রানা আব্বাস, ঢাকা
কয়েক দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ অফিশিয়ালদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি, সেখানে বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ারের নাম নেই। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অনুপস্থিতি নতুন নয়। কিন্তু দীর্ঘশ্বাসটা তখনই বাড়বে, যখন জানবেন জিম্বাবুয়ের একজন আম্পায়ারও আছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যাদের ক্রিকেট অবকাঠামো বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বল।
মেয়েদের বিশ্বকাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ কিংবা ছেলেদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অংশগ্রহণ থাকলেও ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট, অর্থাৎ ছেলেদের বিশ্বকাপে (৫০ কিংবা ২০ ওভারের) বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ার কখনোই সুযোগ পাননি। ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের গৌরবগাথা লিখছে; সেখানে আম্পায়ারিংয়ে বাংলাদেশ যেন তৃতীয় সারিতে। অথচ ক্রিকেটে আম্পায়ারদেরও সুযোগ থাকে নিজের দেশকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে পরিচিত করার। বড় উদাহরণ হিসেবে আসবে ডেভিড শেফার্ড, স্টিভ বাকনার, বিলি বাউডেন, আলিম দারদের নাম।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আম্পায়ারিংয়ে ৯ দেশের যে ১৬ জন আম্পায়ার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের ১২ জন এসেছেন এলিট প্যানেল থেকে। বাকি চারজন আইসিসির ইমার্জিং প্যানেল থেকে। এই ইমার্জিং প্যানেলে সাধারণত ১২টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের ৪৮ জন আম্পায়ার তালিকাভুক্ত থাকেন। আইসিসির ইমার্জিং প্যানেলের সংক্ষিপ্ত তালিকাটা হয়ে থাকে ১২ জনের। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে এগিয়ে, সেই শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত আছেন ১৯ নম্বরে। যদি আম্পায়ারিংয়ে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং করা হয়, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অবস্থান কোথায়, সেটি নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের কখনোই সুযোগ না পাওয়াটা দেশের আম্পায়ারিংয়ের হতশ্রী চিত্রটাই যেন তুলে ধরে। যদিও বাংলাদেশের আম্পায়াররা ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিয়মিত আম্পায়ারিং করেছেন। দেশের একমাত্র আম্পায়ার হিসেবে এনামুল হক মনি নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে টেস্টে অন ফিল্ড আম্পায়ারিং করেছেন। বাংলাদেশের আরেক আম্পায়ার সৈকতের টেস্ট অভিষেক হয়েছে এ বছর। মহামারিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ চারটি সিরিজ (সীমিত ওভারের ক্রিকেট) পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশেরই আম্পায়াররা। তবু বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়াররা কেন সুযোগ পান না? প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে গিয়ে আলোর নিচে প্রগাঢ় এক অন্ধকার স্পষ্ট হলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় এক আম্পায়ার আজকের পত্রিকাকে বলছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার ৯ দেশ থেকে আম্পায়ার এসেছেন, অথচ আমরা নেই। এটা আমাদের কাছে তেমন ভাবনার বিষয়ও নয়! অথচ জাতীয় দলে খেলা একজন তরুণ ক্রিকেটারের তুচ্ছ বিষয় নিয়েও আমাদের কত উন্মাদনা, আগ্রহ। আম্পায়ারদের জন্য বরাদ্দ শুধু গালি। বাংলাদেশ দলের আম্পায়ারদের নিয়ে ইতিবাচক খবর খুব কম। আমাদের তেমন আর্থিক-সামাজিক মর্যাদা নেই।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বেতনভুক্ত আম্পায়ার আছেন ৩০ জন। এর মধ্যে চারজন আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার—সৈকত, মাসুদুর রহমান মুকুল, তানভীর আহমেদ ও গাজী সোহেল। এই চার আম্পায়ারই মূলত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক আম্পায়ার। খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়ারদেরও নিয়মিত পারফরম্যান্স মূল্যায়ন হয়। খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে যেটি করে টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকেরা।
আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের ক্ষেত্রে সেটি আইসিসি। একজন আম্পায়ারের সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়াই তাঁর মূল্যায়নের একমাত্র মানদণ্ড নয়। দেখা হয় তাঁর শৃঙ্খলা, ইংরেজিতে বলা ও লেখার দক্ষতা, যোগাযোগদক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, মাঠে খেলোয়াড়দের ওপর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এসব মানদণ্ডে বাংলাদেশের আম্পায়াররা অনেক সময় পিছিয়ে যান বিশ্বের উন্নত দেশের আম্পায়ারদের সঙ্গে।
অবশ্য শুধু এসব মানদণ্ডেই নয়, আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ও চলে আসে এখানে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। তুলনামূলক কম যোগ্যদের বেশি ম্যাচ বরাদ্দ বা প্রভাববিস্তারী ক্লাবগুলোর চাহিদা মেটাতে পছন্দের আম্পায়ারদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ প্রায় প্রতিবছরই মেলে। গত জুনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আম্পায়ারিংয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে লাথি মারার ঘটনা তো ছড়িয়ে পড়ল পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিজ্ঞ আম্পায়ার বড় হতাশা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘দেশে আম্পায়ারের অভাব নেই। তবে কোয়ালিটি আম্পায়ারের অভাব আছে। যাঁরা ভালো আম্পায়ার, তাঁদের ওপর আসার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা। আম্পায়াররা এখানে উপযাচক, পুতুল হয়ে থাকেন।’ তিনি বেশ ক্ষোভ নিয়েই যোগ করলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতি যেটাই হোক, স্বচ্ছ আম্পায়ারিং না হলে সেটা ক্রিকেটের ক্ষতি, আম্পায়ারদেরও ক্ষতি। ভালো আম্পায়াররা পায় ১০ ম্যাচ, অযোগ্য আম্পায়াররা ৩০টা। ভালো আম্পায়াররা বেশি চাপে থাকেন। এ কারণে ভালো ছেলেরা আম্পায়ারিংয়ে আসতে চায় না।’
দেশের আরেক আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সামনে এনেছেন আর্থিক অনিশ্চয়তার বিষয়টি। যে ছয় ক্যাটাগরিতে বিসিবি ৩০ আম্পায়ারকে বেতনভুক্ত করেছে, তাঁদের মধ্যে আইসিসির চার প্যানেল আম্পায়ার সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকার বেতন পান। ১৫ বছর আগে নাদির শাহ, মনির বেতন ছিল মাসে ৪০ হাজার টাকা। গত ১৫ বছরে শীর্ষ আম্পায়ারদের বেতন ২০ হাজার টাকাও বাড়েনি। যদিও আম্পায়ার বিভাগ জানাচ্ছে, বিসিবি যে ম্যাচ ফি দেয় আম্পায়ারদের, তাতে শীর্ষ আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক মাসে আয় ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। বিসিবি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আম্পায়ারদের ম্যাচ ফি দেয় ৩৫ হাজার টাকা। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে দেয় ১০ হাজার টাকা। অবশ্য ভারতের একজন আম্পায়ার আইপিএলের ১৫টি ম্যাচ পরিচালনা করেই প্রায় ৬৫ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাঁদের বেতনের অনেক পার্থক্য হবে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় ঠিক আছে। তবু হয়তো সমস্যা থাকতে পারে। সেটা নিয়ে কাজ করা যাবে।’
বিশ্বমঞ্চে দেশের আম্পায়ারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আইসিসিতে ক্রিকেট বোর্ডের তদবির-সুপারিশের বিষয়টিও অনেক সময় সামনে আসে। যদিও বিসিবির প্রধান নির্বাহী মনে করেন, এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত দক্ষতার বিষয়। নিজের পারফরম্যান্সের ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে আম্পায়ারদের মান বাড়াতে বিসিবি আরও উদ্যোগ নেবে বলে জানান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, ‘এটা আমাদের চিন্তার বিষয় (ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান)। তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ করতে হবে। আম্পায়ারদের ওপরে তুলতে হলে তাঁদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করতে হবে।’
কয়েক দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ অফিশিয়ালদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি, সেখানে বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ারের নাম নেই। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অনুপস্থিতি নতুন নয়। কিন্তু দীর্ঘশ্বাসটা তখনই বাড়বে, যখন জানবেন জিম্বাবুয়ের একজন আম্পায়ারও আছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যাদের ক্রিকেট অবকাঠামো বাংলাদেশের চেয়ে দুর্বল।
