আরিফ আবেদ আদিত্য
ম্যানচেস্টার থেকে খুব সকালে রওনা দিই লিভারপুলের উদ্দেশে। লিভারপুল এই শহর থেকে বেশি দূরে নয়, মাত্র এক ঘণ্টার যাত্রাপথ। ভ্রমণে সঙ্গীসাথি থাকলে একধরনের, আবার কেউ সঙ্গে না থাকলে আরেক ধরনের রোমাঞ্চ অনুভূত হয়। একা ভ্রমণে কোনো তাড়া থাকে না, যেকোনো জিনিস গভীর অভিনিবেশসহকারে অনুভব করা যায়। এবারের একা যাত্রায় সুদূর কেন্ট থেকে ম্যানচেস্টারে এসে এক ঘনিষ্ঠ ভাইয়ের বাসায় উঠেছি। এখানে রাত্রি যাপন করে সকাল সকাল রওনা দিই বিটলসের আঁতুড়ঘর লিভারপুল শহরে! সেখানে বাস ও ট্রেন দুইভাবেই যাওয়া যায়—ইংল্যান্ডে তাৎক্ষণিক ট্রেনের ভাড়া বিমানের মতো অনেক বেশি পড়ে, তাই বাসই সহজসাধ্য সবার জন্য।
যখন রওনা দিই, ম্যানচেস্টারের জানুয়ারির সকাল তখন কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্ন। ইউকের যতই উত্তরের দিকে যাওয়া যায়, আবহাওয়া ততই ধূসর রং ধারণ করে। আমি যেখানে থাকি, লন্ডনের পূর্ব দিকে ক্যান্টাবরি শহরে, সেটি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ও সাগরঘেরা হওয়ায় সূর্যের প্রচুর আলো পাওয়া যায়। অন্যদিকে ম্যানচেস্টার বা আরও উত্তরে স্কটল্যান্ডে গেলে এই সূর্যের আলোর স্বল্পতা দেখা যায়, যার ফলে এদিকে শীত বেশি অনুভূত হয়। ভোরের যাত্রায় কয়েক পরতের শীত নিবারক পোশাক পরে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাজির হই লিভারপুলে। যাত্রাপথে ধরা পড়ে ইংল্যান্ডের অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ—মহাসড়কের দুই ধারে সবুজের অবারিত প্রান্তর—মসৃণ পিচঢালাই পথে স্থানে স্থানে চোখে পড়ে ছোট ছোট গ্রাম আর খামারবাড়ি। পুরো ইংল্যান্ডে কান্ট্রিসাইড বা গ্রামগুলো যেন একইভাবে তৈরি। প্রত্যকের দোতলা ডুপ্লেক্স বাড়ির আঙিনা ফুলে ফুলে সাজানো। নিরিবিলি গোছানো। একটা কি দুটো ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ির সামনে পার্ক করা। কোনো কোলাহল নেই, কোনো তাড়াও নেই—জীবন এখানে অনেক শান্ত-নির্মল।
সকাল ৯টায় পৌঁছে যাই লিভারপুলে। আগের রাতেই গুগল করে কী কী দেখব, একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করে রেখেছিলাম। লিভারপুলে বাস থেকে নেমেই তাই গুগল ম্যাপের শরণাপন্ন হই। ম্যাপ ধরে প্রথমেই চলে যাই লিভারপুলের বিখ্যাত ম্যাজি নদীর তীরে। ম্যাজি (Mersey) নদীকে বাংলায় অনেকে মার্সেই নামে লেখে। যদিও এর সঠিক উচ্চারণ হবে ম্যাজি, স্থানীয়রা ‘স’ কে ‘জ’-এর মতো করে। এই নদীর নামেই ‘ম্যাজি বিট’ (Mersey Beat)। গত শতকের ষাটের দশকে পৃথিবী কাঁপানো এক সংগীতের ধারার জন্ম হয়েছিল। ম্যাজি নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল তৎকালীন তুঙ্গস্পর্শী ব্যান্ডদল ‘বিটলস’। এখানে এক ছোট অপরিসর পানশালায় ছিল এর আঁতুড়ঘর। লিভারপুলে আগমনের প্রধান কারণ এই বিটলসের আঁতুড়ঘর দর্শন ও এর সদস্যদের স্মৃতিধন্য শহরের অলিগলিতে বিচরণ।
