চলছে বহুবিধ কল্যাণ ও ফজিলতের মাস রমজান। এ মাসে আমরা যে যেভাবে পারি, নিজেকে সওয়াবের কাজে জড়িয়ে রাখি। তবে রমজানের অন্যতম বড় সওয়াবের কাজ হলো, রোজাদারকে ইফতার করানো। রোজাদার গরিব হোক বা ধনী, বন্ধু হোক বা অপরিচিত, দূরের কেউ বা কাছের—যেই হোক না কেন, তাকে ইফতার করানোর রয়েছে অসংখ্য সওয়াব।
পবিত্র জুমাতুল বিদা আজ শুক্রবার। এ দিনটিকে ইবাদতের মর্যাদাপূর্ণ দিন হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। রমজানের শেষ এ জুমা ইঙ্গিত দিচ্ছে পবিত্র এ মাসের বিদায়ের। তাই বিচ্ছেদের রক্তক্ষরণ চলছে মুমিন হৃদয়ে। জুমার নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিরা...
পবিত্র রমজান মাসের শেষ জুমার দিনটি জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। এই দিনের বিশেষ মর্যাদা ও তাৎপর্যের কথা প্রচলিত থাকলেও আদতে কোরআন-হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি জুমাতুল বিদা পরিভাষাটিও কোনো নির্ভরযোগ্য উৎসগ্রন্থ থেকে প্রমাণিত নয়।
বছরের সেরা মাস রমজানের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম কারণ হলো, এ মাসে রয়েছে বছরের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ রাত পবিত্র শবে কদর। এ রাতকে পবিত্র কোরআনে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে।
মাহে রমজান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য অফুরন্ত নেয়ামতের ভান্ডার। এ মাসেই মহাগ্রন্থ আল-কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। হাদিসে এ মাসের প্রথম দশ দিনকে রহমত, দ্বিতীয় দশ দিনকে মাগফিরাত এবং শেষ দশ দিনকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির সময় বলা হয়েছে।
ইসলামের পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের মধ্যে জাকাত অন্যতম। জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার সম্পদ পবিত্র করেন এবং তাতে বরকত দান করেন। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি জাকাত প্রদানের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর শব্দদ্বয়ের অর্থ মর্যাদার রাত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নিজেই এ রাতকে লাইলাতুল কদর নামকরণ করেছেন এবং হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ঘোষণা দিয়েছেন।
বছরের যেকোনো সময় ও মুহূর্তে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করেন। তবে বছরের বিশেষ কিছুদিন ও মুহূর্ত রয়েছে, যা দোয়া কবুলের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
পবিত্র রমজানে অন্যান্য মাসের বাইরে বিশেষ কিছু ইবাদত আছে। এর মধ্যে সদকাতুল ফিতর অন্যতম। রমজানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সামর্থ্যবান মানুষের জন্য সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব করা হয়েছে।
মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। অষ্টম হিজরির ২০ রমজান মহানবী (সা.)-এর বিচক্ষণতা ও সামরিক দক্ষতায় রক্তপাতহীন এ বিজয় অর্জিত হয়। আট বছর আগে এই জন্মভূমিরই মায়া ত্যাগ করে শূন্য হাতে মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
ইতিকাফ আরবি শব্দ। এর অর্থ অবস্থান করা। শরিয়তের পরিভাষায়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতসহকারে নিয়মিত আদায় করা হয় এমন মসজিদগুলোতে আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে নিয়তসহ অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
কোরআন তিলাওয়াত অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। অসংখ্য হাদিসে এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করো, কেননা কিয়ামতের দিন কোরআন তার তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশ করবে।’
দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান শুক্রবার সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ এটি। এ যুদ্ধে মুসলিমরা সংখ্যায় অনেক কম হয়েও মক্কার কাফির শক্তিকে পরাজিত করে। এর মাধ্যমে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য পবিত্র কোরআনে বদর যুদ্ধকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বলা হয়েছে। বদরের
রমজান ধৈর্য ও সহমর্মিতার মাস। এ মাসের প্রধান ইবাদত রোজা রাখা। রোজা পালনে একজন মানুষকে বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। যেমন তাকে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকতে হয়।
জাকাত হলো ইসলামের প্রধান আর্থিক ইবাদত। নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ থাকলে জাকাত দিতে হয়। তবে সব ধরনের সম্পদে জাকাত ফরজ হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকাপয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে জাকাত ফরজ হয়—যদি তা নিসাব পরিমাণ হয়।
দোয়া শব্দের অর্থ চাওয়া, ডাকা বা আরজি পেশ করা। আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কোনো কিছু চাওয়াকে ইসলামের পরিভাষায় ‘দোয়া’ বলা হয়। আর মোনাজাত শব্দের অর্থ একান্ত ব্যক্তিগত কথাবার্তা। আল্লাহর কাছে ব্যক্তিগতভাবে নীরবে-নিভৃতে আরজি পেশ করা হয় বলে দোয়াকে মোনাজাতও বলা হয়।
রমজানের রোজা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এ ফরজ ইবাদত পালনকারীদের জন্য আল্লাহ তাআলা অনন্য পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। নিচে কয়েকটি পুরস্কারের বিবরণ তুলে ধরা হলো—