বিভুরঞ্জন সরকার
দেশে ৪১টি নিবন্ধিত এবং প্রায় সমসংখ্যক অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও দলাংশ থাকার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি নুরুল হক নুর একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। সাধারণত চাহিদা থাকলেই নতুন কিছু তৈরি করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে আর যা কিছুরই আকাল থাক না কেন, রাজনৈতিক দলের আকালের কথা শোনা যায়নি। ডান-বাম-মধ্য-সাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ—সব ধারার প্রতিনিধিত্ব করার মতো দল আছে। এর অনেকগুলোই হোন্ডা পার্টি, রিকশা পার্টি অথবা প্রাইভেট কার পার্টি, অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার মতো লোকবল না থাকা সত্ত্বেও একটি দল আছে।
নুরুল হক নুর আবার একটি নতুন দল করার গরজ বোধ করলেন কেন, কারা থাকবেন এই দলে, দেশ ও দেশবাসীর কোন চাহিদা পূরণের জন্য এই দল, তা বিস্তারিত জানা যায়নি। নুরুল হক জানিয়েছেন, গণতন্ত্র ও দেশের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করে, আইনের শাসন নিয়ে যারা সোচ্চার, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। নুরুল হক মনে করেন, ‘দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতার কারণেই স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা নিশ্চিত করতে চাই, তবে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল দরকার।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কার্যক্রমকে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বর্ণনা করে নুরুল বলেন, এরা যখন ক্ষমতায় থাকে আইন, আদালত, প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। কিন্তু এখন রাষ্ট্রের সংস্কার প্রয়োজন।
এই সংস্কারকাজে হাত দিতেই হাতিয়ার হিসেবে নুরুল যে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান, তা তাঁর গত বছর কয়েকের কাজকর্ম দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে। তিনি যেভাবে নিজের পরিচিতি অর্জন করেছেন, তা থেকে তাঁর মধ্যে নেতা হওয়ার খায়েশ লক্ষ করা যায়। তাঁর ভেতর একটা লড়াকু মনোভাবও আছে। তাঁর ওপর কারণে-অকারণে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগ তাঁকে কিছুটা ‘হিরো’ বানিয়েছে। নুরুলের মধ্যে উচ্চাভিলাষ যতটা আছে, নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা ততটা আছে কি না, সেটা বুঝতে আরও একটু সময় লাগবে। তবে নুরুলের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় কোনো আগ্রহ, কৌতূহল বা চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হয় না।
নুরুল হক বয়সে তরুণ। চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে তিনি আলোচনায় আসেন এবং দেশের প্রতিষ্ঠিত পুরোনো ছাত্রসংগঠনগুলোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সক্ষম হন। তিনি একপর্যায়ে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। আমাদের দেশে জাতীয় রাজনীতিতে বড় অবদান যাঁরা রেখেছেন, তাঁদের কেউ কেউ ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে দেশে ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন অনিয়মিত হওয়া বা প্রায় বন্ধ থাকায় নতুন নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নুরুলের আগে আরও কেউ কেউ সময়ে-সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেননি, তা কিন্তু নয়। এর মধ্যে দু-একটি উদ্যোগ নিয়ে মানুষের ভেতর যথেষ্ট আগ্রহও দেখা গিয়েছিল। সেসব দল কিন্তু বিকল্প তো দূরের কথা, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনসমর্থনের কাছাকাছিও পৌঁছাতে পারেনি; বরং তাদের বেশির ভাগ বিএনপির বি-টিমের ভূমিকায় নেমে বাস্তবে লোক হাসিয়েছে।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সালে অনেক ঘটা করেই গণফোরামের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে অতীতে কেউ রাজনীতিতে কোনো ধারা সৃষ্টি করতে পারেনি—এ দৃষ্টান্ত সামনে থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল, ড. কামাল কি পারবেন ‘মূলধারার’ বিকল্প নেতা হতে, নাকি হারিয়ে যাবেন কালের কপোল তলে? দেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিকল্প একটি রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা যাঁরা অনুভব করেন, তাঁদের মধ্যেও সংশয় ছিল, যাঁদের নিয়ে ড. কামাল যাত্রা শুরু করেছেন, তাঁরা কি আদৌ বিকল্প হওয়ার উপযুক্ত? সন্ত্রাস ও কালোটাকার হাতে দেশবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে বক্তৃতা করে ড. কামাল এমন ব্যক্তিকেও পাশে নিয়েছিলেন, যাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল। তবে এটাও তখন কেউ কেউ বলেছিলেন যে, শুধু ফেরেশতাতুল্য লোকদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে উঠতে পারে না, সেটা সম্ভবও নয়। রাজনৈতিক দলে নানা ধরনের লোকজনের সমাবেশ ঘটে। দেখার বিষয় হলো, দলের মধ্যে কাদের প্রভাব বেশি, কারা আসলে দলটি নিয়ন্ত্রণ করে?