গবেষকদের মতে, ম্যাজি নদীর তীরে ১৯৫৮-৬৪ সালের মধ্যে প্রায় ৫০০ ব্যান্ড দলের জন্ম হয়েছিল; এর মধ্যে ৩৫০টি গ্রুপ নিয়মিত কনসার্ট, বার ও পাবে বাজাত। আরও একটি বিস্ময়কর ঘটনা হলো, পৃথিবীর ইতিহাসে সংগীতবিষয়ক সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা ‘ম্যাজি বিট’ (Mersey Beat)-এর জন্মও এই শহরেই, ১৯৬১ সালে। এই ‘মেজি বিট’-এর একেকটি সংখ্যা তখন ৭৫ হাজার কপি পর্যন্ত বিক্রি হতো। এর সম্পাদক ছিলেন বিটলসের সদস্য জন লেলনের বন্ধু-সহপাঠী বিল হ্যারি। তাঁরা একই কলেজে পড়তেন। ১৯৬২ সালে মেজি বিট পত্রিকার আয়োজনে পাঠকদের ভোটে বিটলস সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ড দল হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল, যা বিটলসের উত্থানের প্রথম সাফল্য হিসেবে ধরা হয়। এর পর থেকেই মূলত এদের স্থানীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাত্রা শুরু।
বিটলস নিয়ে আসলে বেশি কিছু বলার নেই। এঁদের গান ও ব্যান্ড দলের সদস্যদের প্রভাব গত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এমনই ছিল যে ‘বিটলস ম্যানিয়া’য় আক্রান্ত হয়েছিল কয়েক প্রজন্ম। এর রেশ এখনো শেষ হয়নি। অভাবনীয় ব্যাপার হলো, এই শহরে জন্ম নেওয়া একদল কিশোর মিলে গঠন করেছিল বিটলস।
ম্যাজি নদীর তীরে বিটলসের চার কিংবদন্তি সদস্য জন লেলন, পল ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন, রিংগো স্টার ছাড়াও জন্ম হয়েছিল গ্যারি মার্সডেনের, যাঁর ‘ফেরি, ক্রস দ্য ম্যাজি’ গান আটলান্টিকের দুই পাড়ে এই নদীর খ্যাতি ছড়িয়ে দিয়েছিল। লিভারপুলের আরও অন্যান্য বিখ্যাত পপ সংগীতশিল্পীর জন্ম। যেমন: বিটলসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ররি স্টর্ম অ্যান্ড দ্য হ্যারিকেন’ ব্যান্ড দলের প্রধান ররি স্টর্মের। উল্লেখ্য, বিটলসের যোগ দেওয়ার আগে রিঙ্গো স্টার এই ব্যান্ড দলে ড্রামার হিসেবে ছিলেন। ‘ররি স্টর্ম অ্যান্ড দ্য হ্যারিকেন’ ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ পর্বে বিটলসের চেয়ে প্রভাবশালী ছিল লিভারপুলে—দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ব্যান্ড দলের প্রধান ররি স্টর্ম (১৯৩৮-১৯৭২) মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মারা যান। যাই হোক, ম্যাজি বিটের আরেক সফল ব্যান্ড দল ছিল গ্যারি মার্সডেনের ‘গ্যারি অ্যান্ড দ্য পেসমেকার্স’। লিভারপুলে বিটলসের পর দ্বিতীয় প্রভাবশালী এই ব্যান্ড দল।
বিটলসের অপ্রতিরোধ্য প্রভাবের সমসাময়িককালে লিভারপুল শহরেরই আরেকজন সংগীতশিল্পী ইংলিশ রক এন রোল, পপ সংগীতের জগতে আধিপত্য দেখিয়েছিলেন—তিনি হলেন বিল্লি ফুরি (১৯৪০-১৯৮৩)। তাঁর ভাস্কর্য ম্যাজি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে। বিল্লি ফুরি একক ব্যানারেই গান করেছেন বেশি। তাঁর সময়ে ইউকে চার্টে দুই ও তিন নম্বরে ছিলেন ৩৩২ সপ্তাহ। পপ ঘরানার মধ্যে ক্ল্যাসিক মিশ্রণে তিনি স্বতন্ত্র এক ধারা তৈরি করেছিলেন। গানের পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করেছেন। তাঁর বিখ্যাত গান ‘হাফওয়ে টু প্যারাডাইস’। বিটলসের চার সদস্য জন লেলন, পল ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন, রিংগো স্টার তাঁর সঙ্গে একসময় একসঙ্গে বাজিয়েছেন। