আশঙ্কাটাই সত্যি হলো। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ হারল ইনিংস ও ৮ রানের ব্যবধানে। আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুবার অলআউট হয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হলো মুমিনুল হকের দল। সকালে ৮৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর শেষ বিকেলে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট ২০৫ রানে। 

অথচ এই ম্যাচ বাঁচাতে প্রকৃতি সব আয়োজনই করে রেখেছিল বাংলাদেশের জন্য। বৃষ্টি আর আলোক স্বল্পতার কারণে দুই দিনেরও বেশি সময় বল গড়ায়নি মাঠে। তবু মান বাঁচাতে পারলেন না। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৩০০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪ রানের জন্য ফলোঅন এড়াতে পারেনি দল। এরপর বাজে ব্যাটিংয়ে কোনোরকম দু শ পার করেছে বাংলাদেশ। 

তবে মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় একটা পর্যায়ে ভালোই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল স্বাগতিক শিবির। পাকিস্তানি বোলারদের সঙ্গে লড়াই করেছেন লিটন দাসও। শুরুর ভয়ংকর বিপর্যয়ের পর এই ত্রয়ীর ব্যাটেই ড্রয়ের আশা জাগায় দল। আশা নিরাশায় পরিণত হলো শেষ বিকেলে। নির্ধারিত ওভারের ৫.২ ওভার আগেই বাংলাদেশকে অলআউট করে দেয় পাকিস্তান। 

আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পঞ্চম ও শেষ দিন সাতসকালে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে অনুমিতভাবেই ফলোঅন করায় পাকিস্তান। দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নেমেও একই চিত্র। স্কোর বোর্ডে ২৫ রান যোগ হতেই আউট টপ অর্ডারের চার ব্যাটার। পরে পঞ্চম উইকেট জুটিতে উইকেটের লাগাম টেনে ধরেন মুশফিক ও লিটন। 

পঞ্চম উইকেটে তাদের ৭৩ রানের জুটি ভাঙে লিটন ৪৫ বলে বিদায় নিলে। এরপর মুশফিক ও সাকিবের লড়াই। এই জুটির ওপর দাঁড়িয়ে জয়ের আভাস দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু মুশি ৪৮ রানে আউট হয়ে যান। শেষ ভরসা হয়ে টিকে থাকলেন সাকিব। দলের ২০০ রানে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে সাকিব সাজঘরে ফিরলে ফের চোখ রাঙাতে থাকে পরাজয়। 

সাকিব ফিরেছেন ৬৩ বলে। সাকিবের বিদায়ের পরও মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম কিছুটা লড়াই করেছেন। দুজন মিলে খরচ করেছেন ১০১ বল। এই প্রতিরোধও পাকিস্তানের জয় আটকাতে পারেনি। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আজ ১৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দিয়েছে পাকিস্তান। 

আট উইকেট তুলে নিয়ে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন অখ্যাত স্পিনার সাজিদ খান। দ্বিতীয় ইনিংসেও পাকিস্তানের সেরা বোলার তিনিই। এবার নিয়েছেন চার উইকেট। দুটি করে শিকার শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলীর। অধিনায়ক বাবর আজম এদিনই পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট। 

এই জুটির ওপর দাঁড়িয়ে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে শেষ দিনের মধ্যাহ্ন ভোজে গেছে বাংলাদেশ দল। দলের সংগ্রহ এখন চার উইকেটে ৭২। মুশি ১৬ এবং লিটন ২৭ রানে অপরাজিত আছেন। সম্ভ্রম বাঁচাতে এই দুজনই আশার আলো হয়ে ফুটছেন। চট্টগ্রাম টেস্টেও তাদের ব্যাটে অনেক দূর এগিয়েছিল বাংলাদেশ। 

শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ফলোঅন এড়াতে বাংলাদেশকে করতে হতো ১০১ রান। কিন্তু ১৪ রান আগেই থেমেছে মুমিনুলেদের প্রথম ইনিংস। আট উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দিয়েছেন স্পিনার সাজিদ খান। অন্য উইকেটটা শাহিন শাহ আফ্রিদির। 

দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য স্পিন নয়, পেস আক্রমণ দিয়ে শুরু করে পাকিস্তান। আফ্রিদি ও ও হাসান আলী তোপে দিশেহারা বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে দুটি করে উইকেট নেন এই পেস যুগল। সাদমান ইসলাম (২) ও নাজমুল হোসেন শান্তকে (৬) ফেরান আফ্রিদি। মাহমুদুল হাসান জয় (৬) ও মুমিনুল (৭) হাসানের শিকার।