কামাল হোসেনের মেধা ও প্রজ্ঞার ওপর আস্থা রেখে যাঁরা তাঁর সঙ্গে জুটেছিলেন, তাঁরা বুঝতে পারেননি যে রাজনীতিতে শুধু কেতাবি পাণ্ডিত্য খুব কাজে লাগে না। রাজনীতিতে দূরদর্শী হতে হয়, থাকতে হয় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিচক্ষণতা। একজন সফল ও জনপ্রিয় রাজনীতিকের জন্য সবচেয়ে বড় যে গুণটা থাকা দরকার তা হলো, পরিস্থিতি ও মানুষের মনোভাব বুঝতে পারার ক্ষমতা। রাজনীতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে জীবনের পাঠশালা থেকে বাস্তব ও লোকায়ত জ্ঞান থাকা দরকার। তত্ত্ব বেশি জানা মানুষ জনপ্রিয়তার দৌড়ে খুব এগিয়ে থাকেন না। একজন মানুষের ব্যক্তিগত সদিচ্ছার সঙ্গে বহু মানুষের ভাবনার ঐক্য বা মিলনই একটি রাজনৈতিক দলের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কামাল হোসেনের গণফোরামে যুক্ত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ, সিপিবি, ন্যাপ, জাসদ থেকে আসা রাজনীতির কিছু চেনা মুখ। আবার রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না, এমন কিছু বিশিষ্ট মানুষও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণফোরাম গঠনে সহায়তা দিয়েছেন। কী হয়েছে তার পরিণাম?
আমাদের দেশের রাজনীতিতে একসময় ছাত্র এবং শ্রমিকদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলে প্রাণপ্রবাহ সচল রাখতে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন রক্ত সরবরাহ করে এসেছে। গণফোরাম যত সহজে কিছু নেতা পেয়েছে, তত সহজে কর্মী-সমর্থক সংগ্রহ করতে পারেনি। কারণ, তত দিনে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন লেজুড়বৃত্তির পথ ধরে দিগ্ভ্রান্ত হয়েছে। রাজনীতির কিছু চেনা মুখ নতুন কিছু করতে চাইলেই রাতারাতি সবাই হুড়মুড় করে তাদের দিকে যে ঝুঁকে পড়ে না, সেটা স্পষ্ট হয়েছে গণফোরামের ক্ষেত্রে।
আবার এটাও ঠিক যে, নতুন মানুষ আকাশ থেকে পড়ে না। যুগ ও সময়ের প্রয়োজনে পুরোনো রাজনৈতিক বৃত্ত ভাঙার দরকার হলে পুরোনো মানুষের মধ্য থেকেই উদ্যোগীরা এগিয়ে আসেন। অতীতে এমনটাই দেখা গেছে। মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ যাঁরা আওয়ামী লীগ গঠনে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা কি রাজনীতিতে নতুন মানুষ ছিলেন, নাকি মুসলিম লীগ রাজনীতির পুরোনো মানুষেরাই যুগোপযোগী নতুন রাজনীতিকে ধারণ করার জন্য নতুন ভূমিকা পালন করেছিলেন? মওলানা ভাসানী যখন ন্যাপ গঠন করেছিলেন, সেটাও কি অতীত রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন নতুন মানুষ নিয়ে? এই উপমহাদেশে সাম্যবাদী রাজনীতির গোড়াপত্তনকারীদের অনেকেই শুরু করেছিলেন যুগান্তর-অনুশীলন ইত্যাদি সন্ত্রাসবাদী দলের মাধ্যমে। সুতরাং নতুন রাজনৈতিক দল করার জন্য নতুন মানুষ বনাম পুরোনো মানুষ বিতর্কটিও কিছুটা অবান্তর। পুরোনো বৃত্ত ভেঙে নতুন পথে হাঁটার মানসিকতা আছে কি না, সেটাই হওয়া উচিত বিবেচ্য বিষয়।