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তাঁর সংগীতজীবনের সমাপ্তি হয়। ম্যাজি নদীর তীরে বেড়ে ওঠা এমন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীদের জন্ম হওয়ায় হয়তো লিভারপুলকে বিশ্বসংগীতের রাজধানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আমাকে লিভারপুল কেবল বিটলসের গানের আকর্ষণে তাঁদের আঁতুড়ঘর পরিদর্শন নয়, পাশাপাশি এর একজন সদস্য জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে নিউইয়র্কে কনসার্ট করেছিলেন—তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোও ছিল অন্যতম কারণ।
বিটলসের যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দ্য ক্যাভার্ন স্ন্যাক বার’ নামে ছোট্ট এক টংঘর থেকে। লিভারপুল শিল্প এলাকা হওয়ায় ম্যাজি নদীর তীরে ছোট-বড় অনেক খাবারের দোকান ছিল। আমাদের দেশের চায়ের দোকানের মতো ছোট ছোট টংঘর বা স্বল্প আয়ের মানুষের খাবারের হোটেলের মতো কিছু রেস্তোরাঁও ছিল। সেই সব দোকানের ভেতরে বা এক পাশে লাঞ্চ বা ডিনার করতে আসা ক্রেতাদের বিনোদনের জন্য দোকানিরা এলাকার উঠতি ব্যান্ড দলকে সুযোগ দিত গান পরিবেশনের জন্য। লিভারপুল বন্দরনগরী হওয়ায় এখানে আসা জাহাজের শ্রমিক এবং বন্দরের কাজে জড়িত নানা পেশার অসংখ্য মানুষের বিনোদনের প্রধান আখড়া হয়ে ওঠে এই খাবারের দোকানগুলো। আর শ্রোতাদের তুমুল চাহিদায় দিনে দিনে ম্যাজি বিটের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী—জন্ম নেয় রক সংগীতের কিংবদন্তি সব কৃতি ব্যান্ড শিল্পীর।
লিভারপুলের ১৫-১৬ বছরের চার কিশোর—যারা স্কুলের গণ্ডিও তখন পেরোয়নি—একসঙ্গে গান করার জন্য ‘বিটলস’ নামে ব্যান্ড দল গঠন করে ‘দ্য ক্যাভার্ন’ ক্লাবের ছোট এক অপরিসর জায়গায় বাজাতে শুরু করে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে স্বতন্ত্র সাংগীতিক স্বরের জন্য আশপাশে তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্লাবে ৩০০ বারের মতো তারা পারফর্ম করে আশপাশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে ফেলে। তারা যখন গান গাইত, তখন এই অপরিসর ঘিঞ্জি পানশালায় দুপুরে লাঞ্চের সময় জায়গার সংকুলান হতো না।
তিন গিটারিস্ট জন লেলন, পল ম্যাকর্টনি, জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে পরে রিংগো স্টার ড্রামার হিসেবে যোগ দেন এবং দৃষ্টি কাড়েন সংগীত প্রযোজক-কম্পোজার জর্জ মার্টিন, যাঁকে ‘পঞ্চম বিটলস’ বলা হতো। এই পাঁচজন মিলে পাশ্চাত্য রক এন রোল সংগীত দুনিয়ায় আলোড়ন তোলেন। বিটলসের চার কিংবদন্তি সদস্য, যাঁদের একত্রে ‘ফেবুলাস ফোরসাম’ বলে অভিহিত করা হতো, পরে তাঁরা সংক্ষেপে ‘দ্য ফেব ফোর’ নামে খ্যাতির চূড়ায় আরোহণ করেন।