মেয়েদের বিশ্বকাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ কিংবা ছেলেদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অংশগ্রহণ থাকলেও ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট, অর্থাৎ ছেলেদের বিশ্বকাপে (৫০ কিংবা ২০ ওভারের) বাংলাদেশের কোনো আম্পায়ার কখনোই সুযোগ পাননি। ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের গৌরবগাথা লিখছে; সেখানে আম্পায়ারিংয়ে বাংলাদেশ যেন তৃতীয় সারিতে। অথচ ক্রিকেটে আম্পায়ারদেরও সুযোগ থাকে নিজের দেশকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে পরিচিত করার। বড় উদাহরণ হিসেবে আসবে ডেভিড শেফার্ড, স্টিভ বাকনার, বিলি বাউডেন, আলিম দারদের নাম।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আম্পায়ারিংয়ে ৯ দেশের যে ১৬ জন আম্পায়ার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের ১২ জন এসেছেন এলিট প্যানেল থেকে। বাকি চারজন আইসিসির ইমার্জিং প্যানেল থেকে। এই ইমার্জিং প্যানেলে সাধারণত ১২টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের ৪৮ জন আম্পায়ার তালিকাভুক্ত থাকেন। আইসিসির ইমার্জিং প্যানেলের সংক্ষিপ্ত তালিকাটা হয়ে থাকে ১২ জনের। সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে এগিয়ে, সেই শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত আছেন ১৯ নম্বরে। যদি আম্পায়ারিংয়ে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং করা হয়, বাংলাদেশের আম্পায়ারদের অবস্থান কোথায়, সেটি নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আম্পায়ারদের কখনোই সুযোগ না পাওয়াটা দেশের আম্পায়ারিংয়ের হতশ্রী চিত্রটাই যেন তুলে ধরে। যদিও বাংলাদেশের আম্পায়াররা ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নিয়মিত আম্পায়ারিং করেছেন। দেশের একমাত্র আম্পায়ার হিসেবে এনামুল হক মনি নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে টেস্টে অন ফিল্ড আম্পায়ারিং করেছেন। বাংলাদেশের আরেক আম্পায়ার সৈকতের টেস্ট অভিষেক হয়েছে এ বছর। মহামারিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ চারটি সিরিজ (সীমিত ওভারের ক্রিকেট) পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশেরই আম্পায়াররা। তবু বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের আম্পায়াররা কেন সুযোগ পান না? প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে গিয়ে আলোর নিচে প্রগাঢ় এক অন্ধকার স্পষ্ট হলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় এক আম্পায়ার আজকের পত্রিকাকে বলছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার ৯ দেশ থেকে আম্পায়ার এসেছেন, অথচ আমরা নেই। এটা আমাদের কাছে তেমন ভাবনার বিষয়ও নয়! অথচ জাতীয় দলে খেলা একজন তরুণ ক্রিকেটারের তুচ্ছ বিষয় নিয়েও আমাদের কত উন্মাদনা, আগ্রহ। আম্পায়ারদের জন্য বরাদ্দ শুধু গালি। বাংলাদেশ দলের আম্পায়ারদের নিয়ে ইতিবাচক খবর খুব কম। আমাদের তেমন আর্থিক-সামাজিক মর্যাদা নেই।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বেতনভুক্ত আম্পায়ার আছেন ৩০ জন। এর মধ্যে চারজন আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার—সৈকত, মাসুদুর রহমান মুকুল, তানভীর আহমেদ ও গাজী সোহেল। এই চার আম্পায়ারই মূলত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক আম্পায়ার। খেলোয়াড়দের মতো আম্পায়ারদেরও নিয়মিত পারফরম্যান্স মূল্যায়ন হয়। খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে যেটি করে টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকেরা।
আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের ক্ষেত্রে সেটি আইসিসি। একজন আম্পায়ারের সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়াই তাঁর মূল্যায়নের একমাত্র মানদণ্ড নয়। দেখা হয় তাঁর শৃঙ্খলা, ইংরেজিতে বলা ও লেখার দক্ষতা, যোগাযোগদক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, মাঠে খেলোয়াড়দের ওপর নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। এসব মানদণ্ডে বাংলাদেশের আম্পায়াররা অনেক সময় পিছিয়ে যান বিশ্বের উন্নত দেশের আম্পায়ারদের সঙ্গে।