কামাল হোসেনের পর বিএনপি থেকে বেরিয়ে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, আওয়ামী লীগ ছেড়ে বঙ্গবীর হিসেবে পরিচিত কাদের সিদ্দিকী, সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জেনারেল মোহাম্মদ ইবরাহিম এবং জরুরি এক-এগারোর সময় গ্রামীণ ব্যাংকখ্যাত ও নোবেলজয়ী ড. ইউনূসসহ আরও কেউ কেউ রাজনৈতিক দল গড়েছেন বা গড়ার উদ্যোগ নিয়েই দম হারিয়েছেন। কিন্তু ‘বিকল্প শক্তি’ হয়ে ওঠার দৌড়ে কেউ সক্ষমতা অর্জন করতে পারেননি। মানুষের আস্থাভাজন হয়ে ওঠার বিষয়টি মাথায় না নিয়ে শুধু স্বপ্নবিলাসী হওয়া অর্থহীন। যেকোনো নিষ্ফল উদ্যোগ মানুষের মনে বিভ্রান্তি বাড়ায়, হতাশা তৈরি করে।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে বছরের পর বছর ধরে চলছে বড় রকমের আস্থার সংকট। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতির গায়ে যে কলঙ্কছাপ লেগেছে, তা আর মোছা যাচ্ছে না। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে চান না, আস্থায় নিতে চান না। গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে সামরিক হস্তক্ষেপ, রাজনীতিকে কেনাবেচার পণ্যে পরিণত করা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমজোরি করে রাখা, নির্বাচনব্যবস্থাকে তামাশার স্তরে নিয়ে যাওয়ায় দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাধারণ মানুষের একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য যে আন্তরিক উদ্যোগ, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দরকার, তা নুরুল হকের কতটুকু আছে, সে প্রশ্ন তাঁর দল গঠনের ঘোষণার পর অনেকের মনেই দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।
রাজনীতিতে নীতিহীনতার প্রতিযোগিতা প্রবল হওয়ায় বড় দুটি দলের ভেতরেই গণতন্ত্রচর্চার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে। দলীয় গঠনতন্ত্র গণতান্ত্রিক হওয়ায় আওয়ামী লীগ কিছুটা গণতান্ত্রিক উপায়ে চললেও বিএনপিতে সে সবের বালাই নেই। আবার ক্ষমতায় অথবা ক্ষমতার বাইরে থাকলেও সরকার এবং দলে খালেদা জিয়ার যেমন নিরঙ্কুশ আধিপত্য থাকে, তাঁর কথার বাইরে যেমন কিছুই চলে না, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় কিংবা ক্ষমতার বাইরে থাকলে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না। বিএনপিতে খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত বা মতের বাইরে চলার ক্ষমতা যেমন কারও নেই, আওয়ামী লীগেও শেখ হাসিনাই শেষ কথা বলার অধিকারী। সরকারপ্রধান প্রবল প্রতাপশালী হলে মন্ত্রীদের পক্ষে স্বাধীনভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা কঠিন। এ ধরনের অবস্থা একটি দক্ষ ও গতিশীল সরকারের পরিচয়বাহী হতে পারে না। অতীতে এবং বর্তমানে এ ধারাই আমরা লক্ষ করছি।
সব সরকারের আমলেই কারও না কারও বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। সব অভিযোগই ভিত্তিহীন বা দুষ্ট লোকের মন্দ উদ্দেশ্যের অপপ্রচার নয়। কিন্তু দেখা যায়, সরকারপ্রধান অভিযুক্তদের প্রতি সদয়ই থাকেন। খুব বিতর্কিত কিছু না করলে আমাদের দেশে সাধারণত কাউকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে দেখা যায় না। সব দেখেশুনে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ তৈরি হলেও স্থিতাবস্থার বিরুদ্ধে যাওয়ার মানসিকতা তৈরি হয় না।
রাজনীতিটা যেমন সাহস এবং কৌশলের খেলা, তেমনি এর সঙ্গে মানুষের চাহিদা, প্রত্যাশা, প্রয়োজন এবং আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ভূরাজনীতির হিসাব-নিকাশও জড়িত থাকে। এই সবকিছুর মধুর সমন্বয় না ঘটলে সফল হওয়া যায় না, জয়ের আশা মরীচিকা হয়েই থাকে। নুরুল হক নুরের মধ্যে তারুণ্যের আবেগ হয়তো আছে, কিন্তু তাঁর পেছনের শক্তি, মদদদাতা, অর্থের জোগানদাতা, সাহস বা বলের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তাঁর ডাকে মানুষ কাতারবন্দী হবে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষই যেকোনো রাজনৈতিক দলের বল-ভরসা। এই মানুষদের কাছে টানার জাদুর কোনো কাঠি কি নুরুলের হাতে আছে?