যাই হোক, লিভারপুলের ম্যাজি নদীর তীরে চমৎকার আকর্ষণীয় এক জায়গা রয়েল আলবার্ট ডক। এর এক পাশেই অবস্থিত পৃথিবীর বিখ্যাত ‘দ্য বিটলস স্টোরি’ জাদুঘর। ম্যাজি নদীর তীর কংক্রিটে বাঁধানো সুন্দর হাঁটার রাস্তা। কয়েক মাইল এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়া সম্ভব। নদীর তীরে বেশ বাতাসের দাপট ছিল। কয়েক পরতের শীতের পোশাকেও ঠান্ডা নিবারণ হচ্ছিল না বিধায় আধা কিলোমিটারের মতো হাঁটার পর হাতের বাঁয়ে আলবার্ট ডকের দিকে চলে আসি। একটু এগোতেই পেয়ে যাই কাঙ্ক্ষিত সেই ‘দ্য বিটলস স্টোরি’ জাদুঘরের প্রবেশদ্বার। এখানে ঢুকলে কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে, তাই চিন্তা করি সকালের নাশতাটা সেরে নেওয়া যাক। সকালে বের হওয়ার সময় ব্যাগে করে ছোট একটা ভেজিটেবল রোল নিয়ে এসেছিলাম, সেটাই পাশের এক বেঞ্চে বসে চুপিচুপি খেতে থাকলাম। চুপিচুপি কারণ হলো, এখানকার সিগাল মানুষের মতোই বেশ চতুর। খাবারের গন্ধ পেলে কোথা থেকে জানি দল বেঁধে এসে হাজির হয়। সুযোগ পেলে হাত থেকে খাবার ছোঁ মেরে কেড়ে নিয়ে উড়াল দেয়। আমি ক্যান্টাবরি শহরেই বেশ কয়েকবার দেখেছি এই সিগালদের মানুষের মতো আচরণ করতে। যেমন: বিনে (ডাস্টবিন) ফেলা দেওয়া পিৎজা বা ম্যাকডোনাল্ডের প্যাকেট থেকে ঠোঁট দিয়ে মানুষের মতো নিখুঁতভাবে খুলে খাবার খেতে। সমুদ্রসৈকতে বসে খাবার খেতে গেলে এদের দাপট সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়—চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরে—ভয়ডর বলতে এদের কিছু নেই। যাক, সিগালদের ফাঁকি দিয়ে সন্তর্পণে নাশতা শেষ করে দ্য বিটলস স্টোরির দিকে রওনা দিই। ১৭ পাউন্ডের টিকিট ছাত্র হিসেবে ডিসকাউন্টে ১২.৫০ পাউন্ড দিয়ে কিনে ঢুকে পড়ি বিটলস মিউজিয়ামে। এখানে বিটলসের সদস্যদের সেই স্কুলের গণ্ডি থেকে পরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার নানা ইতিহাস ও স্মারক রেপ্লিকা সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ষাটের দশকের দ্য কসবা, ম্যাথিউ স্ট্রিট, এবে রোড স্টুডিও এবং দ্য ক্যাভার্ন ক্লাবের হুবহু পরিবেশ এখানে তৈরি করে রাখা আছে। টিকিট কাটার পর একটা অডিও ডিভাইস দেওয়া হয়, যেটিতে ধারাবর্ণনা করে প্রতিটি বিষয় সুন্দর করে বোঝানো আছে। বিটলসের এমন কোনো বিষয় নেই, যা এই জাদুঘরে রাখা হয়নি। যেকোনো রক সংগীতপ্রেমী ও ‘বিটলস’ ভক্তের জন্য তো অবশ্যই, তা ছাড়া এই জাদুঘর পপুলার সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থভূমি হিসেবে বিবেচিত হবে বৈকি! প্রায় তিন ঘণ্টা লেগে যায় পুরো বিটলস স্টোরি দেখতে। প্রস্থানের সময় কানে বাজতে থাকে তাঁদের গান ‘লেট ইট বি’—গুনগুন করে গাইতে গাইতে বেরিয়ে পড়ি লিভারপুল শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ‘ফোর ফেব’-এর স্ট্যাচু দেখার উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন:
