ক্রীড়া ডেস্ক
কাতারে কাল শুরু হচ্ছে ২২তম ফুটবল বিশ্বকাপ। ছয়টি কনফেডারেশনের ৩২টি দল খেলবে প্রতিযোগিতায়। মরুর দেশটির পাঁচ শহরের আট ভেন্যুতে হবে মোট ৬৪টি ম্যাচ। লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের পায়ের ছোঁয়া নিতে প্রস্তুত স্টেডিয়ামগুলো।
কাতার-ইকুয়েডরের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ হবে আল-বাইত স্টেডিয়ামে। ১৮ ডিসেম্বর শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল হবে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে। আটটি ভেন্যুর গড় আসন ৪৭ হাজার ৫০০। সবচেয়ে বড় ভেন্যু হচ্ছে ৮০ হাজার ধারণক্ষমতার লুসাইল।
খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ছাড়া সাতটি স্টেডিয়ামই নির্মাণ করা হয়েছে গত তিন-চার বছরে। এ জন্য ২২ লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে কাতার। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে স্টেডিয়াম নির্মাণের পেছনেই। কী আছে কাতারের স্টেডিয়ামগুলোয়। একনজরে দেখে নিই–
লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম
কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ভেন্যু লুসাইল স্টেডিয়াম। ফাইনালসহ মোট ১০টি ম্যাচ হবে এখানে। লুসাইলের ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার। ধারণক্ষমতার দিক থেকে এটি বিশ্বের দশম বৃহৎ ফুটবল ভেন্যু। স্টেডিয়ামটি নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করেছে কাতারের ঠিকাদার কোম্পানি এইচবিকে কন্ট্রাকটিং কোম্পানি ও চীনের চীনা রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিআরসিসি)।
স্টেডিয়ামের নকশা তৈরি করেছে বিখ্যাত ব্রিটিশ আর্কিটেকচার ফার্ম ফোস্টার + পার্টনার্স গ্রুপ লিমিটেড, সঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পপুলাস। তাদের সহযোগিতায় ছিল এএফএল আর্কিটেক ও ম্যানিকা আর্কিটেক। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ফোস্টার + পার্টনার্সের কয়েকটি বিশ্বনন্দিত ডিজাইন হলো লন্ডন সিটি হল, রানি এলিজাবিথ গ্রেট কোর্ট, ব্লুমবার্গ লন্ডন ও অ্যাপল ফিফথ অ্যাভিনিউ। ডিজাইন, প্ল্যানিং, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও অ্যাডভাইজরি হিসেবে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার অরেকন কোম্পানি।
স্টেডিয়ামটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৭৬৭ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মালিকানাধীন স্টেডিয়ামটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল। গত বছরের ২২ নভেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে বিশেষ অংশ হবে এই ভেন্যু। ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২ এর শিরোপা নিশ্চিতের মঞ্চ হবে এটি।
বিশ্ববাসীর সঙ্গে আরব সংস্কৃতি ভাগ করে নেওয়ার আবেগকে তুলে ধরা হয়েছে ভেন্যু নির্মাণে। স্টেডিয়ামের নকশায় আলো-ছায়ার খেলা দর্শকদের মুগ্ধ করবে। এই অঞ্চলে ইসলামি সভ্যতার উত্থানের সময় সমগ্র আরব ও ইসলামি বিশ্ব থেকে পাওয়া বাটি, পাত্র, আসবাব ও অন্যান্য শিল্পকর্মের আলংকারিক নকশাগুলোর কারণে নজর কাড়বে এই স্টেডিয়াম।
নবনির্মিতব্য অত্যাধুনিক লুসাইল শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম। কাতারের অন্য ভেন্যুগুলোর চেয়ে এটি আলাদা ও আধুনিক। নগরজীবনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে এটি। এখানকার বাসিন্দাদের চাহিদা, কাতার ও এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ অতীতকে শ্রদ্ধা জানাতেই নকশা করা হয়েছে।
রাজধানী দোহা থেকে প্রায় ২২.৭ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লুসাইল স্টেডিয়াম। গাড়ি ও মেট্রোরেলযোগে সেখান পৌঁছানো যাবে। স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তেই যেন শিল্পীর তুলির নিখুঁত ছোঁয়া। জলের প্রতিবিম্বাকৃতি আর স্যাডল-ফর্মের ছাদের এই নির্মাণশৈলীকে ওপর থেকে দেখলে মনে হবে ভাসমান মাঠ।
চারপাশে থাকবে পানির কৃত্রিম ফোয়ারা। মাঠে প্রবেশে দর্শকদের পার হতে হবে বিশেষ সেতু। কাতারের প্রধান প্রতিবন্ধক গরম আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্টেডিয়ামে থাকবে নিজস্ব সৌরশক্তিচালিত কুলিং সিস্টেম। স্টেডিয়ামের ওপরে থাকবে কাচের বিশেষ আবরণ।