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দেশে ৪১টি নিবন্ধিত এবং প্রায় সমসংখ্যক অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও দলাংশ থাকার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি নুরুল হক নুর একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। সাধারণত চাহিদা থাকলেই নতুন কিছু তৈরি করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে আর যা কিছুরই আকাল থাক না কেন, রাজনৈতিক দলের আকালের কথা শোনা যায়নি। ডান-বাম-মধ্য-সাম্প্রদায়িক-ধর্মনিরপেক্ষ—সব ধারার প্রতিনিধিত্ব করার মতো দল আছে। এর অনেকগুলোই হোন্ডা পার্টি, রিকশা পার্টি অথবা প্রাইভেট কার পার্টি, অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার মতো লোকবল না থাকা সত্ত্বেও একটি দল আছে।
নুরুল হক নুর আবার একটি নতুন দল করার গরজ বোধ করলেন কেন, কারা থাকবেন এই দলে, দেশ ও দেশবাসীর কোন চাহিদা পূরণের জন্য এই দল, তা বিস্তারিত জানা যায়নি। নুরুল হক জানিয়েছেন, গণতন্ত্র ও দেশের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করে, আইনের শাসন নিয়ে যারা সোচ্চার, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। নুরুল হক মনে করেন, ‘দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতার কারণেই স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা নিশ্চিত করতে চাই, তবে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল দরকার।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কার্যক্রমকে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বর্ণনা করে নুরুল বলেন, এরা যখন ক্ষমতায় থাকে আইন, আদালত, প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। কিন্তু এখন রাষ্ট্রের সংস্কার প্রয়োজন।
এই সংস্কারকাজে হাত দিতেই হাতিয়ার হিসেবে নুরুল যে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করতে চান, তা তাঁর গত বছর কয়েকের কাজকর্ম দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে। তিনি যেভাবে নিজের পরিচিতি অর্জন করেছেন, তা থেকে তাঁর মধ্যে নেতা হওয়ার খায়েশ লক্ষ করা যায়। তাঁর ভেতর একটা লড়াকু মনোভাবও আছে। তাঁর ওপর কারণে-অকারণে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগ তাঁকে কিছুটা ‘হিরো’ বানিয়েছে। নুরুলের মধ্যে উচ্চাভিলাষ যতটা আছে, নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা ততটা আছে কি না, সেটা বুঝতে আরও একটু সময় লাগবে। তবে নুরুলের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় কোনো আগ্রহ, কৌতূহল বা চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হয় না।