ম্যানচেস্টার থেকে খুব সকালে রওনা দিই লিভারপুলের উদ্দেশে। লিভারপুল এই শহর থেকে বেশি দূরে নয়, মাত্র এক ঘণ্টার যাত্রাপথ। ভ্রমণে সঙ্গীসাথি থাকলে একধরনের, আবার কেউ সঙ্গে না থাকলে আরেক ধরনের রোমাঞ্চ অনুভূত হয়। একা ভ্রমণে কোনো তাড়া থাকে না, যেকোনো জিনিস গভীর অভিনিবেশসহকারে অনুভব করা যায়। এবারের একা যাত্রায় সুদূর কেন্ট থেকে ম্যানচেস্টারে এসে এক ঘনিষ্ঠ ভাইয়ের বাসায় উঠেছি। এখানে রাত্রি যাপন করে সকাল সকাল রওনা দিই বিটলসের আঁতুড়ঘর লিভারপুল শহরে! সেখানে বাস ও ট্রেন দুইভাবেই যাওয়া যায়—ইংল্যান্ডে তাৎক্ষণিক ট্রেনের ভাড়া বিমানের মতো অনেক বেশি পড়ে, তাই বাসই সহজসাধ্য সবার জন্য।
যখন রওনা দিই, ম্যানচেস্টারের জানুয়ারির সকাল তখন কিছুটা কুয়াশাচ্ছন্ন। ইউকের যতই উত্তরের দিকে যাওয়া যায়, আবহাওয়া ততই ধূসর রং ধারণ করে। আমি যেখানে থাকি, লন্ডনের পূর্ব দিকে ক্যান্টাবরি শহরে, সেটি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ও সাগরঘেরা হওয়ায় সূর্যের প্রচুর আলো পাওয়া যায়। অন্যদিকে ম্যানচেস্টার বা আরও উত্তরে স্কটল্যান্ডে গেলে এই সূর্যের আলোর স্বল্পতা দেখা যায়, যার ফলে এদিকে শীত বেশি অনুভূত হয়। ভোরের যাত্রায় কয়েক পরতের শীত নিবারক পোশাক পরে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাজির হই লিভারপুলে। যাত্রাপথে ধরা পড়ে ইংল্যান্ডের অসাধারণ ল্যান্ডস্কেপ—মহাসড়কের দুই ধারে সবুজের অবারিত প্রান্তর—মসৃণ পিচঢালাই পথে স্থানে স্থানে চোখে পড়ে ছোট ছোট গ্রাম আর খামারবাড়ি। পুরো ইংল্যান্ডে কান্ট্রিসাইড বা গ্রামগুলো যেন একইভাবে তৈরি। প্রত্যকের দোতলা ডুপ্লেক্স বাড়ির আঙিনা ফুলে ফুলে সাজানো। নিরিবিলি গোছানো। একটা কি দুটো ব্যক্তিগত গাড়ি বাড়ির সামনে পার্ক করা। কোনো কোলাহল নেই, কোনো তাড়াও নেই—জীবন এখানে অনেক শান্ত-নির্মল।
সকাল ৯টায় পৌঁছে যাই লিভারপুলে। আগের রাতেই গুগল করে কী কী দেখব, একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করে রেখেছিলাম। লিভারপুলে বাস থেকে নেমেই তাই গুগল ম্যাপের শরণাপন্ন হই। ম্যাপ ধরে প্রথমেই চলে যাই লিভারপুলের বিখ্যাত ম্যাজি নদীর তীরে। ম্যাজি (Mersey) নদীকে বাংলায় অনেকে মার্সেই নামে লেখে। যদিও এর সঠিক উচ্চারণ হবে ম্যাজি, স্থানীয়রা ‘স’ কে ‘জ’-এর মতো করে। এই নদীর নামেই ‘ম্যাজি বিট’ (Mersey Beat)। গত শতকের ষাটের দশকে পৃথিবী কাঁপানো এক সংগীতের ধারার জন্ম হয়েছিল। ম্যাজি নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল তৎকালীন তুঙ্গস্পর্শী ব্যান্ডদল ‘বিটলস’। এখানে এক ছোট অপরিসর পানশালায় ছিল এর আঁতুড়ঘর। লিভারপুলে আগমনের প্রধান কারণ এই বিটলসের আঁতুড়ঘর দর্শন ও এর সদস্যদের স্মৃতিধন্য শহরের অলিগলিতে বিচরণ।