আল-বাইত স্টেডিয়াম
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে আল-খোর শহরে অবস্থিত আল বাইত স্টেডিয়াম। বেদুইন জাতিদের তাঁবুর আদলে নির্মিত হয়েছে ভেন্যুটি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালসহ ৯টি খেলা হবে এই স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামটির ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা রয়েছে।
বেদুইন জাতিদের তাঁবু ও ব্যবহৃত জিনিসপত্রের আদলে নির্মিত হয়েছে ভেন্যুটি। সবুজায়ন ও কৃত্রিম হ্রদে স্টেডিয়ামটি বিস্তৃত হয়েছে সমুদ্র পর্যন্ত। দোহা থেকে মেট্রোরেলযোগে আল-খোরে যাওয়া যাবে।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম
দোহার পশ্চিমাঞ্চলে আল-রাইয়ান শহরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। এখানে যেতেও মেট্রো ব্যবহার করতে হবে। নির্মাণশৈলী ও নকশার কারণে এটিকে ডায়মন্ড ইন ডেজার্ট অর্থাৎ মরুভূমির হীরা নামেও ডাকা হয়। সূর্যের কিরণ পড়লে চকচক করে ওঠে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ।
৪০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে বিশ্বকাপে আটটি ম্যাচ হবে। এডুকেশন সিটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। কাছেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক ও মিউজিয়াম। দোহা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভেন্যুটি অবস্থিত।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম
মধ্য দোহা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে আল-রাইয়ান শহরে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম অবস্থিত। কাতারের সবচেয়ে পুরোনো স্টেডিয়াম এটি। ১৯৭৬ সালে নির্মিত হয় এটি। বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাওয়ার সময় এটিই কাতারের একমাত্র ফুটবল ভেন্যু ছিল। আগামী রোববার এই মাঠেই ইরানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে। এই মাঠে তৃতীয় নির্ধারণীসহ আটটি ম্যাচ হবে।
১৯৭৬ সালে গালফ কাপের আয়োজক হয়েছিল কাতার। ওই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে ২০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম নির্মিত হয়। ২০১৭ সালে সংস্কার করে ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নীত করা হয়।
আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়াম
১৯৬০-৭২ সাল পর্যন্ত কাতারের বাদশাহ ছিলেন আহমাদ বিন আলি আল। তাঁর শাসনামলে দেশটির আর্থিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন আসে। ১৯৭৭ সালে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আমিরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে এই স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে।
দোহা থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে আল-রাইয়ান শহরে স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। এর নকশা ও নির্মাণশৈলীতে স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের দিকগুলো অত্যন্ত সুনিপুণভাবে তুলে ধরে হয়েছে। এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার। কাতারের ঘরোয়া ফুটবল ক্লাব আল-রাইয়ান ও আল-খারিথিয়াত এটিকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করে।
২০০৩ সালে যখন প্রথম এই স্টেডিয়াম নির্মিত হয়, তখন এর ধারণক্ষমতা ছিল ২১ হাজার। সংস্কারের পরই ৪০ হাজার করা হয় এর ধারণক্ষমতা। বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ হবে এই মাঠে।
স্টেডিয়াম ৯৭৪
৯৭৪টি শিপিং কনটেইনারে তৈরি করা হয়েছে এই স্টেডিয়াম। ইতিহাস, সমুদ্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সর্বোপরি কাতারিদের ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানাতে নির্মিত হয় এই ভেন্যু। কাতারের আন্তর্জাতিক ফোন নম্বর কোড ৯৭৪-এর সঙ্গেও রাখা হয়েছে মিল। দোহা সমুদ্রবন্দরের সন্নিকটে অবস্থিত স্টেডিয়ামটি।
গ্রুপপর্বে পর্তুগাল-ঘানা, ফ্রান্স-ডেনমার্ক, ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড-আর্জেন্টিনাসহ ছয়টি এবং শেষ ষোলোর একটি ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার। তবে আবহাওয়া শীতল রাখতে আলাদা কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নির্মাণের সময় সমুদ্রের বাতাসের অবাধ চলাচল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আল-থুমামা স্টেডিয়াম
দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশেই অবস্থিত আল থুমামা স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়েছে গাহফিয়ার আদলে। মধ্যপ্রাচ্য বা আরব দেশের পুরুষরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে একধরনের বিশেষ টুপি পরেন, সেটিকেই বলা হয় গাহফিয়া। ৪০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে গ্রুপপর্বের ছয়টি এবং একটি কোয়ার্টার ফাইনাল হবে।
আল-জানুব স্টেডিয়াম
কাতারের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে আল জানুব স্টেডিয়াম। দোহা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের আল ওয়াকরাহ শহরে অবস্থিত এটি। পূর্বে এর নাম ছিল আল ওয়াকরাহ স্টেডিয়াম। ইরাকি ব্রিটিশ নারী স্থপতি জাহা হাদিদের নকশায় ২০১৯ সালে নির্মিত হয় স্টেডিয়ামটি। আল ওয়াকরাহ নগরের মাছ ধরা ও মুক্তা সংগ্রহের অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ৪০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই মাঠে বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ হবে।
কাতারে কাল শুরু হচ্ছে ২২তম ফুটবল বিশ্বকাপ। ছয়টি কনফেডারেশনের ৩২টি দল খেলবে প্রতিযোগিতায়। মরুর দেশটির পাঁচ শহরের আট ভেন্যুতে হবে মোট ৬৪টি ম্যাচ। লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের পায়ের ছোঁয়া নিতে প্রস্তুত স্টেডিয়ামগুলো।
কাতার-ইকুয়েডরের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচ হবে আল-বাইত স্টেডিয়ামে। ১৮ ডিসেম্বর শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল হবে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে। আটটি ভেন্যুর গড় আসন ৪৭ হাজার ৫০০। সবচেয়ে বড় ভেন্যু হচ্ছে ৮০ হাজার ধারণক্ষমতার লুসাইল।
খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ছাড়া সাতটি স্টেডিয়ামই নির্মাণ করা হয়েছে গত তিন-চার বছরে। এ জন্য ২২ লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে কাতার। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে স্টেডিয়াম নির্মাণের পেছনেই। কী আছে কাতারের স্টেডিয়ামগুলোয়। একনজরে দেখে নিই–
লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম
কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন ভেন্যু লুসাইল স্টেডিয়াম। ফাইনালসহ মোট ১০টি ম্যাচ হবে এখানে। লুসাইলের ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার। ধারণক্ষমতার দিক থেকে এটি বিশ্বের দশম বৃহৎ ফুটবল ভেন্যু। স্টেডিয়ামটি নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করেছে কাতারের ঠিকাদার কোম্পানি এইচবিকে কন্ট্রাকটিং কোম্পানি ও চীনের চীনা রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিআরসিসি)।
স্টেডিয়ামের নকশা তৈরি করেছে বিখ্যাত ব্রিটিশ আর্কিটেকচার ফার্ম ফোস্টার + পার্টনার্স গ্রুপ লিমিটেড, সঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পপুলাস। তাদের সহযোগিতায় ছিল এএফএল আর্কিটেক ও ম্যানিকা আর্কিটেক। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ফোস্টার + পার্টনার্সের কয়েকটি বিশ্বনন্দিত ডিজাইন হলো লন্ডন সিটি হল, রানি এলিজাবিথ গ্রেট কোর্ট, ব্লুমবার্গ লন্ডন ও অ্যাপল ফিফথ অ্যাভিনিউ। ডিজাইন, প্ল্যানিং, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ও অ্যাডভাইজরি হিসেবে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়ার অরেকন কোম্পানি।
স্টেডিয়ামটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৭৬৭ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ হাজার ৮৬৮ কোটি ৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মালিকানাধীন স্টেডিয়ামটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল। গত বছরের ২২ নভেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে বিশেষ অংশ হবে এই ভেন্যু। ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২ এর শিরোপা নিশ্চিতের মঞ্চ হবে এটি।