নুরুল হক বয়সে তরুণ। চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করে তিনি আলোচনায় আসেন এবং দেশের প্রতিষ্ঠিত পুরোনো ছাত্রসংগঠনগুলোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সক্ষম হন। তিনি একপর্যায়ে ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন। আমাদের দেশে জাতীয় রাজনীতিতে বড় অবদান যাঁরা রেখেছেন, তাঁদের কেউ কেউ ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তবে দেশে ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন অনিয়মিত হওয়া বা প্রায় বন্ধ থাকায় নতুন নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নুরুলের আগে আরও কেউ কেউ সময়ে-সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেননি, তা কিন্তু নয়। এর মধ্যে দু-একটি উদ্যোগ নিয়ে মানুষের ভেতর যথেষ্ট আগ্রহও দেখা গিয়েছিল। সেসব দল কিন্তু বিকল্প তো দূরের কথা, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জনসমর্থনের কাছাকাছিও পৌঁছাতে পারেনি; বরং তাদের বেশির ভাগ বিএনপির বি-টিমের ভূমিকায় নেমে বাস্তবে লোক হাসিয়েছে।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সালে অনেক ঘটা করেই গণফোরামের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে অতীতে কেউ রাজনীতিতে কোনো ধারা সৃষ্টি করতে পারেনি—এ দৃষ্টান্ত সামনে থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল, ড. কামাল কি পারবেন ‘মূলধারার’ বিকল্প নেতা হতে, নাকি হারিয়ে যাবেন কালের কপোল তলে? দেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিকল্প একটি রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা যাঁরা অনুভব করেন, তাঁদের মধ্যেও সংশয় ছিল, যাঁদের নিয়ে ড. কামাল যাত্রা শুরু করেছেন, তাঁরা কি আদৌ বিকল্প হওয়ার উপযুক্ত? সন্ত্রাস ও কালোটাকার হাতে দেশবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে বক্তৃতা করে ড. কামাল এমন ব্যক্তিকেও পাশে নিয়েছিলেন, যাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিল। তবে এটাও তখন কেউ কেউ বলেছিলেন যে, শুধু ফেরেশতাতুল্য লোকদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে উঠতে পারে না, সেটা সম্ভবও নয়। রাজনৈতিক দলে নানা ধরনের লোকজনের সমাবেশ ঘটে। দেখার বিষয় হলো, দলের মধ্যে কাদের প্রভাব বেশি, কারা আসলে দলটি নিয়ন্ত্রণ করে?
কামাল হোসেনের মেধা ও প্রজ্ঞার ওপর আস্থা রেখে যাঁরা তাঁর সঙ্গে জুটেছিলেন, তাঁরা বুঝতে পারেননি যে রাজনীতিতে শুধু কেতাবি পাণ্ডিত্য খুব কাজে লাগে না। রাজনীতিতে দূরদর্শী হতে হয়, থাকতে হয় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিচক্ষণতা। একজন সফল ও জনপ্রিয় রাজনীতিকের জন্য সবচেয়ে বড় যে গুণটা থাকা দরকার তা হলো, পরিস্থিতি ও মানুষের মনোভাব বুঝতে পারার ক্ষমতা। রাজনীতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে জীবনের পাঠশালা থেকে বাস্তব ও লোকায়ত জ্ঞান থাকা দরকার। তত্ত্ব বেশি জানা মানুষ জনপ্রিয়তার দৌড়ে খুব এগিয়ে থাকেন না। একজন মানুষের ব্যক্তিগত সদিচ্ছার সঙ্গে বহু মানুষের ভাবনার ঐক্য বা মিলনই একটি রাজনৈতিক দলের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। কামাল হোসেনের গণফোরামে যুক্ত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ, সিপিবি, ন্যাপ, জাসদ থেকে আসা রাজনীতির কিছু চেনা মুখ। আবার রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না, এমন কিছু বিশিষ্ট মানুষও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণফোরাম গঠনে সহায়তা দিয়েছেন। কী হয়েছে তার পরিণাম?
