫ টাকায়।
দেওভোগ গ্রামের খামারি আবদুল আলীম বলেন, ‘আমার খামারে নয়টি গরুর মধ্যে তিনটি গাভি। খামারে প্রতিদিন খরচ হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। এখন দুধ বেচে খরচের টাকাও উঠছে না।
সিংজুরীর দুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, সিংজুরী বাজারে প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার লিটার দুধ বেচাকেনা হয়। কঠোর বিধিনিষেধে যানবাহন ও মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় দুধের অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া সামাজিক সব অনুষ্ঠানও বন্ধ।
তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম বলেন, বিধিনিষেধ চলাকালে খামারিদের সুবিধার্থে উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে দুধ বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
কালাই: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার চিত্রও একই। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে প্রান্তিক ও আধুনিক খামারিদের প্রতি লিটার দুধ ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার পুনট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খোলাবাজারে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন দুধ বিক্রেতারা।
খামারি কামরুল হাসান বলেন, লকডাউনে গোখাদ্যের দাম বাড়ে, শুধু দুধের দাম কমে। এমন সমস্যার সমাধান না হলে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দেবে।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মো. নুরুজ্জামান বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় মিষ্টির দোকান দুধ কেনা বন্ধ রেখেছে। এতে খামারিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
{প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, বেড়া (পাবনা), ঘিওর (মানিকগঞ্জ) ও কালাই (জয়পুরহাট)}
দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের ফলে দুধ বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। বড় বড় দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান, মিষ্টির দোকান ও রেস্তোরাঁ দুধ কেনা কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ রাখায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় খামারিরা অর্ধেক দামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাভাবিক সময়ে এই অঞ্চলে খামারিরা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৪৫ টাকায় দুধ বিক্রি করেন। এখন তাঁদের ২৫ টাকায় দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। খামারিরা বলছেন, বোতলজাত এক লিটার পানি ২০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন সেই দামে তাঁদের দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।
দেশের মধ্যে অন্যতম দুগ্ধাঞ্চল বলে খ্যাত বাঘাবাড়ী অঞ্চলে (বেড়া-সাঁথিয়া-শাহজাদপুর) প্রাণ, আকিজ, ইগলু, পিউরি মিল্কসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনা কমিয়ে বা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এ অঞ্চলের খামারিদের প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।
খামারিদের আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে বেড়া উপজেলার (সাঁথিয়ার ভারপ্রাপ্ত) প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌর চন্দ্র সাহা বলেন, এই অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অনেক কোম্পানি দুধ কেনা কমিয়ে দিয়েছে বা বন্ধ রেখেছে। এতে উৎপাদনের বাকি অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ লিটার দুধ খোলাবাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে খামারিদের।
বেড়ার ইছামতীর বেসরকারি দুগ্ধ ক্রয়কেন্দ্র পিউরি মিল্কের ব্যবস্থাপক আবদুর রউফ মানিক বলেন, চলতি বিধিনিষেধের কারণে তাঁরা দুধ কেনা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছেন।
আকিজের বেড়ার দুগ্ধ সংগ্রহ কেন্দ্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার শাহ বলেন, আগের তুলনায় খামারিদের কাছ থেকে প্রতিদিন অর্ধেক ১ হাজার ৫০০ লিটার নিচ্ছেন তাঁরা।
মিল্ক ভিটার আওতাধীন বোয়ালমারী প্রাথমিক সমবায় সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, তাঁর সমিতি থেকে প্রতিদিন ৫০০ লিটার দুধ সরবরাহ করা হয়। এখন ২২০ লিটার দুধ যাচ্ছে।
বেড়া পৌর এলাকার মৈত্রাবাঁধা মহল্লার প্রাইমারি স্কুলশিক্ষিকা জাতীয় খেতাবপ্রাপ্ত খামারি মাহফুজা খানম বলেন, প্রতিদিন তিনি ইগলুতে ১৫০ ও ব্র্যাকে ৫০ লিটার দুধ দেন। দুটি প্রতিষ্ঠানই এখন দুধ নিচ্ছে না। খোলাবাজারে তিনি সে দুধ অর্ধেক দামে বিক্রি করছেন।
মিল্ক ভিটা বাঘাবাড়ি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা প্রতিদিনের চাহিদা সমিতির কেন্দ্রে কেন্দ্রে জানিয়ে দেন। সে অনুযায়ী সমিতির খামারিরা দুধ কিনে থাকেন।
ঘিওর: গতকাল সকালে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিষ্টির দোকান, রেস্তোরাঁ বন্ধ। চাহিদা না থাকায় খামারিরা দুধ বিক্রি করতে পারছেন না। ১ লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৫-২৫ টাকায়।
দেওভোগ গ্রামের খামারি আবদুল আলীম বলেন, ‘আমার খামারে নয়টি গরুর মধ্যে তিনটি গাভি। খামারে প্রতিদিন খরচ হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। এখন দুধ বেচে খরচের টাকাও উঠছে না।
সিংজুরীর দুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, সিংজুরী বাজারে প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার লিটার দুধ বেচাকেনা হয়। কঠোর বিধিনিষেধে যানবাহন ও মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় দুধের অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া সামাজিক সব অনুষ্ঠানও বন্ধ।
তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম বলেন, বিধিনিষেধ চলাকালে খামারিদের সুবিধার্থে উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে দুধ বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
কালাই: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার চিত্রও একই। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে প্রান্তিক ও আধুনিক খামারিদের প্রতি লিটার দুধ ২০-২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার পুনট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খোলাবাজারে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন দুধ বিক্রেতারা।
খামারি কামরুল হাসান বলেন, লকডাউনে গোখাদ্যের দাম বাড়ে, শুধু দুধের দাম কমে। এমন সমস্যার সমাধান না হলে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দেবে।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মো. নুরুজ্জামান বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় মিষ্টির দোকান দুধ কেনা বন্ধ রেখেছে। এতে খামারিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
{প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, বেড়া (পাবনা), ঘিওর (মানিকগঞ্জ) ও কালাই (জয়পুরহাট)}
নিজেদের অবস্থান জানান দিতে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদসহ আশপাশের সড়কে বড় জমায়েত করে গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন তাবলিগ জামায়াতের সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে যাওয়ার আগে আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুম হত্যায় আরও এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে রুকু আক্তার নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়
৩ ঘণ্টা আগেনারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গত বুধবার উদ্ধার হওয়া খণ্ডবিখণ্ড লাশটি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন মাসুমের (৬২)। তিনি ফতুল্লার চাঁদ ডাইং ফ্যাক্টরির মালিক। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় রুমা আক্তার নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
৩ ঘণ্টা আগেরাজশাহীতে মাসব্যাপী তাঁতবস্ত্র ও কুটিরশিল্প মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম শরীফ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন।
৫ ঘণ্টা আগে