গবেষকদের মতে, ম্যাজি নদীর তীরে ১৯৫৮-৬৪ সালের মধ্যে প্রায় ৫০০ ব্যান্ড দলের জন্ম হয়েছিল; এর মধ্যে ৩৫০টি গ্রুপ নিয়মিত কনসার্ট, বার ও পাবে বাজাত। আরও একটি বিস্ময়কর ঘটনা হলো, পৃথিবীর ইতিহাসে সংগীতবিষয়ক সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা ‘ম্যাজি বিট’ (Mersey Beat)-এর জন্মও এই শহরেই, ১৯৬১ সালে। এই ‘মেজি বিট’-এর একেকটি সংখ্যা তখন ৭৫ হাজার কপি পর্যন্ত বিক্রি হতো। এর সম্পাদক ছিলেন বিটলসের সদস্য জন লেলনের বন্ধু-সহপাঠী বিল হ্যারি। তাঁরা একই কলেজে পড়তেন। ১৯৬২ সালে মেজি বিট পত্রিকার আয়োজনে পাঠকদের ভোটে বিটলস সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যান্ড দল হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল, যা বিটলসের উত্থানের প্রথম সাফল্য হিসেবে ধরা হয়। এর পর থেকেই মূলত এদের স্থানীয় পর্যায় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাত্রা শুরু।
বিটলস নিয়ে আসলে বেশি কিছু বলার নেই। এঁদের গান ও ব্যান্ড দলের সদস্যদের প্রভাব গত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এমনই ছিল যে ‘বিটলস ম্যানিয়া’য় আক্রান্ত হয়েছিল কয়েক প্রজন্ম। এর রেশ এখনো শেষ হয়নি। অভাবনীয় ব্যাপার হলো, এই শহরে জন্ম নেওয়া একদল কিশোর মিলে গঠন করেছিল বিটলস।
ম্যাজি নদীর তীরে বিটলসের চার কিংবদন্তি সদস্য জন লেলন, পল ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন, রিংগো স্টার ছাড়াও জন্ম হয়েছিল গ্যারি মার্সডেনের, যাঁর ‘ফেরি, ক্রস দ্য ম্যাজি’ গান আটলান্টিকের দুই পাড়ে এই নদীর খ্যাতি ছড়িয়ে দিয়েছিল। লিভারপুলের আরও অন্যান্য বিখ্যাত পপ সংগীতশিল্পীর জন্ম। যেমন: বিটলসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ররি স্টর্ম অ্যান্ড দ্য হ্যারিকেন’ ব্যান্ড দলের প্রধান ররি স্টর্মের। উল্লেখ্য, বিটলসের যোগ দেওয়ার আগে রিঙ্গো স্টার এই ব্যান্ড দলে ড্রামার হিসেবে ছিলেন। ‘ররি স্টর্ম অ্যান্ড দ্য হ্যারিকেন’ ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২ পর্বে বিটলসের চেয়ে প্রভাবশালী ছিল লিভারপুলে—দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ব্যান্ড দলের প্রধান ররি স্টর্ম (১৯৩৮-১৯৭২) মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মারা যান। যাই হোক, ম্যাজি বিটের আরেক সফল ব্যান্ড দল ছিল গ্যারি মার্সডেনের ‘গ্যারি অ্যান্ড দ্য পেসমেকার্স’। লিভারপুলে বিটলসের পর দ্বিতীয় প্রভাবশালী এই ব্যান্ড দল।
বিটলসের অপ্রতিরোধ্য প্রভাবের সমসাময়িককালে লিভারপুল শহরেরই আরেকজন সংগীতশিল্পী ইংলিশ রক এন রোল, পপ সংগীতের জগতে আধিপত্য দেখিয়েছিলেন—তিনি হলেন বিল্লি ফুরি (১৯৪০-১৯৮৩)। তাঁর ভাস্কর্য ম্যাজি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছে। বিল্লি ফুরি একক ব্যানারেই গান করেছেন বেশি। তাঁর সময়ে ইউকে চার্টে দুই ও তিন নম্বরে ছিলেন ৩৩২ সপ্তাহ। পপ ঘরানার মধ্যে ক্ল্যাসিক মিশ্রণে তিনি স্বতন্ত্র এক ধারা তৈরি করেছিলেন। গানের পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করেছেন। তাঁর বিখ্যাত গান ‘হাফওয়ে টু প্যারাডাইস’। বিটলসের চার সদস্য জন লেলন, পল ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন, রিংগো স্টার তাঁর সঙ্গে একসময় একসঙ্গে বাজিয়েছেন। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তাঁর সংগীতজীবনের সমাপ্তি হয়। ম্যাজি নদীর তীরে বেড়ে ওঠা এমন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীদের জন্ম হওয়ায় হয়তো লিভারপুলকে বিশ্বসংগীতের রাজধানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আমাকে লিভারপুল কেবল বিটলসের গানের আকর্ষণে তাঁদের আঁতুড়ঘর পরিদর্শন নয়, পাশাপাশি এর একজন সদস্য জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে নিউইয়র্কে কনসার্ট করেছিলেন—তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোও ছিল অন্যতম কারণ।
বিটলসের যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘দ্য ক্যাভার্ন স্ন্যাক বার’ নামে ছোট্ট এক টংঘর থেকে। লিভারপুল শিল্প এলাকা হওয়ায় ম্যাজি নদীর তীরে ছোট-বড় অনেক খাবারের দোকান ছিল। আমাদের দেশের চায়ের দোকানের মতো ছোট ছোট টংঘর বা স্বল্প আয়ের মানুষের খাবারের হোটেলের মতো কিছু রেস্তোরাঁও ছিল। সেই সব দোকানের ভেতরে বা এক পাশে লাঞ্চ বা ডিনার করতে আসা ক্রেতাদের বিনোদনের জন্য দোকানিরা এলাকার উঠতি ব্যান্ড দলকে সুযোগ দিত গান পরিবেশনের জন্য। লিভারপুল বন্দরনগরী হওয়ায় এখানে আসা জাহাজের শ্রমিক এবং বন্দরের কাজে জড়িত নানা পেশার অসংখ্য মানুষের বিনোদনের প্রধান আখড়া হয়ে ওঠে এই খাবারের দোকানগুলো। আর শ্রোতাদের তুমুল চাহিদায় দিনে দিনে ম্যাজি বিটের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী—জন্ম নেয় রক সংগীতের কিংবদন্তি সব কৃতি ব্যান্ড শিল্পীর।
লিভারপুলের ১৫-১৬ বছরের চার কিশোর—যারা স্কুলের গণ্ডিও তখন পেরোয়নি—একসঙ্গে গান করার জন্য ‘বিটলস’ নামে ব্যান্ড দল গঠন করে ‘দ্য ক্যাভার্ন’ ক্লাবের ছোট এক অপরিসর জায়গায় বাজাতে শুরু করে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে স্বতন্ত্র সাংগীতিক স্বরের জন্য আশপাশে তাদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্লাবে ৩০০ বারের মতো তারা পারফর্ম করে আশপাশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে ফেলে। তারা যখন গান গাইত, তখন এই অপরিসর ঘিঞ্জি পানশালায় দুপুরে লাঞ্চের সময় জায়গার সংকুলান হতো না।
তিন গিটারিস্ট জন লেলন, পল ম্যাকর্টনি, জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে পরে রিংগো স্টার ড্রামার হিসেবে যোগ দেন এবং দৃষ্টি কাড়েন সংগীত প্রযোজক-কম্পোজার জর্জ মার্টিন, যাঁকে ‘পঞ্চম বিটলস’ বলা হতো। এই পাঁচজন মিলে পাশ্চাত্য রক এন রোল সংগীত দুনিয়ায় আলোড়ন তোলেন। বিটলসের চার কিংবদন্তি সদস্য, যাঁদের একত্রে ‘ফেবুলাস ফোরসাম’ বলে অভিহিত করা হতো, পরে তাঁরা সংক্ষেপে ‘দ্য ফেব ফোর’ নামে খ্যাতির চূড়ায় আরোহণ করেন।