আমাদের দেশের রাজনীতিতে একসময় ছাত্র এবং শ্রমিকদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলে প্রাণপ্রবাহ সচল রাখতে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন রক্ত সরবরাহ করে এসেছে। গণফোরাম যত সহজে কিছু নেতা পেয়েছে, তত সহজে কর্মী-সমর্থক সংগ্রহ করতে পারেনি। কারণ, তত দিনে ছাত্র ও শ্রমিক আন্দোলন লেজুড়বৃত্তির পথ ধরে দিগ্ভ্রান্ত হয়েছে। রাজনীতির কিছু চেনা মুখ নতুন কিছু করতে চাইলেই রাতারাতি সবাই হুড়মুড় করে তাদের দিকে যে ঝুঁকে পড়ে না, সেটা স্পষ্ট হয়েছে গণফোরামের ক্ষেত্রে।
আবার এটাও ঠিক যে, নতুন মানুষ আকাশ থেকে পড়ে না। যুগ ও সময়ের প্রয়োজনে পুরোনো রাজনৈতিক বৃত্ত ভাঙার দরকার হলে পুরোনো মানুষের মধ্য থেকেই উদ্যোগীরা এগিয়ে আসেন। অতীতে এমনটাই দেখা গেছে। মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ যাঁরা আওয়ামী লীগ গঠনে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা কি রাজনীতিতে নতুন মানুষ ছিলেন, নাকি মুসলিম লীগ রাজনীতির পুরোনো মানুষেরাই যুগোপযোগী নতুন রাজনীতিকে ধারণ করার জন্য নতুন ভূমিকা পালন করেছিলেন? মওলানা ভাসানী যখন ন্যাপ গঠন করেছিলেন, সেটাও কি অতীত রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন নতুন মানুষ নিয়ে? এই উপমহাদেশে সাম্যবাদী রাজনীতির গোড়াপত্তনকারীদের অনেকেই শুরু করেছিলেন যুগান্তর-অনুশীলন ইত্যাদি সন্ত্রাসবাদী দলের মাধ্যমে। সুতরাং নতুন রাজনৈতিক দল করার জন্য নতুন মানুষ বনাম পুরোনো মানুষ বিতর্কটিও কিছুটা অবান্তর। পুরোনো বৃত্ত ভেঙে নতুন পথে হাঁটার মানসিকতা আছে কি না, সেটাই হওয়া উচিত বিবেচ্য বিষয়।
কামাল হোসেনের পর বিএনপি থেকে বেরিয়ে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, আওয়ামী লীগ ছেড়ে বঙ্গবীর হিসেবে পরিচিত কাদের সিদ্দিকী, সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জেনারেল মোহাম্মদ ইবরাহিম এবং জরুরি এক-এগারোর সময় গ্রামীণ ব্যাংকখ্যাত ও নোবেলজয়ী ড. ইউনূসসহ আরও কেউ কেউ রাজনৈতিক দল গড়েছেন বা গড়ার উদ্যোগ নিয়েই দম হারিয়েছেন। কিন্তু ‘বিকল্প শক্তি’ হয়ে ওঠার দৌড়ে কেউ সক্ষমতা অর্জন করতে পারেননি। মানুষের আস্থাভাজন হয়ে ওঠার বিষয়টি মাথায় না নিয়ে শুধু স্বপ্নবিলাসী হওয়া অর্থহীন। যেকোনো নিষ্ফল উদ্যোগ মানুষের মনে বিভ্রান্তি বাড়ায়, হতাশা তৈরি করে।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে বছরের পর বছর ধরে চলছে বড় রকমের আস্থার সংকট। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে জাতির গায়ে যে কলঙ্কছাপ লেগেছে, তা আর মোছা যাচ্ছে না। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে চান না, আস্থায় নিতে চান না। গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে সামরিক হস্তক্ষেপ, রাজনীতিকে কেনাবেচার পণ্যে পরিণত করা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমজোরি করে রাখা, নির্বাচনব্যবস্থাকে তামাশার স্তরে নিয়ে যাওয়ায় দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সাধারণ মানুষের একধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য যে আন্তরিক উদ্যোগ, সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দরকার, তা নুরুল হকের কতটুকু আছে, সে প্রশ্ন তাঁর দল গঠনের ঘোষণার পর অনেকের মনেই দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।
