বিভুরঞ্জন সরকার
একটি বই ভালো না খারাপ, সেটা নিজে না পড়ে বোঝা যায় কীভাবে? বইটি নিয়ে কোনো আলোচনা কেউ লিখলে সেটা পড়ে অথবা পরিচিত কারও কাছে শুনে। তাপস মজুমদারের বইটি হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়ে চোখ পড়ল শেষ কভারে অধ্যাপক সনৎকুমার সাহার একটি ছোট মন্তব্যে। তিনি প্রথমেই লিখেছেন, ‘আমি অভিভূত’। সনৎকুমার সাহার মতো বিদগ্ধ মানুষ যে বই পড়ে অভিভূত, সেই বই ভালো না হয়ে পারে? এক নিশ্বাসের পড়া বলে একটি কথা আছে! হ্যাঁ, বলা যায়, লেখক ও ব্যাংকার তাপস মজুমদারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই ‘কাহিনি যুদ্ধের নয় জীবনের: কিশোর চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ ও অতঃপর’ আমি এক নিশ্বাসেই পড়ে ফেলেছি।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি কম হয়নি, বইপত্রও অনেক প্রকাশিত হয়েছে। তবে সব বই পড়েই যে সবাই খুশি হতে পেরেছেন, তা নয়। একাত্তর নিয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ যে বই আমাকে বেশি আলোড়িত করেছিল, সেটা শহীদজননী জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। দ্বিতীয় ভালো লাগা ও মনে দাগ কেটে থাকা বইটি হলো দুই খণ্ডে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলমের ‘গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধ’। বলতে দ্বিধা নেই, তাপস মজুমদারের বইটিও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত গ্রন্থের তালিকায় একটি অসাধারণ সংযোজন বলেই আমার মনে হচ্ছে।
১৫২ পৃষ্ঠার সুন্দর প্রচ্ছদ ও ভালো ছাপা-বাঁধাইয়ের এই বইয়ের পাতায় পাতায় মানুষের কথাই আছে। পড়তে গিয়ে মনে হবে গল্প, কিন্তু এগুলো আসলে গল্প নয়, মানুষের কাহিনি। তবে কাহিনি চিত্রণে কোথাও কোনো বিষয়ে অতিরঞ্জন নেই। লেখক কাহিনির বিস্তার ঘটিয়েছেন আগে-পরের ঘটনা নিজের মতো করে সাজিয়ে, তবে অত্যন্ত আন্তরিক ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ‘কিশোর চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ ও অতঃপর’ পড়ে পাঠককে বলতেই হবে যে তিনি অনেক পেশাদার লেখকের চেয়ে কম মুনশিয়ানার পরিচয় দেননি।
একাত্তর তো এখন অনেকের কাছে ইতিহাস। কিন্তু সেই ইতিহাসকে জীবনের জীবন্ত গল্প করে তোলাটা খুব সহজ কাজ নয়। অথচ তাপস মজুমদার সেটাই করেছেন। বালকবেলায় দেখা ঘটনাগুলো ঠিক ইতিহাসের ঢঙে, তারিখের পর তারিখ সাজিয়ে বিবৃত না করে আলাদা আলাদা শিরোনামে পরিচ্ছেদ ভাগ করে মিষ্টি গদ্যে লিখেছেন। প্রতিটি পরিচ্ছেদের শিরোনামই আকর্ষণীয়।
যেমন মা দিবস, নীরন্ধ্র মেঘের বৃষ্টি, আগুন লেগেছে কোথা, কবে খুলবে স্কুল, নিরুদ্দেশ যাত্রা, সবাই চলে গেছে, রাতের চেয়েও অন্ধকার সকাল, জীবনের জীর্ণ ক্ষুদ্র নাও অশ্রুজলে ভাসে, কোন দিকে যে বাইব তরী বিরাট কালো নীরে, জয় বাংলা, বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে ইত্যাদি।
কীভাবে একাত্তর এল, তারপর ৯ মাসের যুদ্ধকাল শুধু নয়, সদ্য স্বাধীন দেশের সূচনাকালের প্রায় সব দরকারি তথ্যই উল্লেখ করেছেন, তবে প্রচলিত ধারায় নয়। মুক্তিযুদ্ধ মানে শুধু রণাঙ্গনের কাহিনি নয়, এটা বস্তুত সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কাহিনি। কে, কীভাবে এই কাহিনির চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন, তা নিজের পরিবার ও পরিচিতজনদের কথা বলতে গিয়ে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যার সঙ্গে একাত্ম হতে পাঠককে বেগ পেতে হবে না।
বই থেকে একটিও উদ্ধৃতি না দিয়ে শুধু বলব, বইটি পড়লে মনে হবে, সময়টা নষ্ট হলো না। কেননা, বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ভিন্নধর্মী আলেখ্য সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্বাস করি, তা আগ্রহী পাঠককে আন্দোলিত করবে।
