ফোনের কভার কত দ্রুত বদলাবেন, সেটি নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ আর কভারটির বর্তমান অবস্থার ওপর। যদি কেস ভেঙে যায়, পুরোনো বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিংবা ফোনের কিছু অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রয়োজন হলে নতুন কেস সংগ্রহের সময় হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।

কভার আপনার স্মার্টফোনের নিরাপত্তা বিধান এবং ব্যক্তিগত স্টাইল তুলে ধরার ক্ষেত্রে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। কেসটির জীবৎকাল নির্ভর করে তার ব্র্যান্ড এবং ব্যবহারের ওপর। দামি ব্র্যান্ড তাদের পণ্য তৈরি করে অভঙ্গুর জিনিস (যেমন চামড়া) দিয়ে। ফলে অনেক দিন টেকসই হয়। অন্যদিকে বাজেটবান্ধব ব্র‍্যান্ডগুলো টেকসই হওয়ার দিকে গুরুত্ব না দিয়ে ক্রেতার ট্যাঁক সই করে বসে। আপনি যত সাবধানে ব্যবহার করুন না কেন, কত উঁচু মানের কাঁচামালে জিনিসটি তৈরি, সেসব বিবেচনায় রাখলেও অনেক সময় সেটির মেয়াদ ফুরিয়ে আসে। দুই দিকের ধার ভেঙে যায়। খানিকটা খসে পড়তে পারে। অর্থাৎ ক্ষয়ের বিভিন্ন চিহ্ন দেখা দেয় বেশ কিছুদিন ব্যবহারের পর।

মোবাইল ফোনের কভার বদলে নেওয়ার আসলে কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। প্রিয় ফোনের সুরক্ষার ওপরই নির্ভর করবে সময়। প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রেখেই আপনাকে সময়কাল নির্ধারণ করতে হবে। কভারের ডিজাইন পুরোনো হয়ে এলেও বদলে ফেলতে পারেন ফোনের নতুন চেহারা দেওয়ার জন্য। সাধারণত যে তিন কারণে ফোনের কভার বদল করা হয়, সেগুলো হলো— 

• সুরক্ষার অতিরিক্ত ব্যবস্থা
• ধুলা থেকে সুরক্ষা
• স্টাইল পরিবর্তন

সিলিকন, প্লাস্টিক, কাঠসহ বিভিন্ন উপকরণে তৈরি ফোনের কভার পাওয়া যায় বাজারে। কয়েকটি ভালো ব্র্যান্ড হচ্ছে অটারক্স ডিফেন্ডার সিরিজ, আরবান আর্মার গিয়ার, লাইফপ্রুফ ফ্রি কেস সিরিজ ও পেলিক্যান ফোন কেস। কভারের অজস্র বিকল্প আছে। প্রয়োজন ও শখ—এই দুইয়ের মিশেলে বেছে নিতে পারেন নিত্য আনন্দের রসদ, আপনার প্রিয় ফোনের কভার।

জেনে নিন

• সাধারণত দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ফলে সব স্মার্টফোন গরম হয়। কখনো কখনো হ্যাংও করতে পারে। ফোনে কভার লাগানো থাকলে গরমের মাত্রা আরও বেড়ে যায়, যা এটির পারফরম্যান্সকেও প্রভাবিত করে। এতে ডিভাইসটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই ফোন হালকা গরম হলেই কভার খুলে রাখতে হবে।
• ব্যাক কভারটি বছরের পর বছর ফোনে লাগানো থাকে। এই অবস্থায় ধীরে ধীরে পেছনের প্যানেলে ধুলা-ময়লা জমে যায়। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে অনেক সময় স্ক্র্যাচও দেখা যায়। এতে ফোনে অনেক ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
• খুব কম দামি কভার ব্যবহার করবেন না। ভালো মানের কভার ব্যবহার না করলে ফোনে ব্যাকটেরিয়া জমে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
• কিছু রিপোর্ট অনুসারে, কভার থাকার কারণে ফোন দ্রুত গরম হয়। ফলে চার্জও ধীরে হয়। এমনকি কিছু সময় পর ফোনটি কাজ করাও বন্ধ করে দেয়।
• এমন অনেক ফোনের কভার থাকে, যাতে চুম্বক দেওয়া থাকে। চেষ্টা করবেন সেসব কভার ব্যবহার না করার। কারণ, সে ধরনের কভার ব্যবহারে জিপিএস এবং কম্পাসে সমস্যা হতে পারে। ফলে আপনার ফোনের ম্যাপ ঠিকভাবে কাজ না-ও করতে পারে।
• কভারের ক্ষতি এড়াতে ফোন চার্জ করার সময় কভার খুলে রাখাই ভালো। গেম খেলার সময়ও ফোনের কভার খুলে রাখা যায়।
• অনেকক্ষণ ভিডিও করতে হলে আগেই কভারটি খুলে রাখতে হবে।

কভারের রকমসকম
বাজারে বেশ কটি জনপ্রিয় ব্যাক কভার রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে হাইব্রিড প্লাস্টিক ব্যাক কেস কভার (ডার্ক ব্লু) দেখতেও জম্পেশ এবং বেশ শক্তপোক্ত। এ ছাড়া ওয়াটারপ্রুফ থ্রিডি প্রিমিয়াম ব্যাক কভার, মোটিভেশনাল কোট ব্যাক কভার, নেট জালি ব্যাক কভার, সফট রাবার ব্যাক কভার, আলট্রা থিন বা ক্লিয়ার ট্রান্সপারেন্ট ব্যাক কভারসহ অনেক ধরনের কভার পাওয়া যায়। এসব ব্যবহারে মোবাইল ফোনে একটি ক্যাজুয়াল লুক আসবে।

দরদাম
বেশি দামে বিক্রি হয় অ্যাপলের আইফোনের ব্যাক কভার। এসব কভার ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকায় মিলবে। তারপরই রয়েছে স্যামসাংয়ের অবস্থান।স্যামসাংয়ের বিভিন্ন নকশার কভার পাওয়া যাবে ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। নকিয়া মোবাইলের কভার পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ৭০০ টাকায়। এ ছাড়া সনি, শাওমি, এইচটিসি, সিম্ফোনি, ওয়ালটন, হুয়াওয়ে, ওয়ান প্লাসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনের কভার পাওয়া যাবে ১০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। কভারের দাম নির্ভর করে ধরন, ডিজাইন ও কোয়ালিটির ওপর। 

কোথায় পাওয়া যাবে
মোবাইল ফোনের কভার এখন প্রায় সবখানেই পাওয়া যায়। তবে রাজধানীর হাতিরপুলের ইস্টার্ন প্লাজা ও মোতালিব প্লাজা মোবাইল অ্যাকসেসরিজের জন্য বিখ্যাত। যাঁরা আইফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের অ্যাপল গ্যালারি ভালো। এ ছাড়া দেশের প্রায় সব জেলা শহরের সুপার বা নিউমার্কেটগুলোতেও পাওয়া যাবে মোবাইল কভার।