রাজনীতিতে নীতিহীনতার প্রতিযোগিতা প্রবল হওয়ায় বড় দুটি দলের ভেতরেই গণতন্ত্রচর্চার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে। দলীয় গঠনতন্ত্র গণতান্ত্রিক হওয়ায় আওয়ামী লীগ কিছুটা গণতান্ত্রিক উপায়ে চললেও বিএনপিতে সে সবের বালাই নেই। আবার ক্ষমতায় অথবা ক্ষমতার বাইরে থাকলেও সরকার এবং দলে খালেদা জিয়ার যেমন নিরঙ্কুশ আধিপত্য থাকে, তাঁর কথার বাইরে যেমন কিছুই চলে না, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় কিংবা ক্ষমতার বাইরে থাকলে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এর কোনো ব্যতিক্রম হয় না। বিএনপিতে খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত বা মতের বাইরে চলার ক্ষমতা যেমন কারও নেই, আওয়ামী লীগেও শেখ হাসিনাই শেষ কথা বলার অধিকারী। সরকারপ্রধান প্রবল প্রতাপশালী হলে মন্ত্রীদের পক্ষে স্বাধীনভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা কঠিন। এ ধরনের অবস্থা একটি দক্ষ ও গতিশীল সরকারের পরিচয়বাহী হতে পারে না। অতীতে এবং বর্তমানে এ ধারাই আমরা লক্ষ করছি।
সব সরকারের আমলেই কারও না কারও বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। সব অভিযোগই ভিত্তিহীন বা দুষ্ট লোকের মন্দ উদ্দেশ্যের অপপ্রচার নয়। কিন্তু দেখা যায়, সরকারপ্রধান অভিযুক্তদের প্রতি সদয়ই থাকেন। খুব বিতর্কিত কিছু না করলে আমাদের দেশে সাধারণত কাউকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে দেখা যায় না। সব দেখেশুনে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ তৈরি হলেও স্থিতাবস্থার বিরুদ্ধে যাওয়ার মানসিকতা তৈরি হয় না।
রাজনীতিটা যেমন সাহস এবং কৌশলের খেলা, তেমনি এর সঙ্গে মানুষের চাহিদা, প্রত্যাশা, প্রয়োজন এবং আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ভূরাজনীতির হিসাব-নিকাশও জড়িত থাকে। এই সবকিছুর মধুর সমন্বয় না ঘটলে সফল হওয়া যায় না, জয়ের আশা মরীচিকা হয়েই থাকে। নুরুল হক নুরের মধ্যে তারুণ্যের আবেগ হয়তো আছে, কিন্তু তাঁর পেছনের শক্তি, মদদদাতা, অর্থের জোগানদাতা, সাহস বা বলের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তাঁর ডাকে মানুষ কাতারবন্দী হবে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষই যেকোনো রাজনৈতিক দলের বল-ভরসা। এই মানুষদের কাছে টানার জাদুর কোনো কাঠি কি নুরুলের হাতে আছে?
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দলীয় রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন পাশে রেখেই ইউনূস সরকারের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এর ১০০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার সময়টায়। তবে সাধারণ মানুষ মনে হয় প্রতিদিনই তার জীবনে সরকারের ভূমিকা বিচার করে দেখছে।
৩ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। ১০০ দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিছু যে হয়নি, তা নয়। তবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অস্থিরতার লক্ষণ অস্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই তিন দফায় উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘খোলনলচে’। যাপিত জীবনে কমবেশি আমরা সবাই শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করেছি। বাংলা বাগধারায় আমরা পড়েছি ‘খোলনলচে পালটানো’। বাংলা অভিধানে খোল শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেঅফিসে যাতায়াতের সময় স্টাফ বাসে পরিচয়ের সূত্রে ফারজানা আক্তার আজিমপুরে নিজের বাসায় সাবলেট দিয়েছিলেন ফাতেমা আক্তার শাপলা নামের এক নারীকে। কিন্তু ফাতেমা যে একটি প্রতারক চক্রের সদস্য, সেটা তাঁর জানা ছিল না।
৪ ঘণ্টা আগে