বিশ্ববাসীর সঙ্গে আরব সংস্কৃতি ভাগ করে নেওয়ার আবেগকে তুলে ধরা হয়েছে ভেন্যু নির্মাণে। স্টেডিয়ামের নকশায় আলো-ছায়ার খেলা দর্শকদের মুগ্ধ করবে। এই অঞ্চলে ইসলামি সভ্যতার উত্থানের সময় সমগ্র আরব ও ইসলামি বিশ্ব থেকে পাওয়া বাটি, পাত্র, আসবাব ও অন্যান্য শিল্পকর্মের আলংকারিক নকশাগুলোর কারণে নজর কাড়বে এই স্টেডিয়াম।
নবনির্মিতব্য অত্যাধুনিক লুসাইল শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম। কাতারের অন্য ভেন্যুগুলোর চেয়ে এটি আলাদা ও আধুনিক। নগরজীবনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে এটি। এখানকার বাসিন্দাদের চাহিদা, কাতার ও এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ অতীতকে শ্রদ্ধা জানাতেই নকশা করা হয়েছে।
রাজধানী দোহা থেকে প্রায় ২২.৭ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লুসাইল স্টেডিয়াম। গাড়ি ও মেট্রোরেলযোগে সেখান পৌঁছানো যাবে। স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তেই যেন শিল্পীর তুলির নিখুঁত ছোঁয়া। জলের প্রতিবিম্বাকৃতি আর স্যাডল-ফর্মের ছাদের এই নির্মাণশৈলীকে ওপর থেকে দেখলে মনে হবে ভাসমান মাঠ।
চারপাশে থাকবে পানির কৃত্রিম ফোয়ারা। মাঠে প্রবেশে দর্শকদের পার হতে হবে বিশেষ সেতু। কাতারের প্রধান প্রতিবন্ধক গরম আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্টেডিয়ামে থাকবে নিজস্ব সৌরশক্তিচালিত কুলিং সিস্টেম। স্টেডিয়ামের ওপরে থাকবে কাচের বিশেষ আবরণ।
আল-বাইত স্টেডিয়াম
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে আল-খোর শহরে অবস্থিত আল বাইত স্টেডিয়াম। বেদুইন জাতিদের তাঁবুর আদলে নির্মিত হয়েছে ভেন্যুটি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালসহ ৯টি খেলা হবে এই স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামটির ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা রয়েছে।
বেদুইন জাতিদের তাঁবু ও ব্যবহৃত জিনিসপত্রের আদলে নির্মিত হয়েছে ভেন্যুটি। সবুজায়ন ও কৃত্রিম হ্রদে স্টেডিয়ামটি বিস্তৃত হয়েছে সমুদ্র পর্যন্ত। দোহা থেকে মেট্রোরেলযোগে আল-খোরে যাওয়া যাবে।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম
দোহার পশ্চিমাঞ্চলে আল-রাইয়ান শহরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। এখানে যেতেও মেট্রো ব্যবহার করতে হবে। নির্মাণশৈলী ও নকশার কারণে এটিকে ডায়মন্ড ইন ডেজার্ট অর্থাৎ মরুভূমির হীরা নামেও ডাকা হয়। সূর্যের কিরণ পড়লে চকচক করে ওঠে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণ।
৪০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে বিশ্বকাপে আটটি ম্যাচ হবে। এডুকেশন সিটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। কাছেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক ও মিউজিয়াম। দোহা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ভেন্যুটি অবস্থিত।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম
মধ্য দোহা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে আল-রাইয়ান শহরে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম অবস্থিত। কাতারের সবচেয়ে পুরোনো স্টেডিয়াম এটি। ১৯৭৬ সালে নির্মিত হয় এটি। বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাওয়ার সময় এটিই কাতারের একমাত্র ফুটবল ভেন্যু ছিল। আগামী রোববার এই মাঠেই ইরানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড তাদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে। এই মাঠে তৃতীয় নির্ধারণীসহ আটটি ম্যাচ হবে।
১৯৭৬ সালে গালফ কাপের আয়োজক হয়েছিল কাতার। ওই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে ২০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম নির্মিত হয়। ২০১৭ সালে সংস্কার করে ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নীত করা হয়।
আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়াম
১৯৬০-৭২ সাল পর্যন্ত কাতারের বাদশাহ ছিলেন আহমাদ বিন আলি আল। তাঁর শাসনামলে দেশটির আর্থিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন আসে। ১৯৭৭ সালে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আমিরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে এই স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে।