একটি বই ভালো না খারাপ, সেটা নিজে না পড়ে বোঝা যায় কীভাবে? বইটি নিয়ে কোনো আলোচনা কেউ লিখলে সেটা পড়ে অথবা পরিচিত কারও কাছে শুনে। তাপস মজুমদারের বইটি হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়ে চোখ পড়ল শেষ কভারে অধ্যাপক সনৎকুমার সাহার একটি ছোট মন্তব্যে। তিনি প্রথমেই লিখেছেন, ‘আমি অভিভূত’। সনৎকুমার সাহার মতো বিদগ্ধ মানুষ যে বই পড়ে অভিভূত, সেই বই ভালো না হয়ে পারে? এক নিশ্বাসের পড়া বলে একটি কথা আছে! হ্যাঁ, বলা যায়, লেখক ও ব্যাংকার তাপস মজুমদারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই ‘কাহিনি যুদ্ধের নয় জীবনের: কিশোর চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ ও অতঃপর’ আমি এক নিশ্বাসেই পড়ে ফেলেছি।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি কম হয়নি, বইপত্রও অনেক প্রকাশিত হয়েছে। তবে সব বই পড়েই যে সবাই খুশি হতে পেরেছেন, তা নয়। একাত্তর নিয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ যে বই আমাকে বেশি আলোড়িত করেছিল, সেটা শহীদজননী জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। দ্বিতীয় ভালো লাগা ও মনে দাগ কেটে থাকা বইটি হলো দুই খণ্ডে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলমের ‘গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধ’। বলতে দ্বিধা নেই, তাপস মজুমদারের বইটিও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত গ্রন্থের তালিকায় একটি অসাধারণ সংযোজন বলেই আমার মনে হচ্ছে।
১৫২ পৃষ্ঠার সুন্দর প্রচ্ছদ ও ভালো ছাপা-বাঁধাইয়ের এই বইয়ের পাতায় পাতায় মানুষের কথাই আছে। পড়তে গিয়ে মনে হবে গল্প, কিন্তু এগুলো আসলে গল্প নয়, মানুষের কাহিনি। তবে কাহিনি চিত্রণে কোথাও কোনো বিষয়ে অতিরঞ্জন নেই। লেখক কাহিনির বিস্তার ঘটিয়েছেন আগে-পরের ঘটনা নিজের মতো করে সাজিয়ে, তবে অত্যন্ত আন্তরিক ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ‘কিশোর চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ ও অতঃপর’ পড়ে পাঠককে বলতেই হবে যে তিনি অনেক পেশাদার লেখকের চেয়ে কম মুনশিয়ানার পরিচয় দেননি।
একাত্তর তো এখন অনেকের কাছে ইতিহাস। কিন্তু সেই ইতিহাসকে জীবনের জীবন্ত গল্প করে তোলাটা খুব সহজ কাজ নয়। অথচ তাপস মজুমদার সেটাই করেছেন। বালকবেলায় দেখা ঘটনাগুলো ঠিক ইতিহাসের ঢঙে, তারিখের পর তারিখ সাজিয়ে বিবৃত না করে আলাদা আলাদা শিরোনামে পরিচ্ছেদ ভাগ করে মিষ্টি গদ্যে লিখেছেন। প্রতিটি পরিচ্ছেদের শিরোনামই আকর্ষণীয়।
যেমন মা দিবস, নীরন্ধ্র মেঘের বৃষ্টি, আগুন লেগেছে কোথা, কবে খুলবে স্কুল, নিরুদ্দেশ যাত্রা, সবাই চলে গেছে, রাতের চেয়েও অন্ধকার সকাল, জীবনের জীর্ণ ক্ষুদ্র নাও অশ্রুজলে ভাসে, কোন দিকে যে বাইব তরী বিরাট কালো নীরে, জয় বাংলা, বঞ্চিত করে বাঁচালে মোরে ইত্যাদি।
কীভাবে একাত্তর এল, তারপর ৯ মাসের যুদ্ধকাল শুধু নয়, সদ্য স্বাধীন দেশের সূচনাকালের প্রায় সব দরকারি তথ্যই উল্লেখ করেছেন, তবে প্রচলিত ধারায় নয়। মুক্তিযুদ্ধ মানে শুধু রণাঙ্গনের কাহিনি নয়, এটা বস্তুত সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কাহিনি। কে, কীভাবে এই কাহিনির চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন, তা নিজের পরিবার ও পরিচিতজনদের কথা বলতে গিয়ে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যার সঙ্গে একাত্ম হতে পাঠককে বেগ পেতে হবে না।
বই থেকে একটিও উদ্ধৃতি না দিয়ে শুধু বলব, বইটি পড়লে মনে হবে, সময়টা নষ্ট হলো না। কেননা, বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ভিন্নধর্মী আলেখ্য সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্বাস করি, তা আগ্রহী পাঠককে আন্দোলিত করবে।
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৪ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৪ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