যাই হোক, লিভারপুলের ম্যাজি নদীর তীরে চমৎকার আকর্ষণীয় এক জায়গা রয়েল আলবার্ট ডক। এর এক পাশেই অবস্থিত পৃথিবীর বিখ্যাত ‘দ্য বিটলস স্টোরি’ জাদুঘর। ম্যাজি নদীর তীর কংক্রিটে বাঁধানো সুন্দর হাঁটার রাস্তা। কয়েক মাইল এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়া সম্ভব। নদীর তীরে বেশ বাতাসের দাপট ছিল। কয়েক পরতের শীতের পোশাকেও ঠান্ডা নিবারণ হচ্ছিল না বিধায় আধা কিলোমিটারের মতো হাঁটার পর হাতের বাঁয়ে আলবার্ট ডকের দিকে চলে আসি। একটু এগোতেই পেয়ে যাই কাঙ্ক্ষিত সেই ‘দ্য বিটলস স্টোরি’ জাদুঘরের প্রবেশদ্বার। এখানে ঢুকলে কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে, তাই চিন্তা করি সকালের নাশতাটা সেরে নেওয়া যাক। সকালে বের হওয়ার সময় ব্যাগে করে ছোট একটা ভেজিটেবল রোল নিয়ে এসেছিলাম, সেটাই পাশের এক বেঞ্চে বসে চুপিচুপি খেতে থাকলাম। চুপিচুপি কারণ হলো, এখানকার সিগাল মানুষের মতোই বেশ চতুর। খাবারের গন্ধ পেলে কোথা থেকে জানি দল বেঁধে এসে হাজির হয়। সুযোগ পেলে হাত থেকে খাবার ছোঁ মেরে কেড়ে নিয়ে উড়াল দেয়। আমি ক্যান্টাবরি শহরেই বেশ কয়েকবার দেখেছি এই সিগালদের মানুষের মতো আচরণ করতে। যেমন: বিনে (ডাস্টবিন) ফেলা দেওয়া পিৎজা বা ম্যাকডোনাল্ডের প্যাকেট থেকে ঠোঁট দিয়ে মানুষের মতো নিখুঁতভাবে খুলে খাবার খেতে। সমুদ্রসৈকতে বসে খাবার খেতে গেলে এদের দাপট সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়—চারদিক দিয়ে ঘিরে ধরে—ভয়ডর বলতে এদের কিছু নেই। যাক, সিগালদের ফাঁকি দিয়ে সন্তর্পণে নাশতা শেষ করে দ্য বিটলস স্টোরির দিকে রওনা দিই। ১৭ পাউন্ডের টিকিট ছাত্র হিসেবে ডিসকাউন্টে ১২.৫০ পাউন্ড দিয়ে কিনে ঢুকে পড়ি বিটলস মিউজিয়ামে। এখানে বিটলসের সদস্যদের সেই স্কুলের গণ্ডি থেকে পরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার নানা ইতিহাস ও স্মারক রেপ্লিকা সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ষাটের দশকের দ্য কসবা, ম্যাথিউ স্ট্রিট, এবে রোড স্টুডিও এবং দ্য ক্যাভার্ন ক্লাবের হুবহু পরিবেশ এখানে তৈরি করে রাখা আছে। টিকিট কাটার পর একটা অডিও ডিভাইস দেওয়া হয়, যেটিতে ধারাবর্ণনা করে প্রতিটি বিষয় সুন্দর করে বোঝানো আছে। বিটলসের এমন কোনো বিষয় নেই, যা এই জাদুঘরে রাখা হয়নি। যেকোনো রক সংগীতপ্রেমী ও ‘বিটলস’ ভক্তের জন্য তো অবশ্যই, তা ছাড়া এই জাদুঘর পপুলার সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থভূমি হিসেবে বিবেচিত হবে বৈকি! প্রায় তিন ঘণ্টা লেগে যায় পুরো বিটলস স্টোরি দেখতে। প্রস্থানের সময় কানে বাজতে থাকে তাঁদের গান ‘লেট ইট বি’—গুনগুন করে গাইতে গাইতে বেরিয়ে পড়ি লিভারপুল শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ‘ফোর ফেব’-এর স্ট্যাচু দেখার উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন:
চারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
৬ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
১৩ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
১৩ দিন আগেদ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
১০ অক্টোবর ২০২৪