অবশ্য শুধু এসব মানদণ্ডেই নয়, আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ও চলে আসে এখানে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। তুলনামূলক কম যোগ্যদের বেশি ম্যাচ বরাদ্দ বা প্রভাববিস্তারী ক্লাবগুলোর চাহিদা মেটাতে পছন্দের আম্পায়ারদের দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ প্রায় প্রতিবছরই মেলে। গত জুনে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আম্পায়ারিংয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে লাথি মারার ঘটনা তো ছড়িয়ে পড়ল পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিজ্ঞ আম্পায়ার বড় হতাশা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন, ‘দেশে আম্পায়ারের অভাব নেই। তবে কোয়ালিটি আম্পায়ারের অভাব আছে। যাঁরা ভালো আম্পায়ার, তাঁদের ওপর আসার পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা। আম্পায়াররা এখানে উপযাচক, পুতুল হয়ে থাকেন।’ তিনি বেশ ক্ষোভ নিয়েই যোগ করলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতি যেটাই হোক, স্বচ্ছ আম্পায়ারিং না হলে সেটা ক্রিকেটের ক্ষতি, আম্পায়ারদেরও ক্ষতি। ভালো আম্পায়াররা পায় ১০ ম্যাচ, অযোগ্য আম্পায়াররা ৩০টা। ভালো আম্পায়াররা বেশি চাপে থাকেন। এ কারণে ভালো ছেলেরা আম্পায়ারিংয়ে আসতে চায় না।’
দেশের আরেক আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সামনে এনেছেন আর্থিক অনিশ্চয়তার বিষয়টি। যে ছয় ক্যাটাগরিতে বিসিবি ৩০ আম্পায়ারকে বেতনভুক্ত করেছে, তাঁদের মধ্যে আইসিসির চার প্যানেল আম্পায়ার সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকার বেতন পান। ১৫ বছর আগে নাদির শাহ, মনির বেতন ছিল মাসে ৪০ হাজার টাকা। গত ১৫ বছরে শীর্ষ আম্পায়ারদের বেতন ২০ হাজার টাকাও বাড়েনি। যদিও আম্পায়ার বিভাগ জানাচ্ছে, বিসিবি যে ম্যাচ ফি দেয় আম্পায়ারদের, তাতে শীর্ষ আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক মাসে আয় ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। বিসিবি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আম্পায়ারদের ম্যাচ ফি দেয় ৩৫ হাজার টাকা। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে দেয় ১০ হাজার টাকা। অবশ্য ভারতের একজন আম্পায়ার আইপিএলের ১৫টি ম্যাচ পরিচালনা করেই প্রায় ৬৫ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। আম্পায়ারদের পারিশ্রমিক নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাঁদের বেতনের অনেক পার্থক্য হবে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় ঠিক আছে। তবু হয়তো সমস্যা থাকতে পারে। সেটা নিয়ে কাজ করা যাবে।’
বিশ্বমঞ্চে দেশের আম্পায়ারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আইসিসিতে ক্রিকেট বোর্ডের তদবির-সুপারিশের বিষয়টিও অনেক সময় সামনে আসে। যদিও বিসিবির প্রধান নির্বাহী মনে করেন, এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত দক্ষতার বিষয়। নিজের পারফরম্যান্সের ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে আম্পায়ারদের মান বাড়াতে বিসিবি আরও উদ্যোগ নেবে বলে জানান নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, ‘এটা আমাদের চিন্তার বিষয় (ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের মান)। তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও কাজ করতে হবে। আম্পায়ারদের ওপরে তুলতে হলে তাঁদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করতে হবে।’
সিরিজের প্রথম টেস্টের আগে অ্যান্টিগায় প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে নেমেছে বাংলাদেশ দল। সফরকারী বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডার যেন এখনো ছন্দ খুঁজে পাচ্ছে না
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। ফুটবল দলের সদস্যসহ কোচিং স্টাফ-সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে ৩২ জনকে ফ্রিজ উপহার দিয়েছে তারা। আজ বিকেলে মতিঝিলের বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
৬ ঘণ্টা আগেসরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকদের বেশির ভাগই আড়ালে চলে যান। সভাপতির পদ ছাড়েন নাজমুল হাসান পাপন। পদ হারান আরও ১০ পরিচালক। কয়েকজন করেছেন পদত্যাগ।
৭ ঘণ্টা আগে