লক্ষ্য সেমিফাইনাল-এই কথাটা ২০২৩ বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশ দল রেকর্ডারের মতো বাজিয়ে বলেছিল। কিন্তু সেমি তো দূরে থাক, সবার আগে তাদেরই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়। এখন তো শঙ্কা জেগেছে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়েও। তবে বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এই ব্যাপারে এখনো আশাবাদী। 

জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ এরপর হেরেছে টানা ছয় ম্যাচ। ৭ ম্যাচে ১ জয় ও ৬ পরাজয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে সাকিব আল হাসানের দল এখন রয়েছে পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে। বাংলাদেশের নেট রানরেট-১.৪৪৬। অন্যদিকে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবে এবারের বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ সাত দল। আর আয়োজক হিসেবে আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সরাসরি খেলবে পাকিস্তান। এবারের বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ দল আগামীকাল খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আর নিজেদের শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। 

শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া-দুটো দলকে হারানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ দলকে মাথায় রাখতে হবে নেট রানরেটের ব্যাপারটাও। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ডের ম্যাচগুলোর দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। যেখানে ৭,৮ ও ১০ নম্বরে থাকা শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৪,৪ ও ২। তিন দলেরই বাকি রয়েছে দুটি করে ম্যাচ। হাথুরুসিংহে এখনো বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। দিল্লিতে আজ ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমার মতে, এটা এখনো সম্ভব। কারণ আমরা এখনো ভালো দল। আমরা কতটা ভালো দল, তা আগেই দেখিয়েছি। তাই আমাদের সেরা খেলাটা এখনো খেলতে পারিনি। এমনকি ধারেকাছেও ছিলাম না। তবু আমরা মনে করি, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা এখনো সম্ভব।’ 

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এবারের বিশ্বকাপে হয়েছে একের পর এক রেকর্ড। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪২৮ রানের রেকর্ড দক্ষিণ আফ্রিকা করেছে এবারই এই মাঠে। ৪০ ও ৪৯ বলে বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও এইডেন মার্করাম। তবু দিল্লির দূষিত বাতাস নিয়ে গত কদিন চলছে আলাপ আলোচনা। যেখানে ভারতের এই শহরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছাড়িয়ে গেছে ৪০০। জরুরি অবস্থা জারি করে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ করা হয়েছে। 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু আজ দিল্লির বর্তমান আবহাওয়া, মাঠের কন্ডিশন দুইটি বিষয়ই মাথায় নিয়ে কথা বলেছেন। বাংলাদেশ কোচের ভাষ্য, ‘হ্যাঁ, বাতাসের যে অবস্থা, তা আমাদের দুই দলকে সত্যিই ঝামেলায় ফেলেছে। আর এটা আদর্শ অবস্থা না। তবে আমাদের কোনো উপায় নেই। এই কন্ডিশনেই আমাদের খেলতে হবে। আমার মতে বিশ্বকাপে অন্যতম সেরা পিচে আমরা খেলতে যাচ্ছি। আপনি যেহেতু বলেছেন, শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। দুটো দলই বর্তমানে একই রকম অবস্থায় আছে। সত্যি বলতে আমরা চেষ্টা করছি যতটা ওপরে থেকে শেষ করা যায়। কেননা আমরা সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে।’ 

১৯৯২,২০১৯ এর সংস্করণে হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ। যেখানে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে প্রতিটা দল একে অপরের সঙ্গে খেলছে। এখান থেকে সেরা চার দল খেলছে সেমিফাইনালে আর সেমি থেকে এরপর ফাইনাল ম্যাচ। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে হাথুরু বলেন, ‘আমার মতে, এটাই সেরা সংস্করণ। ২০১৯,১৯৯২ সালে এই সংস্করণে খেলা হয়েছে। যদি আপনি জেতেন, তখন আপনার মনে হবে সবার সঙ্গেই আপনি সত্যি সত্যি খেলছেন। আর দল নির্বাচন বাতাসের গুণ বিচার করে হবে না। এটা কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ ও আমাদের শক্তির ওপর নির্ভর করে হবে।’