দোহা থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে আল-রাইয়ান শহরে স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। এর নকশা ও নির্মাণশৈলীতে স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের দিকগুলো অত্যন্ত সুনিপুণভাবে তুলে ধরে হয়েছে। এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার। কাতারের ঘরোয়া ফুটবল ক্লাব আল-রাইয়ান ও আল-খারিথিয়াত এটিকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করে।
২০০৩ সালে যখন প্রথম এই স্টেডিয়াম নির্মিত হয়, তখন এর ধারণক্ষমতা ছিল ২১ হাজার। সংস্কারের পরই ৪০ হাজার করা হয় এর ধারণক্ষমতা। বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ হবে এই মাঠে।
স্টেডিয়াম ৯৭৪
৯৭৪টি শিপিং কনটেইনারে তৈরি করা হয়েছে এই স্টেডিয়াম। ইতিহাস, সমুদ্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা, ব্যবসা-বাণিজ্য, সর্বোপরি কাতারিদের ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানাতে নির্মিত হয় এই ভেন্যু। কাতারের আন্তর্জাতিক ফোন নম্বর কোড ৯৭৪-এর সঙ্গেও রাখা হয়েছে মিল। দোহা সমুদ্রবন্দরের সন্নিকটে অবস্থিত স্টেডিয়ামটি।
গ্রুপপর্বে পর্তুগাল-ঘানা, ফ্রান্স-ডেনমার্ক, ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড-আর্জেন্টিনাসহ ছয়টি এবং শেষ ষোলোর একটি ম্যাচ হবে এই ভেন্যুতে। স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার। তবে আবহাওয়া শীতল রাখতে আলাদা কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নির্মাণের সময় সমুদ্রের বাতাসের অবাধ চলাচল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আল-থুমামা স্টেডিয়াম
দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশেই অবস্থিত আল থুমামা স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়েছে গাহফিয়ার আদলে। মধ্যপ্রাচ্য বা আরব দেশের পুরুষরা নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে একধরনের বিশেষ টুপি পরেন, সেটিকেই বলা হয় গাহফিয়া। ৪০ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটিতে গ্রুপপর্বের ছয়টি এবং একটি কোয়ার্টার ফাইনাল হবে।
আল-জানুব স্টেডিয়াম
কাতারের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে আল জানুব স্টেডিয়াম। দোহা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের আল ওয়াকরাহ শহরে অবস্থিত এটি। পূর্বে এর নাম ছিল আল ওয়াকরাহ স্টেডিয়াম। ইরাকি ব্রিটিশ নারী স্থপতি জাহা হাদিদের নকশায় ২০১৯ সালে নির্মিত হয় স্টেডিয়ামটি। আল ওয়াকরাহ নগরের মাছ ধরা ও মুক্তা সংগ্রহের অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ৪০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই মাঠে বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ হবে।
কষ্টি পাথরের ছোঁয়ায় বিশুদ্ধতার পরীক্ষা। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটে সানৎ জয়াসুরিয়া কি সেই মূল্যবান কষ্টি পাথর? বড় বড় নাম নেই দলে। তাই বলে ২২ গজে লঙ্কার ঝাঁঝ এত দ্রুতই মিলিয়ে হয়ে যাবে! মাহেলা জয়াবর্ধনে-কুমারা সাঙ্গাকারাদের বিদায়ের পর এক দশক ধরে প্রায় সাফল্যশূন্য লঙ্কানরা। সেখানে গত কয়েক মাসে আলোর সঞ্চালন হচ্ছ
১৪ মিনিট আগে২০১০ থেকে শুরু। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তান খেলেছে ৭ টি-টোয়েন্টি। তবে পাকিস্তান একবারও জয়ের মুখ দেখল না। হোবার্টে আজ তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে দিল ধবলধোলাইয়ের স্বাদ।
২ ঘণ্টা আগেপ্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা ইমরুল কায়েস দিয়েছিলেন কদিন আগেই। মিরপুর শেরেবাংলায় আজ শেষ হলো তাঁর ১৭ বছরের লাল বলের ক্রিকেট অধ্যায়। বাংলাদেশের বাঁহাতি ক্রিকেটারের মতে, সময় থাকতে অবসর নেওয়া উচিত।
৩ ঘণ্টা আগেঅস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ আগেই হারিয়েছে পাকিস্তান। হোবার্টে আজ বাংলাদেশ সময় বেলা ২টায় শুরু হওয়া তৃতীয় টি-টোয়েন্টিটা পাকিস্তানের জন্য ধবলধোলাই এড়ানোর ম্যাচ। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বেকায়দায় পড়েছে পাকিস্তান।
৪ ঘণ্টা আগে